ভালোবাসার স্কোর যেখানে শুন্য ৪
ভালোবাসার স্কোর যেখানে শুন্য ৪
ভালোবাসার স্কোর যেখানে শুন্য
( অথ উত্তরা শক্তি কথোপকথন )
সমৃদ্ধ ভিজে একাকার হয়ে নিজের ঘরে ঢুকেসবেধন নীলমণি ভিজে জামাকাপড় গুলো শুকোতে দিয়ে একটা টাওয়াল জড়িয়ে শুয়ে পড়ে । আয়ুশ ঘরে নেই দেখে ওর কৌতূহল হয়েছিল আয়ুশ কোথায় খোঁজ নেবার তবে আর শরীর দিচ্ছিল না । আজ রবিবার যা হবার হবে আয়ুশ এর সাথে । শক্তি দেখছে তার পাশে বসে আছে মিসেস কাঞ্জিলাল । পরনে লাল পাড়ের গরদের শাড়ি , পায়ে আলতা , মাথা ভর্তি সিঁদুর যেমনটা শক্তি দেখেছে ওনাকে । শক্তি বললো ম্যাম আপনি ! উত্তরা বললো ম্যাম ট্যাম নয় বরং মাসিমা বলতে পারো আমাকে বাছা তুমি , যদিও জানিনা পেত্নীকে মাসিমা বলে সম্বোধন করা যায় কি না ? শক্তি ভয় পেয়ে গুটিয়ে যায় দেখে উত্তরা বাছা আমাকে ভয় পেয়ও না হয়ত আমার এ পৃথিবীতে কাজ এখনো শেষ হয়নি তাই শেষ হয়েও হইলাম না শেষ । আমি হলুম জাঁদরেল মানুষ , আরে আমার হৃদয় তোমার কাছে রয়েছে বাছা । আর সেই তুমি এত দুর্বল ! সমৃদ্ধ আমার সাথে যা করেছে ভুল তবু যা হবার তো হয়েই গেছে বাছা তাই বলি আমার হৃদয় খানি তোমার মধ্যেই বাঁচিয়ে রাখার ভার তো এখন তোমার তাই না ! শক্তি অবাক হয়ে যায় উত্তরার কথা শুনে , নিজের অজান্তেই মাথা রাখতে যায় উত্তরার কোলে কিন্তু শূন্যে কখনো কি ভার দেওয়া যায় ? শক্তির মাথাটা ছাদের মেঝেতে ঠোকা যায় । উত্তরা সেটা দেখে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে । বাছা লাগলো যে তোমার হে ? আহা আমার বাছা মাথা খান একটু কোলে রাখতে চাইলে আমার আর আমি এটুকু করতেও অপরাগ যে ? আমি যে শুন্য , আমার কোন আকার নেই , আমাকে তোমরা যেমন ভাবে চেনো সেই রূপেই আমায় দেখতে পাও । শক্তি উঠে বসে , না না মাসিমা আমার লাগেনি আপনি আমার জীবন এই নিয়ে দুইবার বাঁচালেন । একবার আপনার হৃদয় দিয়ে , একবার এই আত্মহত্যা থেকে আপনি আমাকে আটকালেন । ওইটুকু ব্যাথা আমি এখন ধাতব্যর মধ্যেই আনছি না । আপনি আশা করি সবই জানেন তাই আপনি কিছু একটা করুন । উত্তরা মৃদু হেসে উঠল , শোন আমি আর হয়ত এই প্রকৃতির অংশিদার নই তাই আমি এই ঝামেলা তে সোজাসুজি নিজের নাক গলাতে পারবো না । তবে আমি দৃশ্যমান না হয়েও আছি এই অভিযানে । আজ রবিবার বাবুর আজ অগ্নিপরীক্ষা তাই সবদিক দেখে তোমাকেই রাখতে হবে বাছা । শক্তি বলে , আমি আছি মাসিমা আমি কারোর জন্য নয় শুধুমাত্র আপনার জন্য এই অভিযানে সামিল হলাম । কন্যা আমার জীবন বাঁচিয়েছে সেদিন তার ঋণ তো ছিলই তবে সমৃদ্ধকেও জবাব দিতে হবে । আমি কন্যা আর আয়ুশমান স্যারের বিবাহ অভিযান সফল করে তবে দম নেব । উত্তরা বলে দেয় শক্তিকে এর পর তাকে কি করতে হবে । শক্তি সব শুনে বুঝে নেয় আর তার পর নিজের ঘরে ফিরে আসে । উত্তরা ছাদেই বসে থাকে পাশে শক্তিকে পেলেও তার বড্ড চিন্তা হচ্ছে বাবুর জন্য । চ্যামরা পোলা নিজের আখের না গুছিয়ে সারা রাত ধরে ওই চেমরির পিছনে পরে আছে । আরে একি একদিনের ব্যাপার রে পাগল , ওই মিনসে রোদ্দুর যদি জিতে যায় তা হলে আর পাবি তুই কন্যাকে ?
কন্যা আয়ুশ কে বারবার অনুরোধ করে তার ঘর থেকে চলে যেতে কিন্তু আয়ুশ সেসব শোনার পরিস্থিতি তে নেই । সে হু হা করছে আর কন্যার বিছানায় গড়াগড়ি খায় । এর মধ্যে কন্যার মা অপলা বাইরে থেকে দরজা নক করতে শুরু করে । কন্যা আয়ুশকে জোর করে বাথরুমে নিয়ে গিয়ে লুকিয়ে দেয় আর দরজা খুলে দেয় । অপলার মেয়ের ওই ক্লান্ত মুখ দেখে সন্দেহ হয় তবু কিছু বলে না আর তো কয়েক ঘন্টার মধ্যে মেয়ের বিয়ে । অপলা কন্যাকে হলদী সেরিমনির জন্য ফ্রেশ হয়ে নিতে বলে ওখান থেকে চলে যায় । কন্যা আয়ুশ কে বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসতে বলে । আয়ুশ আবার কন্যার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয় , কিছুক্ষণ বিহ্বল কন্যাও মেতে ওঠে আয়ুশে তার পর জোর করে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয় । আয়ুশ আজ যদি নয় তো কোনদিন নয় আর ইউ আন্ডারস্ট্যান্ড ! ডোন্ট ডু ডিস ফাকিং জব গো এন্ড রেডি টু প্রুফ ইওরসেলফ । আয়ুশ এর ঘোর ভেঙে যায় কন্যার কথায় সে বেরিয়ে আসে ওই ঘর থেকে । গেস্টরুমে যাবার সময় তার দেখা হয় শক্তির সাথে । শক্তি তুমি এখানে কি করে এলে ? আর ইউ ফাইন ? আয়ুশ জানতে চায় । শক্তি বলে স্যার আমি ভালো আছি আপনি আমার সঙ্গে চলুন দরকার আছে । শক্তি আয়ুশ এর সম্মতির অপেক্ষা ও করে না ওর হাত ধরে লবির দিকে এগিয়ে যেতে থাকে ।
চলবে
ভালোবাসার স্কোর যেখানে শুন্য
( অথ আজ রবিবার )
হলদী সরিমনির জন্য কন্যা সেজেছে আসলে সাজতে বাধ্য হয়েছে মা অপলার জন্য । হলুদ লেহেঙ্গা , সবুজ ব্লাউজ , ফুলের সাজ দিয়ে শক্তি নিজের হাতে সাজিয়ে দিয়েছে কন্যাকে । এত সুন্দর লাগছে ওকে যে কেউ চোখ সরাতে পারছে না ওর দিক থেকে । কন্যার আবদারে শক্তিও পড়েছে কন্যার একটা পিঙ্ক লেহেঙ্গা আর জয়পুরি গয়না । সবাই দেখছে এসে থেকে সমৃদ্ধর গায়ে ওই এক জামা , অপলা তো ওকে দেখলেই নাক কুচকাচ্ছে । হয় রে যাদের নিজেদের কাপড়ের ব্যবসা সেই বাড়ির ছেলের যদি পোশাক না জোটে ! আসল তথ্যের খবর তো আয়ুশ আর সমৃদ্ধই জানে । আয়ুশ একটা হলুদ পাঞ্জাবি সঙ্গে করেই এনেছে সেটাই পড়েছে ও আর সাথে মানানসই কোলাপুরী চপ্পল , সোনার চেন , আংটি , ব্রেসলেট এসব । ওকে দেখেই বর বর লাগছে কারণ রোদ্দুর পড়েছে একটা নীল চকচকে শেরওয়ানি আর ওকে দেখতে সুন্দর হলেও এমুহূর্তে একদম সাজটা ঠিক লাগছে না । সবাই তৈরি রোদ্দুরের হলুদ কন্যাকে লাগানো হবে তাই রোদ্দুর আগে বসলো হলদী সারিমনির জন্য । এদিকে বাটিতে বাটা হলুদ যেখানে রেডি করে রাখা ছিল আগেই ওখান থেকে এক খাবলা হলুদ নিয়ে আয়ুশ নিজের গালে দিয়ে নিয়েছিল । তারপর কন্যার কাছে গিয়ে একান্তে নিজের গালটা কন্যার গালে ঘষে দেয় আয়ুশ । কন্যা মনে মনে তো এটাই চাইছিল , আয়ুশ এর রঙে রঙিন হতে । কিন্তু এখন তো রাগ দেখিয়ে দিল বেশ করে আয়ুশ কে । কন্যার ডিমান্ড অনুযায়ী ফেরা হবার আগে আয়ুশ কে নিজেকে ইনোসেন্ট প্রুফ করতে হবে তার আগে এ নাটক চলবে । রোদ্দুরের গায়ে হলুদ হবার পর বর পক্ষের লোকজন ওই হলুদ বাটি নিয়ে কন্যা যেখানে বসে ছিল সেদিকে যাচ্ছিল আচমকাই বাটিটা পড়ে যায় আর সব হলুদ মাটিতে পড়ে । সবাই হা হা করে ওঠে এ কি অলক্ষুনে কান্ড ? কন্যাকে হলুদ দেওয়া হয়না আর , অপলা লক্ষ্য করেন যে কন্যার গালে কিন্তু হলুদের দাগ ! উত্তরা নিজের কাজ সেরে ফেলেছে , অদৃশ্য হয়েই বাটিটা ওদের হাত থেকে ফেলে দিয়ে । মেহেন্দি লাগানো হয় কন্যাকে শক্তি মেহেন্দি আলীকে বলে দেয় রোদ্দুরের আর না লিখে যেন আ লেখা হয় , মেয়েটা রাজি হয়ে যায় কারণ তাকে আয়ুশ আর শক্তি টাকা দেয় কাজটা করার জন্য । সমৃদ্ধ খেয়াল করে শক্তি যার সাথে আয়ুশ কোনদিনই কথা বলত না সেই শক্তি আর আয়ুশ বেশ মাখো মাখো আজ । কন্যা কে শক্তি জানিয়েছে তার সমৃদ্ধর সাথে আগের দিনের ঘটনা নিয়ে । কন্যা ও অবাক কাল পর্যন্ত যে মেয়েটা একটা দলা পাকা যন্ত্রণা নিয়ে গুমরে যাচ্ছিল আজ কোন জাদুবলে সে ফ্রি আছে ! শক্তি আয়ুশ কে জানিয়েছে এক একটা অনুষ্ঠানে কি ভাবে তারা রোদ্দুরের বদলে আয়ুশ কে প্ল্যান্ট করবে । আর সমৃদ্ধ কে ঠিক সময়ে নিয়ে গিয়ে কি ভাবে কনফেস করাবে । যদি সমৃদ্ধ ইন দি মোমেন্ট ব্যাকআপ করে তা হলে মুশকিল হতে পারে কিন্তু তারও যে ব্যবস্থা আছে তা আয়ুশ না জানলেও শক্তি জানে । ওদিকে কাঞ্জিলাল বাড়ি ফিরে এসে দেখে বাড়িতে কেউ নেই , একা বাড়িতে যদি গিন্নির ভূত এসে ধরে তা হলে কি হবে এই ভেবে কাঞ্জিলাল আপাতত হোটেল বাস করবে ঠিক করেছে অন্তত যতদিন ছেলে না ফিরে আসে । অপলার মনটা কু ডাকছে , এই বিয়ে সুষ্ঠ ভাবে মিটবে তো ? সমৃদ্ধ মনে মনে গাল দিচ্ছে আয়ুশ কে মারা একটা জামা দিচ্ছে না পড়তে ! বোকাচোদা শালা নিজে হলুদ পাঞ্জাবি পড়ে গাঁদা ফুল সেজে ঘুরছে , মারা তোর নাটবল্টু আমি টাইট দিচ্ছি দাঁড়া রাতটা হতে দে !
কবজি ডুবিয়ে খাবার খেয়ে ঢেকার তুলে সমৃদ্ধ দেখতে লাগলো বিবাহ অভিযান । রোদ্দুরের কেন জানি মনে হচ্ছে গতরাতে কন্যা আর আয়ুশ এর মধ্যে কিছু একটা হয়েছে । আয়ুশ এর মতলব ঠিক মনে হচ্ছে না ওর ।
চলবে
ভালোবাসার স্কোর যেখানে শুন্য
( অথ হৃদয় কাননে লেখা আছে তোর নাম )
চূড়া সরিমনি বাঙালি বিয়ের অঙ্গ না হলেও পাঞ্জাবে চিরকাল থেকে আসা অপলা চেয়েছিল মেয়ের বিয়ে হোক বাঙালী ও পাঞ্জাবি নিয়মের মিশেলে । চূড়া পরিয়ে দেওয়া হয়েছে কন্যাকে আগের দিন এবার সেটা থেকে ওর মামাবাবু কাপড় সরিয়ে দেওয়ার নিয়মটা করে নিলেন । চূড়াতে কোন নাম লেখাইনি কন্যা কারণ রোদ্দুর আর আয়ুশমান দুই নামের মধ্যে পাত্র কে হবে আসলে সেই নিজে জানে না । তাই নামহীন লাল চূড়া সে নিজের জন্য বেছে নিয়েছে ।
বিকাল সাড়ে পাঁচটা বাজে কন্যাকে সাজাতে এসেছে মেকআপ আর্টিস্ট । ফেরা হবার আগেই সমৃদ্ধর বয়ান দরকার আয়ুশ কে নির্দোষ প্রমান করতে । আয়ুশ সমৃদ্ধকে ছাদে নিয়ে গেছে সঙ্গে আছে শক্তি । সমৃদ্ধ বেশ দুপুরের ভাতঘুম দিচ্ছিল এর মধ্য ওকে যেভাবে ঘাড় ধরে আয়ুশ নিয়ে এসেছে ছাদে তাতে ওর মেজাজ টং । দাঁত মুখ খিঁচিয়ে ও চিৎকার করে এই মারা তুই তো বেশ কন্যার সাথে নিজের ফাকিং জব সেরে ফেলেছিস গত রাতে ! কি ভাবছস আমি কিসু বুঝি নাই ? আমি মারা রুখা সুখা খেয়ে হাতের কাজ করে চালাচ্ছি । বোকাচোদা আমি কিছু বুঝি না এখন আমার মালটাকেও ফুসলিয়েছো তুমি , গান্ডু পেয়েছো আমাকে ? আমি কিছু কনফেশ করবো না বাল , যা করার করে নে শালা । আয়ুশ মুখে কিছু বললো না সোজা একটা পানচ দিলো সমৃদ্ধর মুখে আর সমৃদ্ধ ঘুরে মাটিতে পড়ে গেল । শক্তি বুঝতে পারছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে এবার ও আয়ুশ কে শান্ত করার চেষ্টা করে । সমৃদ্ধর নাক থেকে রক্ত বের হয়ে গেছে , ঠোঁটের কোণেও কালশিটে । ও উঠে দাঁড়ায় মুখে একটা তাচ্ছিল্য ভরা হাসি আয়ুশ আবার ওর দিকে এগিয়ে যায় আর ওর পেটে দুটো ঘুষি মেরে দেয় । সমৃদ্ধর জামাটা ছিড়ে গেছে চুল ঘেঁটে গেছে । শক্তি বলে , আয়ুশ প্লিস ওকে ছেড়ে দাও ফর গড সেক , ও মরে যাবে । আয়ুশ বলে , না শক্তি ও বেঁচে থাকার যোগ্য নয় । ওকে আমার হয়ে কিছুই প্রমাণ করতে হবে না তার আগেই আমি ওকে মেরে দেবো । শক্তি বারবার অনুরোধ করে সমৃদ্ধ কে ছেড়ে দিতে । আয়ুশ রেগে শক্তিকে বলে , কেন তুমি এই জানোয়ারটা কে বাঁচাতে চাইছো শক্তি ও তোমাকে বরবাদ করেছে আর ভবিষ্যতে ও করবে । শক্তি উত্তেজনাতে বলে ফেলে , আমি ভালোবাসি সমৃদ্ধ কে , আমি ভালোবাসি । আয়ুশ থেমে যায় , সমৃদ্ধ এগিয়ে এসে শক্তিকে বলে , ইউ স্টুপিড ফাকিং হোর গো ফ্রম মাই লাইফ , পনোতি মেয়েমানুষ । শক্তি কিছুই বলে না সমৃদ্ধকে কারণ ওসবের জন্য বহু সময় পরে আছে । এখন ওকেই কিছু একটা করে কন্যা আর আয়ুশ কে এক করে দিতে হবে । আয়ুশ ছাদের দেওয়ালে ঘুঁষি মেরে মেরে নিজের হাত ফাটিয়ে ফেলেছে ওর হাত বেয়ে রক্তের ধারা অব্যাহত । তবু আয়ুশ নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করে চলেছে । শক্তি অনেক বুঝিয়ে আয়ুশকে নিচে নিয়ে যায় । সমৃদ্ধ খুব খুশি আজ সব বদলা সূদ সমেত নেবে ও , এই তো শুরু এখনো কলির সন্ধ্যা বাকি যে । উত্তরা সব দেখছে কিন্তু ও এর মধ্যে ঢোকেনি । ও সমৃদ্ধকে জানতে দিতে চায়না যে ও এখানেই আছে । সমৃদ্ধ জানে পিসিমা কাঞ্জিলাল হাউসেই বন্দি ।
নীল রঙের জমি আর লেমন রঙের চওড়া পাড় বেনারসী শাড়ি পড়ানো হয়েছে কন্যাকে । যেমনটা আয়ুশ বলতো সেই স্কুলে পড়ার সময় । যখন ওদের বিয়ে হবে ডিজাইনার দিয়ে আয়ুশ বানাবে কন্যার শাড়ি । নীল জমি লেমন পাড় বেনারসী অন্যদের চেয়ে অনেক ইউনিক হবে সেই শাড়ি খানি । কন্যা জানে না ওর স্বামী কে হতে চলেছে তবে শাড়িটা ও সেই কৈশোর বয়সের স্বপ্নের মতোই বানানো করিয়েছে । আয়ুশ বলত কন্যার মাথায় থাকবে বড়ো একটা খোঁপা তাতে জড়ানো থাকবে জুঁই ফুলের মালা আর মাঝখানে সিঁথি খানি ঢাকা থাকবে মুক্ত চর্চিত টিকলি দিয়ে । কন্যা সেই ভাবেই নিজের মস্তক সজ্জা করেছে আজও যে ওর আয়ুশ এর সেই সব কথাই কানে বাজে । কৈশোর থেকেই আয়ুশ খুব ভালো ডিজাইনার আর ওর সব আইডিয়া গুলো ঘুরতো কন্যাকে ঘিরে । মাথার থেকে কপাল পর্যন্ত নেমেছে টিকলি খানি , মুক্ত চর্চিত আর কেন্দ্রে একটা বড়ো সবুজ পান্না বাসানো । নাকে একখানা মুক্তোর চেন দেওয়া ডাউস নথ , কারণ আয়ুশ বলত কন্যার টিকালো নাকে বড় নথ ছাড়া মানাবে না । কন্যার কানে পড়ানো হয়েছে পান্নার সাথে হিরে দিয়ে তৈরি কানবালা , গলায় মুক্তোর ছড়ি দিয়ে পান্নার লকেট বসানো চকার , হিরের নেকলেস যার কেন্দ্রে শোভা পাচ্ছে এক নীলকান্ত মনি । মেহেন্দি চর্চিত হাতে হাতপদ্ম , জরওয়ার বালা । নুপুর ও ইচ্ছা করেই পড়েনি কারণ কথা হয়েছিল একদিন অতীতে সব শেষে আয়ুশ নিজের হাতে কন্যাকে নুপুর পরিয়ে দেবে , সেই আশাতেই আজও কন্যা নূপুর টাকে বাদ রেখেছে নিজের বিয়ের সাজ থেকে । কন্যার মেহেন্দি তে আ লেখা , আর হৃদয়ে আ লেখা আর ও সেজেছেও ওর আয়ুশ এর জন্য । তার পরেও কি রোদ্দুর আসবে ওর জীবনে ?
ভালোবাসার স্কোর যেখানে শুন্য
( অথ হৃদয় কাননে লেখা আছে তোর নাম )
চূড়া সরিমনি বাঙালি বিয়ের অঙ্গ না হলেও পাঞ্জাবে চিরকাল থেকে আসা অপলা চেয়েছিল মেয়ের বিয়ে হোক বাঙালী ও পাঞ্জাবি নিয়মের মিশেলে । চূড়া পরিয়ে দেওয়া হয়েছে কন্যাকে আগের দিন এবার সেটা থেকে ওর মামাবাবু কাপড় সরিয়ে দেওয়ার নিয়মটা করে নিলেন । চূড়াতে কোন নাম লেখাইনি কন্যা কারণ রোদ্দুর আর আয়ুশমান দুই নামের মধ্যে পাত্র কে হবে আসলে সেই নিজে জানে না । তাই নামহীন লাল চূড়া সে নিজের জন্য বেছে নিয়েছে ।
বিকাল সাড়ে পাঁচটা বাজে কন্যাকে সাজাতে এসেছে মেকআপ আর্টিস্ট । ফেরা হবার আগেই সমৃদ্ধর বয়ান দরকার আয়ুশ কে নির্দোষ প্রমান করতে । আয়ুশ সমৃদ্ধকে ছাদে নিয়ে গেছে সঙ্গে আছে শক্তি । সমৃদ্ধ বেশ দুপুরের ভাতঘুম দিচ্ছিল এর মধ্য ওকে যেভাবে ঘাড় ধরে আয়ুশ নিয়ে এসেছে ছাদে তাতে ওর মেজাজ টং । দাঁত মুখ খিঁচিয়ে ও চিৎকার করে এই মারা তুই তো বেশ কন্যার সাথে নিজের ফাকিং জব সেরে ফেলেছিস গত রাতে ! কি ভাবছস আমি কিসু বুঝি নাই ? আমি মারা রুখা সুখা খেয়ে হাতের কাজ করে চালাচ্ছি । বোকাচোদা আমি কিছু বুঝি না এখন আমার মালটাকেও ফুসলিয়েছো তুমি , গান্ডু পেয়েছো আমাকে ? আমি কিছু কনফেশ করবো না বাল , যা করার করে নে শালা । আয়ুশ মুখে কিছু বললো না সোজা একটা পানচ দিলো সমৃদ্ধর মুখে আর সমৃদ্ধ ঘুরে মাটিতে পড়ে গেল । শক্তি বুঝতে পারছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে এবার ও আয়ুশ কে শান্ত করার চেষ্টা করে । সমৃদ্ধর নাক থেকে রক্ত বের হয়ে গেছে , ঠোঁটের কোণেও কালশিটে । ও উঠে দাঁড়ায় মুখে একটা তাচ্ছিল্য ভরা হাসি আয়ুশ আবার ওর দিকে এগিয়ে যায় আর ওর পেটে দুটো ঘুষি মেরে দেয় । সমৃদ্ধর জামাটা ছিড়ে গেছে চুল ঘেঁটে গেছে । শক্তি বলে , আয়ুশ প্লিস ওকে ছেড়ে দাও ফর গড সেক , ও মরে যাবে । আয়ুশ বলে , না শক্তি ও বেঁচে থাকার যোগ্য নয় । ওকে আমার হয়ে কিছুই প্রমাণ করতে হবে না তার আগেই আমি ওকে মেরে দেবো । শক্তি বারবার অনুরোধ করে সমৃদ্ধ কে ছেড়ে দিতে । আয়ুশ রেগে শক্তিকে বলে , কেন তুমি এই জানোয়ারটা কে বাঁচাতে চাইছো শক্তি ও তোমাকে বরবাদ করেছে আর ভবিষ্যতে ও করবে । শক্তি উত্তেজনাতে বলে ফেলে , আমি ভালোবাসি সমৃদ্ধ কে , আমি ভালোবাসি । আয়ুশ থেমে যায় , সমৃদ্ধ এগিয়ে এসে শক্তিকে বলে , ইউ স্টুপিড ফাকিং হোর গো ফ্রম মাই লাইফ , পনোতি মেয়েমানুষ । শক্তি কিছুই বলে না সমৃদ্ধকে কারণ ওসবের জন্য বহু সময় পরে আছে । এখন ওকেই কিছু একটা করে কন্যা আর আয়ুশ কে এক করে দিতে হবে । আয়ুশ ছাদের দেওয়ালে ঘুঁষি মেরে মেরে নিজের হাত ফাটিয়ে ফেলেছে ওর হাত বেয়ে রক্তের ধারা অব্যাহত । তবু আয়ুশ নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করে চলেছে । শক্তি অনেক বুঝিয়ে আয়ুশকে নিচে নিয়ে যায় । সমৃদ্ধ খুব খুশি আজ সব বদলা সূদ সমেত নেবে ও , এই তো শুরু এখনো কলির সন্ধ্যা বাকি যে । উত্তরা সব দেখছে কিন্তু ও এর মধ্যে ঢোকেনি । ও সমৃদ্ধকে জানতে দিতে চায়না যে ও এখানেই আছে । সমৃদ্ধ জানে পিসিমা কাঞ্জিলাল হাউসেই বন্দি ।
নীল রঙের জমি আর লেমন রঙের চওড়া পাড় বেনারসী শাড়ি পড়ানো হয়েছে কন্যাকে । যেমনটা আয়ুশ বলতো সেই স্কুলে পড়ার সময় । যখন ওদের বিয়ে হবে ডিজাইনার দিয়ে আয়ুশ বানাবে কন্যার শাড়ি । নীল জমি লেমন পাড় বেনারসী অন্যদের চেয়ে অনেক ইউনিক হবে সেই শাড়ি খানি । কন্যা জানে না ওর স্বামী কে হতে চলেছে তবে শাড়িটা ও সেই কৈশোর বয়সের স্বপ্নের মতোই বানানো করিয়েছে । আয়ুশ বলত কন্যার মাথায় থাকবে বড়ো একটা খোঁপা তাতে জড়ানো থাকবে জুঁই ফুলের মালা আর মাঝখানে সিঁথি খানি ঢাকা থাকবে মুক্ত চর্চিত টিকলি দিয়ে । কন্যা সেই ভাবেই নিজের মস্তক সজ্জা করেছে আজও যে ওর আয়ুশ এর সেই সব কথাই কানে বাজে । কৈশোর থেকেই আয়ুশ খুব ভালো ডিজাইনার আর ওর সব আইডিয়া গুলো ঘুরতো কন্যাকে ঘিরে । মাথার থেকে কপাল পর্যন্ত নেমেছে টিকলি খানি , মুক্ত চর্চিত আর কেন্দ্রে একটা বড়ো সবুজ পান্না বাসানো । নাকে একখানা মুক্তোর চেন দেওয়া ডাউস নথ , কারণ আয়ুশ বলত কন্যার টিকালো নাকে বড় নথ ছাড়া মানাবে না । কন্যার কানে পড়ানো হয়েছে পান্নার সাথে হিরে দিয়ে তৈরি কানবালা , গলায় মুক্তোর ছড়ি দিয়ে পান্নার লকেট বসানো চকার , হিরের নেকলেস যার কেন্দ্রে শোভা পাচ্ছে এক নীলকান্ত মনি । মেহেন্দি চর্চিত হাতে হাতপদ্ম , জরওয়ার বালা । নুপুর ও ইচ্ছা করেই পড়েনি কারণ কথা হয়েছিল একদিন অতীতে সব শেষে আয়ুশ নিজের হাতে কন্যাকে নুপুর পরিয়ে দেবে , সেই আশাতেই আজও কন্যা নূপুর টাকে বাদ রেখেছে নিজের বিয়ের সাজ থেকে । কন্যার মেহেন্দি তে আ লেখা , আর হৃদয়ে আ লেখা আর ও সেজেছেও ওর আয়ুশ এর জন্য । তার পরেও কি রোদ্দুর আসবে ওর জীবনে ?

