Hasnur Khatun(রুbi🦋)

Abstract Romance Tragedy

4.4  

Hasnur Khatun(রুbi🦋)

Abstract Romance Tragedy

"বিচ্ছেদ যন্ত্রণা"

"বিচ্ছেদ যন্ত্রণা"

4 mins
336


তৃশা হঠাৎ একদিন ইশানকে ফোন করে বলে " দেখা করতে পারবে"।ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করতে যেন ভুলেই গেছে, 

কথা শুনে মনে হয় যেন প্রায় প্রতিনিয়ত তাদের কথা হয়,কিন্তু আসলে প্রায় দু- তিনবছর পরে কথা হচ্ছে।


ইশান বলল "কোথায়"?

তৃশা: এমন কোথাও যেখানে কোলাহল বেশি,ভিড়-ভাড় জায়গা হলেও অসুবিধা নেই।

(যেন বেশি গল্প করতে না পারে,প্রয়োজনেই যেন সীমিত থাকে)।


ইশান: তাহলে তো আর গল্প জমবে না... (মৃদু হেসে)


তৃশা: অসুবিধা খুব একটা হবে না।


ইশান: তা এমন জায়গা আর কোথায় আছে বলো তুমিই...।


তৃশা: ঠিক আছে...বাদ দাও তবে,দেখা করতে হবে না।


ইশান: আচ্ছা! কলেজের মোরে যে নতুন রেস্টুরেন্ট....


তৃশা:- ঠিক আছে,কাল বিকেল ৪টায় (বলে রেখে দিল)। 


পরদিন বিকেল চারটার মধ্যেই ইশান একটা কোনার টেবিলে বসে সময় দেখছে আর পথ চেয়ে অপেক্ষা করছে...


তৃশা প্রায় পনেরো মিনিট পর ঢুকলো,ইশানকে সামনে এগিয়ে আসতে দেখে তৃশার ক্ষানিকটা ইতঃস্তত বোধ হচ্ছিল দেখে ইশান সেখানেই থেমে যায়।


(লেখিকা: অনেকক্ষনই হলো এবার কথা শুরু করো,কতক্ষনে এদিক ওদিক তাকিয়ে সময় নষ্ট করবে ।


ইশান: দেখা করতে সেই চেয়েছিল,হয়তো কিছু কথা আছে বলেই...তবে কিছু বলছে না কেন? আমিও বুঝতে পারছিনা কি বলব। অদ্ভুত লাগছে ব্যাপারটা...)


তৃশা: তারপর কেমন চলছে দিনকাল...?


ইশান: হুমম, চলে যাচ্ছে। তোমার কি খবর?কোনো খোজখবর নেই,কোনো পাত্তা নেই...


তৃশা: কার পাত্তা নেই আমার? নাকি তোমার পাত্তা নেই...


ইশান: (প্রতিবারের মতোই ,উত্তর দেবেনা,উলটো দোষ চাপিয়ে দেবে)

ফোন করলে তো ব্যস্ত,ম্যাসেজ করলে তোমার কাছে পৌঁছায় না,সোস্যাল মিডিয়ায় আর দেখাও যায়না তোমাকে।


(দুজনেই ভালো মতো জানে ব্যাপার টা,তৃশা যে ইশানকে ব্লক করে রেখেছে।)


তৃশা: আচ্ছা বাদ দাও সেসব...( মৃদু হেসে) ।


ইশান: কি খাবে বলো? চা...


তৃশা: না না...।


ইশান: কেনো (একটু অবাক হয়ে) 


( কারন ইশান তৃশাকে ছোটো থেকে জানে,আর তৃশা কি পরিমানে চা খায় তার সবই জানা,কিন্তু কথায় আছে যে " সময়ের সাথে সাথে সব বদলে যায়,মানুষ বদলে যাওয়াটাও তো স্বাভাবিক।)


তৃশা: খুব একটা আর চা পান করা হয় না।


(লেখিকা:তৃশা তুমি কি করতে এসেছো? যা বলতে এসেছো বলো...

তৃশা: আমি কিছু বলতে পারছিনা যে...

লেখিকা: বৃথা সময় নষ্ট করছো ,পাঠকেরা আমার বিরক্তি বোধ করছে যে।)


তৃশা: ( ব্যাগ থেকে কি একটা বের করে) জন্মদিনের শুভেচ্ছা ইশান।


ইশান: কার্ড!এতোদিনে মনে পরলো বুঝি!

দুবছরের কার্ড গুলো বাকি থেকে গেলো যে...যাই হোক ভালো লাগলো ।


তৃশা: পর সপ্তাহে আমার বিয়ে (এবার বিয়ের কার্ড বের করে তার সামনে রেখে দেয়) ।


ইশান: খুব সুন্দর একটা উপহার (চোখ ছলছল করছে)।


(লেখিকা: ইশান এ কি করছো? তোমার কান্না পাচ্ছে কেন?


ইশান: তুমি তো সবই জানি। তুমি কি চাইছো তার বিয়ের কথা শুনে নাচবো?


লেখিকা: হুম,তার বিয়েতে গিয়ে নাচতে হবে তো!সবাই নাচবে।


ইশান: তুমি এমনটা করতে পারোনা। তুমি জানো আমি তার প্রতি কতখানি দুর্বলতাবোধ করি।কতখানি ভালোবাসি ... তোমার পাঠকরাও চাইবে না যে আমরা আলাদা হই।


লেখিকা: সে সম্পর্কের রেখা তো বিধাতাই ঠিক করেন বাপু।


ইশান: কিন্তু এখানে তো তুমিই আমাদের রক্ষাকর্তা,সবটাই তো তোমার হাতে...।আমি কিছু বুঝি না,তৃশাকে আমি অন্য কারোর হতে দেখতে পারবো না।


লেখিকা: অধৈর্য হয়ো না বাপু,ধৈর্য রাখো।)


ইশান: এই জন্য আমাকে সমস্ত জায়গা থেকে ব্লক করে...(গলা শুকিয়ে আসছে,আওয়াজ বের হচ্ছেনা দেখে তৃশা জলের বোতল ব্যস্তভাবে এগিয়ে দিল)


না থাক ,ঠিক আছি, লাগবে না।

-নিজের পছন্দে...


তৃশা: না না। বাড়ি থেকে ঠিক করেছে।


ইশান: তুমি রাজি? 


তৃশা: না হওয়ার কারন নেই।


ইশান: তুমি এখন কি চাও? তোমার বিয়েতে যাবো? কি করবো গিয়ে? তোমাকে অন্য কারোর হতে দেখতে তো পারবোনা । এতোটা সাহস আমার নেই।(চোখের জল লুকোনোর চেষ্টায় ব্যর্থ)


তৃশা: তুমি এমন করছো কেনো!

তুমি তো জানোই কারোর অবাধ্যে গিয়ে আমি কখনো কিছু করিনা।


ইশান: আমি চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তুমিই হয়তো চাওনি।


তৃশা: আমার চাওয়া আর না চাওয়াতে কিছু যায় আসে না। তুমি তো চাইতে!তবে তোমার চাওয়াতে কেনো হলো না?


ইশান: বন্ধু বিচ্ছেদের যন্ত্রণা সহ্য করেছি এতোদিন। এখন তোমাকে হারিয়ে ফেলার ভয় আমার হৃদয় সহ্য করতে পারছে না তৃশা...।





তৃশা কি বলবে কিছু বুঝতে না পেরে,কিছু না খেয়েই বেরিয়ে পরে সেখান থেকে ।রেস্টুরেন্টের সামনে রাস্তা পেরোনোর সময় একটি বাচ্চাকে বাঁচাতে গিয়ে গাড়ির সামনে এসে পড়ে। বাইরে এতো চিৎকার ,হইহুল্লো শুনে ইশান উঠে দাড়ালো,ওয়েটার বাইরে থেকে দৌড়ে আসছে দেখে ইশান বাইরের দরজা পর্যন্ত বেড়োলো।


ওয়েটার: স্যার...মেডাম.... একসিডেন্ট....

ইশান: কি বলছো...? (কিছু বুঝতে না পেরে দৌড় দিল ঘটনাস্থলে) ।


তৎক্ষনাৎ অনেক ভিড় জমে গেছে।সেই ভিড় কাটিয়ে চোখের সামনে দেখে তৃশা জড়োসড়ো হয়ে মাটিতে পড়ে আছে।মাথায় হাত দিয়ে সেও মাটিতে পড়ে গেলো।


(ইশান: তুমি কাজটা ঠিক করলে না। আমি তাকে আমার করে রাখতে চেয়েছিলাম,আর তুমি তাকেই তুলে নিচ্ছো...সে আমার যদি নাই হয় দুঃখ নেই অন্তত সে বেঁচে থাক।


লেখিকা: ইশান ব্যস্ত হয়ো না।আমারও খারাপ লাগছে,এমনটা আমিও চাইনি।

আরার হাতেও কিছু নেই ,সবই কলমের খেলা।


ইশান: আমি কিছু বুঝি না,সে শুধু বেঁচে থাক।তাকে যেন চোখের সামনে দেখতে পাই।সে থাকুক অন্য কারোর ঘরে আমি সয়ে নেবো।কিন্তু এ সহ্য করবো না।)



পুলিশ এসে এম্বুলেন্সে করে তৃশাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলো।





Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract