বৃদ্ধাশ্রম
বৃদ্ধাশ্রম


ছেলে চাকরিসূত্রে বাইরে। বাড়িতে বৌমা ও তার দুই মেয়ে। বৌমা শিক্ষিকা এবং সুগায়িকা। ভীষণ ব্যস্ত নিজের সঙ্গীত জগৎ নিয়ে। তার হাতে সময়টা এতটাই কম যে নিজের কন্যাসন্তানদের প্রতি নজর দিতে পারে না। প্রতিদিন ঘড়ি ধরে তিন ঘণ্টা রেওয়াজ সকাল ও সন্ধ্যায়। এছাড়া অনুষ্ঠান তো আছেই। এত দৌড়ঝাঁপ করার জন্য প্রয়োজন হল চারচাকা গাড়ি।
আমি আশি বৎসরের বৃদ্ধা। মানসিক ভাবে শক্ত হলেও বয়সভারে শক্তি অনেকটাই কমে গেছে। কর্তা আজ কুড়ি বৎসর হল গত হয়েছে। ছেলেকে নিয়ে সুখে ছিলাম। সবাই এ সুখ পায় না। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে আজও আমি বাড়ির গৃহকর্ত্রী। তফাৎ - আগে ছিলাম মূল ক্ষমতায় এবং কার্যক্ষমতায়। হেঁটে বাজার করা, নাতনিদের দেওয়া নেওয়া, বাড়ি পাহারা দেওয়া আর সকলের খাবারের ব্যবস্থা করা আমার কাজ। কাজ বেড়েছে, কিন্তু মনের সঙ্গী কমে গিয়ে শুধু টিভি। বস্তাপচা ওই সিরিয়াল দেখে সময় কাটানো ছাড়া আর কোনও গতি নেই। তাই মনে হয়, বৃদ্ধাশ্রমই ভালো। শ্রমই যদি দেব, তবে বৃদ্ধাদের সাথে দেব - বৃদ্ধাশ্রম। আমার কথা বোঝার লোক তো পাব....