STORYMIRROR

Partha Pratim Guha Neogy

Tragedy Others

3  

Partha Pratim Guha Neogy

Tragedy Others

বিদায়ের পূর্বে

বিদায়ের পূর্বে

8 mins
216

রাগে ইরার মুখ লাল হয়ে গেছে, মিহিরও কেমন ঘাবড়ে গিয়েছে, ইরা বলে চলে,

- তোমাকে কতবার বলেছি আমাকে ফোন করবে না তারপর-ও তুমি আমাকে বেহায়ার মতো ফোন করো কেন? এত বেহায়া কেন তুমি? 


ইরার কথায় মিহির যারপরনাই চমৎকৃত হয়। বিস্মিত কন্ঠে বলে,,

- আমি তোমাকে ভালবাসি সোনা! তুমি এরকম ব্যবহার করছো কেন আমার সাথে? আমি কি অন্যায় করেছি?

তীব্র শ্লেষমাখা কন্ঠে ইরা বলে,

- চুপ! একদম এসব নেকা কান্না আমার সামনে কাঁদবে না,, আর ভবিষ্যতে সোনা-তামা- রূপা এসব বলে একদম ডাকবে না। ইরা আমার নাম সেই নামেই ডাকবে আমাকে। ইনফ্যাক্ট আজকের পর থেকে আমার নাম ধরে ডাকা তো দূর,আমার সামনেই আসবে না। তোমার মুখটা দেখতেও এখন আমার ঘৃণা লাগে। অসহ্য…

করুণচোখে তাকায় মিহির,,

- আমাকে তুমি ঘৃণা করো? আর আমাদের ভালবাসা? কি হয়েছে তোমার?

- হ্যাঁ বাসতাম। এখন বাসি না। ঘৃণা করি। বুঝেছো? জাস্ট ঘৃণা। লুক এট ইওরসেল্ফ!!

আমার বাবা ইঞ্জিনিয়ার আর তুমি? এক সামান্য প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করো। তোমার আর আমার স্টেটাসের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত। বুঝেছো? তাই ভবিষ্যতে আর আমার সামনে এসে দাঁড়ানোর সাহস করো না।

হতাশ কন্ঠে মিহির ইরার হাতদুটো চেপে ধরে বলে,,

- এতদিন তো এই বেকার ছেলেটাকেই ভালবেসে এসেছিলে। অনেক কষ্টে চাকরিটা জোটানোর পর এতেই খুশি হয়ে তুমি আমাদের একসাথে সংসার গড়ার স্বপ্ন দেখতে। তাহলে আজ কেন তুমি আমার থেকে দূরে সরে থাকতে চাইছো? তোমার জীবনকে আমার জীবনের থেকে আলাদা করে ফেলতে চাইছো কেন?

- কারণ তোমাকে আমার আর ভাল লাগে না!

স্তব্ধ হয়ে যায় মিহির। প্রচন্ড কষ্ট হয় ওর,,,আহত কন্ঠে বলে,,

- তোমার আর আমাকে ভাল লাগে না?

- না লাগে না। তোমাকে আমার ভাল লাগে না। অসহ্য লাগে। ঘৃণা করে তোমার সামনে আসতে। আর কোনদিনো আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করবে না।

- প্লিজ সোনা! একবার বলো আমার অপরাধটা কি! এভাবে চলে যেও না। আমায় একটিবার বলো আমার অপরাধটা কি?

- বললাম তো তোমার স্টেটাসের সাথে আমার স্টেটাস মিল খায় না। তোমার পিসতুতো বোনকে-তো তোমাদের পরিবারের সকলের পছন্দ ছিল। মেয়েটাও দেখতে শুনতে ভাল। ওকে বিয়ে করে নাও না। আমার পিছনে এভাবে আর পড়ে থেকো না। দয়া করে ভবিষ্যতে আর আমার রাস্তায় এসো না। সেখানে নরম বালি পাবে না - পাবে ক্ষতবিক্ষত হওয়ার এবড়োখেবড়ো পাথুরে রাস্তা।

আর শোনো বাবা আমার জন্য এন-আর-আই ছেলে দেখেছে। ওকেই বিয়ে করবো। সো আর অপমানিত না হতে চাইলে ভবিষ্যতে আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করবে না।

কথাটা শেষ করে মিহির-কে পিছনে ফেলে ইরা গট গট করে এগোতে থাকে। চোখের কোণে জলটা আবারও চলে আসে ইরার। বুকফাটা কান্নাতে দমবন্ধ হয়ে আসছে ওর। ভেতরের হৃৎপিন্ডটা কেউ যেন ছিঁড়ে নিতে চাইছে অথচ বাইরে থেকে শান্তভাব বজায় রাখতে হচ্ছে ওকে। মনের যন্ত্রণার বহিঃপ্রকাশ করতে না পারাটা যে কতটা যন্ত্রণার সেটা যার মন সে ছাড়া আর কেউ-ই অনুভব করতে পারে না। চোখদুটো কি অসম্ভব জ্বলছে, মাথাটা ভারী হয়ে আসছে, বুকের ভেতরে ঝড় বয়ে যাচ্ছে তবুও ওকে নিজেকে শান্ত রাখতে হচ্ছে। ভাল থাকার মুখোশে নিজেকে আড়াল করে রাখতে হচ্ছে। দূর থেকে কি মিহির এখনও ওকে দেখছে? হয়তো দেখছে। জানে না ইরা,পিছন ঘুরে তাকানোর আর কোন প্রশ্ন-ই ওঠে না।


কান্নাগুলো দলা পাকিয়ে বুকের মধ্যে চেপে রয়েছে,অনুভূতিগুলো ঠুকরে খাচ্ছে মাথাকে। শরীরটা মাঝে-মাঝেই কেঁপে উঠলো ইলোরার, স্মৃতি হাতড়ে ফিরে গেল পাঁচ বছর আগে, অতীতের পাতায়.....ফিরে গেল নিজের পুরোনো পাড়ায় যেখানে প্রথম দেখা হয়েছিল ওদের দুজনের।

ষোল বছরের ইরা পাড়ার-ই এক টিউশন সেন্টারে পড়তে যেত, তার ঠিক পাশের ক্লাবটায় ক্যারাম খেলতো মিহির। দেখা হওয়াটা বদলে যায় বন্ধুত্বে, বন্ধুত্ব বদলে যায় ভালবাসায়। মিহিররা পাড়ায় নতুন এসেছিল, অথচ ছেলেটা এত মিশুকে ছিল যে কখনোই মনে হয় নি ও পাড়ায় নতুন। ভালবাসা নিজের সাতরঙা রামধনুতে ওদেরকে মুড়ে রঙিন করে তোলে। ঝড়ের গতিতে কেটে যেতে থাকে বছরগুলো। বেকারত্বের সময়েও ইরা মিহিরের পাশে ছিল, চাকরি পাওয়ার পর-ও। একসময় ইরার বাবার অন্য জেলায় বদলি হয়ে গেলেও ওদের সম্পর্কে কোন আঁচড় আসে নি। আসেনি কোন দূরত্ব, কিন্তু আজ ইরা নিজের থেকেই দূরে সরে এসেছে। বলা ভাল ওর জীবন ওকে বাধ্য করেছে মিহিরের থেকে দূরে সরে আসতে। মিহির যদি ওকে প্রতারক, স্বার্থপর ভাবে তাতে ওর কোন ক্ষেদ থাকবে না বরং ও খুশি হবে।

বাড়ি ফিরে ওদের সম্পর্কের সব স্মৃতি জ্বালিয়ে দিল ইরা। শুধু বেঁচে থাকলো ওর শরীরে থাকা মাহিরের হাতের আর ঠোঁটের স্পর্শরা। যেগুলোর অনুভূতি ওর কাছে আজ-ও জীবন্ত আর যেগুলো প্রতি মুহূর্তে ওকে জ্বালাচ্ছে। ওর জীবনটাই তো এখন অগ্নিদগ্ধে পুড়ে ছারখার হওয়ার দোরগোড়ায়,,,,,,,


ডাইরিটা বুকে আঁকড়ে ঘুমিয়ে পরেছিল ইরা। দীর্ঘদিন জ্বরে অসুস্থতায় ভুগে শরীর প্রায় বিছানায় মিশে যাওয়ার উপক্রম। সেদিনের পর মিহিরের সাথে আর কোনরকম যোগাযোগ রাখেনি ইরা। অসহ্য কষ্ট জাঁকিয়ে বসেছে ওর শরীরে জ্বর-রূপে। ঘুমটা ভেঙে যেতে বিছানায় উঠে বসে ও। একবার ডাইরিটা খুলে অসমাপ্ত লেখাটায় চোখ বোলায়,,,


' নির্জন শহরের এক রাতের রাজপথে,

একাকী হাঁটবো তুমি আর আমি।

স্ট্রিট লাইটগুলোর মায়াবী আলোয়,

ভাসবে অনুভূতির আলোক জোনাকি।

স্বপ্নরা বুকে বাসা বাঁধবে

তোমাকে দেখতে দেখতেই,

একটু স্পর্শ, একটু মায়া,

বাঁচবো শুধু তোমার ভালবাসাতেই।


যদি কখনো এমনটা হতো?

এসব খারাপ গুলোকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে আমি তোমার বুকে ছুটে যেতে পারতাম।

যদি কখনো এমনটা হতো?

আমার ভালবাসাকে চিরকালের জন্য তোমার ভালবাসার সাথে মিশিয়ে দিতে পারতাম।

যদি কখনো এমনটা হতো?

তোমাকে আমি হাজার বাধা-বিঘ্নতার পরেও বলতে পারতাম আমার ভালবাসার কথা।

যদি আমি সারাজীবন তোমার সাথে থাকতে পারতাম?

কত ভাল-ই না হত!

তুমিহীনা আমার বেদনাক্লিষ্ট যন্ত্রণাগুলো মাথার স্নায়ু হতে ছড়িয়ে কি অসহ্য ব্যথায় জর্জরিত করে তুলেছে।

কিন্তু তবুও আমি পারছি না, তোমার কাছে ছুটে যেতে।

তোমার জীবনের সাথে আমার জীবনকে বেঁধে '.....


আর লিখতে পারে নি ইরা। কি করে পারবে,,

যার জন্য ও লিখছে সে আজ অন্য কারোর সাথে নিজের জীবনকে বাঁধতে চলেছে। সমাজ,পরিস্থিতি ও পরিবারের চাপে পরে সে-ও আজ বর্তমান সময়কে স্বীকার করে নিয়েছে শুধু অজানা রয়ে গেছে তার পুরোনো স্মৃতি হয়ে যাওয়া ভালবাসার মানুষটার একটা গোপন সত্য। ইরার এক গোপন সত্য,,, লেখাটা কি করে ইরা সম্পূর্ণ করতে পারবে? কেমন করে একটা সুস্থ, ভাল ছেলের জীবনকে ওর অসুস্থ জীবনের সাথে জড়িয়ে ফেলতে পারবে? পারবে না ও কিছুতেই।

আর লিখবে না ও, তাকে নিয়ে এবার অন্যকেউ লিখবে।

নাহ্! এরকমটা ও ছাড়া আর কেউ লিখতে পারবে না। এই গভীর অনুভূতির লেখা একমাত্র ইরার মনের। তাকে নিয়ে হয়তো অন্যকেউ কাব্য লিখবে,কিন্তু তাতে হয়তো লেখা থাকবে নতুন করে সাজানো সংসার,, কিংবা দিবস শেষে নিশীথ গভীরে তার বুকের মাঝে অবিন্যস্ত চুলে লেপ্টে থাকার কয়েকটা ভালবাসার মুহূর্ত।

চোখটা বন্ধ করে ফেলে ইরা… আর ভাবতে পারছে না সে…. মাথার ভিতরের অসহ্য যন্ত্রণাটাকে পাত্তা না দিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে জানলার সামনে এসে দাঁড়ায়।

কালচে নীল আকাশটার দিকে তাকায়,, দেখে কত আলোকবর্ষ দূরে থেকেও তারারা জ্বলছে,,, মিটমিট করছে। অথচ ও নিজের ভালবাসার এত কাছে থেকেও ফ্যাকাশে_ বেরং হয়ে পরেছে। চোখের জল গাল ছাপিয়ে থুতনি বেয়ে নিচে পড়ে। আর পারলো না ইরা, কেঁদেই ফেলল ও ঝরঝর করে.....

- কেন এরকম করলি বোন? এভাবে তুই নিজেকেও কষ্ট দিচ্ছিস আর মিহিরকেও কষ্ট দিলি। মিহিরকে কেন এভাবে ছেড়ে দিলি?

ইরা বোঝে দিদি এসে দাঁড়িয়েছে পাশে। দিদির কথায় শুকনো হেসে চোখের জলটা মুছে নেয় ইরা। ক্ষীনকন্ঠে বলে,,

- জীবন যাকে ছেড়ে দিচ্ছে, সে আর কাকে ছাড়বে? তার কাউকে ছাড়ার কোন ক্ষমতাই নেই।

- এরকম বলছিস কেন? একবার অন্তত তুই বলতে পারতিস ওকে!

- নারে! আমি এতটা স্বার্থপর হতে পারবো না। তার-ও একটা পরিবার আছে,তাদের-ও কিছু স্বপ্ন আছে। নিজের জন্য তাদের স্বপ্নগুলো আমি নষ্ট করে দিই কি করে? আমার জীবনতো শেষ হয়েই যাচ্ছে, আমার সাথে থাকলে মিহিরের জীবনটাও শেষ হয়ে যাবে। ও না আমাকে ফেলতে পারবে না নিজে আমার সাথে সুস্থ জীবন কাটাতে পারবে। কি বলতো, আমিতো মরেই যাবো কিন্তু ও আমার সাথে থেকেও প্রতি মুহূর্তে মরবে আর আমি চলে যাওয়ার পর-ও স্মৃতিগুলো আঁকড়ে মরবে.....

আর কিছু বলতে পারে না তারা । বোনের এই কষ্ট আর ও দেখতে পারছে না।

চলে যায় ওখান থেকে,,, তখনও ইরা একভাবে আকাশ দেখছে,,

কত সহজে ডক্টর বলে দিয়েছিল ব্রেন-টিউমার, লাস্ট স্টেজ।

অথচ ইরার কাছে সেই কথাটা-ই যেন মৃত্যুর সমান ছিল। আর সেই কথাটাই যখন ওর শরীরে দানা_বেঁধে একটু একটু করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে তখন.....

ডুকরে উঠলো ও,,,


কান্নাটা গলার কাছে এসে আটকে যায় ইরার। আজ নিজেকে নিজের কাছেই বড় অদ্ভুত লাগে। আয়নায় যেন ইরা নয়, কোন শীর্ণকায় জীর্ণকায় প্রায় কঙ্কাল দাঁড়িয়ে। বসে যাওয়া চোখের নিচে কত দিনের জমে থাকা কালি, গাল ভেঙে গেছে, কপালে অসম্ভব দুশ্চিন্তার ছাপ, ঠোঁটের পাতা শুকিয়ে প্রায় সাদা। উজ্বল গাত্রবর্ণ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। এটাই কি ইরা? সেই হাসিখুশি প্রাণবন্ত ইরা? মিহিরের ইরা?

একটা মারণরোগ এতটা শক্তিশালী? কত সহজে দুজন মানুষের এতদিনের যত্ন করে গড়া সম্পর্ককে ভেঙে দিয়ে ভালবাসাকে শেষ করে দিয়ে ওকে মিহিরের থেকে কেড়ে নিল।

জানলার দিকে তাকিয়েই একমনে বলে চলল ইরা,

- মিহির! আমার ব্রেন-টিউমার হয়েছে। আমি মরছি মিহির, আমি মরছি!

কিন্তু আমি কেন? আমিই কেন?

এবার আর চাপতে পারলো না নিজের কান্নাকে ইরা,, বুকফাটা কান্নায় নিজেকে মিশিয়ে দিল,,, কান্নাভেজা গলাতেই চিৎকার করে জানলার বাইরে চেয়ে বলতে লাগলো,,,

কিন্তু! আমিই কেন? আমিতো বাঁচতে চেয়েছিলাম,আমার জীবনটাতো সবে শুরু হয়েছিল। এখনো আমার কত কিছু দেখা বাকি ছিল। কত কিছু জানা বাকি ছিল… মাস্টার্স শেষ করে পি-এইচ-ডি করার ইচ্ছে ছিল। যদি এত তাড়াতাড়ি আমার জীবনটা শেষ হওয়ার ছিল তবে কেন আমার জীবনটা শুরু হল? কেন আমি পড়াশোনায় ভাল হলাম? কেন মা বাবা দিদি আমাকে এত ভালবাসে? কেন মাহিরের সাথে দেখা হয়েছিল? কেন আমরা পরস্পরকে ভালবেসেছিলাম। এসব কিছু যদি না হত? 

তাহলে আমার শরীরে একটা কেন? এক হাজারটা টিউমার বাসা বাঁধলেও ক্যানসারে সর্বশরীর ছেয়ে গেলেও কোন দুঃখ থাকতো না। কোন আফসোস থাকতো না। কোন যন্ত্রণা থাকতো না। এত সুখের পর কেন বিচ্ছেদের যন্ত্রণা ? এই যন্ত্রণা যদি প্রথম থেকেই আমার সাথী হত? তাহলে হয়তো আজ মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে সকলকে হারানোর এত যন্ত্রণা আমাকে পেতে হত না। এতটা কষ্টে দগ্ধ হয়ে মরতে হত না!

কাঁদতে কাঁদতে ইরা হাঁপিয়ে উঠেছে, না পাওয়ার আক্ষেপ আলাদা কিন্তু সব পেয়েও হারানোর যন্ত্রণা যে কতটা মর্মান্তিক কতটা নৃশংস তা যে হারায় একমাত্র,একমাত্র সে-ই জানে। সে-ই অনুভব করতে পারে!!


বাইরে প্রকৃতি একভাবে জানলার ভেতরের ইরার দিকে চেয়ে রয়েছে,,, নিজেকে বড্ড অসহায় লাগছে তার। কিন্তু ভাগ্য বদলানো মৃত্যুকে বদলানোর কোন রাস্তাই যে নেই। এই সত্যিকে মেনে নিতেই হবে। জীবনকে যত রকম ভাবে সম্ভব গড়া যায় যত রকম ভাবে সম্ভব ভাঙা যায় কিন্তু মৃত্যু? মৃত্যুকে না গড়া যায়, না ভাঙা যায়। মৃত্যু স্থির,,, জীবনের ভাঙা-গড়ার খেলার মধ্যে দিয়েই শেষ সীমায় এসে মৃত্যুতে নিজেকে অন্তরীণ করতে হয়। ইরার যন্ত্রণায় প্রকৃতি মা-ও ব্যথিত, ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে সে-ও নিজের মৌনতাকে ভঙ্গ করছে, তবুও সে কিছু করতে অপারগ! তার জানা নেই ইরা আর কতদিন নিজের জীবন ধ্বংসস্তূপে বেদনার নীরবতা নিয়ে আশ্রয় খুঁজে চলবে.....আর কতদিন ঘুম হারানো রাতগুলো গুমরে গুমরে কাটাবে.....আর কতদিন ইচ্ছে করেই প্রিয়জনদের আঘাত দিয়ে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে রাখবে.....আর কতদিন করুণ প্রেমের একান্ত স্মৃতিকথাগুলোকে নিজের বুকের ভেতরে আটকে রাখবে, বেঁধে রাখবে… আর কতদিন এভাবে শীর্ণকায় চেহারায় পাহাড়-সমান যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে থাকবে?

হারিয়ে যাবে,,, ইরাও একদিন হয়তো হারিয়ে যাবে। চির নিদ্রায় নিমজ্জিত হবে প্রকৃতি মায়ের কোলে।

বাতাস আজ ভারী হয়ে উঠছে,,,তার প্রতিটা কানায় কানায় ভরে গেছে ইলোরার হৃদয়ঘাতী দীর্ঘশ্বাস..........


এর শেষটা আমাদের সকলের জানা তাই আর অহেতুক লেখাটা দীর্ঘ করবো না তবে একটা কথা বলা উচিত, ভালোবাসাকে সঠিক ভাবে চেনা উচিত অনুভবের মন দিয়ে - তাই কখন ভালবাসা ছেড়ে যেতে চাইলেই তাকে যেতে দিও না বা সহজে তাকে ভুল বুঝো না। ছেড়ে যাওয়ার কারণটা জানার চেষ্টা করো। হয়তো তার ছেড়ে যাওয়ার পিছনে কোন কারণ আছে যা তুমি জানো না। আর সে-ও বলতে অপারগ।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy