বউ
বউ
-সম বয়সী একটা মেয়ের সাথে ৭ বছরের সম্পর্কের পর বিয়ে করেছি তাও পারিবারিক সম্মতিতে না পালিয়ে,।
-বন্ধু-বান্ধব সবাই আশা করেছিলো আমায় বউ হবে অনেক সুন্দরী, আধুনিক ভাষায় যাকে বলে হট, আমি লম্বা তাই আমার বউ হবে লম্বা কম বয়সী একদম ফর্সা এক কথায় আমার সাথে মানাবে এমন,কিন্তু তাদের আশায় যেনো জল ঢেলে আমি বিয়ে করলাম একটা কালো বর্ণের মেয়ে,।
(মেয়েটির বয়স ২৬, নামঃ- নিতু,)
এরই মধ্যে আমার সবচেয়ে গুনধর বন্ধু এসেই বললো ''মসিন্নারে'' (আমি মহসিন) এইটা কী বিয়ে করলি আগামী ১০ বছর পর যেখানে তুই একটা বিয়ে করার যোগ্যতা রাখবি সেখানে এই মেয়েকে তর আন্টি লাগবে আন্টি,।
আচ্ছা বিয়ে করছচ এত তাড়াতাড়ি বাচ্চা নিস না, না হলে ৫ বছর পরেই দেখবি এই মেয়েকে তর নানি ডাকতে হবে,।
-একেতো পালিয়ে বিয়ে করেছি তার মধ্যে আবার কালো বর্ণের,
মা-বাবা কেউ মেনে নিবে না,
একটা ফ্ল্যাট ভাড়া করে দুজন উঠলাম,।
আমার নামে এলাকায় একটা নিউজ হয়ে গেছে মহসিন বিয়ে করে নিয়ে এসেছে বয়স্ক এক মেয়ে আবার কালো মোটামোটি বাড়ির সবাই মেনে নিলো,।
দুই বছর পর বাড়িতে আসলাম ঠিকি কিন্তু কেউ নিতুর সাথে ভাল ব্যবহার করছিলো না কারণ আমার সাথে এই মেয়ে যায় না,।
অতঃপর নিতুর আগমন রুমে এসেই -বললো তোমার আম্মু বোনদের আমি কী বলে ডাকবো,?
-কেনো আমি যা বলি তাই বলবে,।
-কাঁদতে কাঁদতে বললো "কিন্তু উনারা আমার সাথে খুব বাজে ব্যবহার করেন,।
-আমি হাসলাম -কারণ- খুব মায়াবী লাগছিলো নিতুকে -চোখ মুছে দিয়ে জড়িয়ে ধরে বললাম সময়ের সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে,,
--আজ আমাদের বিয়ের ৮ বছর শেষ হয়ে আসলো,।
-এর ভিতরে আমার বন্ধুদের কত কাহীনি হয়ে গেলো,,
যারা আমার নিতুকে দেখে মজা করেছিলো
তাদের মধ্যেই কারো বউ পরকীয়া করেছে আবার কারো বউ কথা শুনে না আবার অনেকের ডিভোর্স হয়েছে,,
তারা অবশ্য নিতু থেকে অনেক সুন্দর মেয়ে বিয়ে করেছিলো আবার বয়সেও তাদের থেকে অনেকটাই ছোট ছিলো,।
অথচ আমার অর্ধাঙ্গিনী নিতু আজও আমায় সাথে বড় গলায় কথা বলেনি,,হঠাৎ একদিন নিতু রাইসাকে জিজ্ঞেস করলো কিরে তোর আব্বু কই,?
রাইসাঃ-(যানিনা আব্বুকে দেততি বারান্দায় দেছে)
রাইসাঃ-কই তুমি বারান্দায় আছো,?
আমিঃ- হ্যা আছি তো,!
নিতুঃ- কোন সাড়া শব্দ নেই যে,?
আমিঃ- মরে গেলে তখন সাড়া শব্দ ছাড়া থাকবা কেমনে,?
নিতুঃ- আমাকে ও নিয়া যাবা একা যাইবা কেন ৮ বছর কি সংসার করছি আমকে একা রাইখা যাওয়ার জন্য,,?
আমিঃ- নিশ্চুপ.....
নিতুঃ-নিশ্চুপ
-আচ্ছা রাগ না করে বলো কী বলবে,?
-লাল শাড়িটা পড়েছি দেখো আমায় কেমন লাগছে,,?
-আমি এত কর্ণপাত না করে শুধু নিতু কে দেখছিলাম মেয়েটা এত ভাল কেনো,?
-আমি কোনো কথা বলছিলাম না,,
রাগ করে আমার সামন থেকে চলে গেলো,,আর বলতে লাগলো
-আসলেই আমি তোমার যোগ্য না বুড়ি হয়ে গেছি আবার কালো ও,।
আমাকে এখন আর ভাল লাগে না, আগের মত আর ভালবাসো না,।
আচ্ছা নতুন একজনকে বিয়ে করে নাও ভাল লাগবে, বিয়ের দিন সবাই ঠিকি বলেছিলো,।
-এদিখে আমি হাসবো না রাগ করবো কনফিউজড,।
-আচ্ছা নিতু পুরো পৃথিবী একদিকে রেখে যখন তোমার হাত ধরেছিলাম তখন কী এক মিনিটের জন্য ভেবেছিলাম তুমি দেখতে কেমন আমি কেমন,,।
-(আমি) তবে জানো কী নিতু নামের মেয়েটা এখন আর আমায় ভালবাসে না রেগে রেগে কথা বলে, এখন আর আমায় জড়িয়ে ধরে না বলে না আমায় আগলে রেখো আজীবন, এখন সে আমায় বলে বিয়ে করও আরেকটা,।।
-নিতু- কেঁদে দিয়ে জড়িয়ে ধরে বললো, বললেই কী সত্যি নাকি,।
আমি আরো শক্ত করে জড়িয়ে নিয়ে কোমড়ে হাত দিয়ে কপালে একটা চুমু খেয়ে বললাম,sorry
-তুমি আমার কাছে সেই প্রথম দিনের দেখার সেই নিতু আজও রয়ে গেছো,
কাজল মাখা চোখে যেমন লাগতো তোমায় আজও সেই নিতু হয়েই আছো আমার কাছে,।
-পৃথিবী সুন্দর তার মধ্যে থাকা সুন্দরের মধ্যে তুমিই আমার কাছে সবচেয়ে বেশি সুন্দর,কারণ কারো জীবন কোনোদিন অসুন্দর হয় না, তুমিই তো আমার জীবন,
-নিতুঃ- হয়েছে হয়েছে এই বয়সে আর ভালবাসা দেখাতে হবে না,।
-আমিঃ- দিলেতো আমায় বুড়ো বানিয়ে,।।
দুজনেই একগাল হেসে নিলাম,,।
-শিক্ষনীয় :-- সৌন্দর্য দিয়ে কখনোই মানুষ বিচার করা যাবে না,,