STORYMIRROR

Sanghamitra Roychowdhury

Classics

4  

Sanghamitra Roychowdhury

Classics

হানিমুন ফেজ (ধারাবাহিক) ৩

হানিমুন ফেজ (ধারাবাহিক) ৩

2 mins
552

হানিমুন ফেজ (ধারাবাহিক)



মিছরি আবার ভীতুর পাশাপাশি একটু পুরনোপন্থী ট্র্যাডিশনাল ব্যাপার স্যাপারেও বিশ্বাসী। সুতরাং ঐ কামড় খাওয়া শীতেও শাড়ি, সঙ্গে অবশ্য মোটাসোটা কার্ডিগান শাল স্টোল স্কার্ফ এসব আছে। চুপিচুপি অনেক বুঝিয়েছিলো কণিষ্ক, জিন্স টিন্স পরার জন্য। কিন্তু মিছরির এককথা, "দূর, কখনো পরি নি ওসব। আমি শাড়ি সালোয়ার-কামিজেই কমফর্টেবল।" আর কণিষ্ক তাই স্নিকারও পরাতে পারে নি বৌকে। নিদেন পক্ষে পা ঢাকা জুতো। নাহ্, তাতেও আপত্তি মিছরির, শাড়ি সালোয়ারের সাথে নাকি কেবল স্যাণ্ডেলই যায়। কণিষ্ক বৌয়ের যুক্তির কাছে হার মেনেছে শেষ পর্যন্ত। মোজা অব্দি পরছে না মিছরি। তাতে নাকি ভীষণ বোকা বোকা দেখাবে। ওসব ফ্যাশন বিরোধী। কণিষ্ক কী বোঝে মেয়েদের সাজপোশাকের ব্যাপারে? অগত্যা চুপ করে গেছে কণিষ্ক। কলকাতা আর সিমলার ঠাণ্ডার পার্থক্য আকাশচুম্বী। দু'দিনেই মিছরির গোড়ালি ফেটে চৌচির। কলকাতায় সামান্য দাগ ধরা ফাটা, একটু ঘষে পরিষ্কার করে সামান্য অলিভ অয়েল লাগালেই ম্যানেজ হয়ে যায়। কিন্তু সিমলার ঠাণ্ডায় ফাটা গোড়ালি রীতিমতো যন্ত্রণাদায়ী। তাও মিছরি শাড়ি সালোয়ারের সাথে কিছুতেই মোজা বা পা ঢাকা জুতো পরবেই না। কণিষ্ক নতুন বৌকে তো বকতেও পারবে না। বড্ড ভালোবেসে ফেলেছে। মিছরির কোনো কথাতেই না বলতে পারে না। আজকাল কণিষ্কর কলিগরা পেছনে টিপ্পনী কাটে বৃদ্ধস্য তরুণী ভার্যা। যদিও অতটাও নয়। এগারো বছরের পার্থক্য। একটু বেশীই। তবে, মিছরির যখন আপত্তি নেই, বাকীদের এতো মাথাব্যথাকে কণিষ্ক মোটেই পাত্তা দেয় না।


মিছরির গোড়ালির খসখসে চামড়ায় রাতে কণিষ্কর পায়ে বেশ কয়েকবার খসখস করে ঘষা লেগেছে।একটা ব্যবস্থা করতেই হচ্ছে। মিছরি তো ঐ সেই ওর ট্র্যাডিশনাল বঙ্গ জীবনের অঙ্গ বোরোলিন ছাড়া গোড়ালিতে আর কিছু লাগাবেও না। অন্যকিছু ব্যবহার করার কথা বলার চেষ্টা করে কণিষ্ক হতাশ হয়েছে। এদিকে এখনো পুরো দু'দিন বাকী ঘোরা শেষ হতে। এদিকে মিছরির পায়ের অবস্থা সঙ্গীন। খুঁড়িয়ে হাঁটছে। তবুও জেদ, কিছুতেই বোরোলিন ছাড়া কিছু লাগাবে না গোড়ালিতে, মোজা জুতোও পরবে না। ফাটা গোড়ালিতে ধূলোবালি লেগে যাচ্ছেতাই অবস্থা। কণিষ্ক এবার অস্বস্তিতে। মিছরির গোড়ালি নিয়ে বেশী সমস্যা হলেও কণিষ্ককেই ঠারেঠোরে কথাবার্তা শোনাতে পারে, শ্বশুরমশাই বাদে শ্বশুরবাড়ির বাকী লোকেরা। মিছরির মুখেই ঐ বয়সের পার্থক্য নিয়ে ওর বাড়ির লোকেদের মতামত শুনেছে কণিষ্ক। আর শুয়ে থাকতে পারলো না। অস্বস্তিটা বাড়ছে। বালিশ সরিয়ে উঠে বসলো কণিষ্ক। মিছরি তখনো গভীর ঘুমে। হানিমুন বলে কথা!


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Classics