STORYMIRROR

Ankita Chatterjee

Drama Romance Others

3  

Ankita Chatterjee

Drama Romance Others

অর্ধাঙ্গিনী পার্ট- 3

অর্ধাঙ্গিনী পার্ট- 3

4 mins
370


শ্রেয়া- (আমি তো রীতিমতো অবাক আর অবাক হবোই না বা কেনো, আম ক্রাশড, আমার সামনে আমার আকাশ দাঁড়িয়ে, কী সুন্দর আর সবথেকে আকর্ষণীয় তার নীল চোখ, আমি জীবনেও এমন চোখ দেখিনি, আকাশ কে অনেকবার ফোটো, ম্যাগাজিন , সোশ্যাল এ দেখিছি কিন্তু এরকম, লাগেনি, আমি তো প্রথম দেখায় ভালোবেসে ফেললাম, সত্যি নিজেরই দারুন লাগছে যে আমি আকাশের # অর্ধাঙ্গিনী হবো, শুভদৃষ্টির সময় তো তাই দেখেই যাচ্ছি)


আকাশ- ( কী দেখতে, অবশ্য রূপ থাকা মানেই খারাপ, আর এভাবে দেখছে কেন)


শ্রেয়া- (বিয়ে শুরু হলো, মালা বদল, হস্তদান, হয়ে গেল তারপর আর হলোনা।। কেন)


কিছুক্ষণ পর একটা রুমে নিয়ে গেল।।


শ্রেয়া- এই রিয়া।।


রিয়া-হ্যাঁ দি।।


শ্রেয়া- আমার খুব ক্ষিদে পেয়েছে রে আর বিয়েটা তো শেষ হলো না।।


রিয়া- আরে দি খাবার দেবে, আর জানো তো আকাশ জিজুরা ব্রাহ্মণ, তাই ওদের মত অনুযায়ী সূর্য সাক্ষী ফেরে আর সিঁদুর দান হবে।।


শ্রেয়া- ওহ ইউ মিন কুসুম ডিঙ্গা?


রিয়া- ইয়েস।।


তারপর আর কি খেয়ে বসে রইলাম, কেও ঘুমাতেও দিচ্ছে না, যদিও এখন প্রায় 3 টে তাও।।


অতএব , সকালে আবার স্নান করে একটা বেনারসি পরলাম, সিঁদুর দানের সময় শশুর বাড়ির শাড়ি পড়তে হয়, তারপর অগ্নি সাক্ষী করে সাত ফেরে হলো আর তারপর সিঁদুর দান।।


সিঁদুর দেওয়াতে পুরো সিঁথি লাল হয়ে গেছে কিছু সিঁদুর নাকে পড়েছে, তাও খুব অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে, কারণ আজ আমি সত্যি কারোর # অর্ধাঙ্গিনী, আজ আমার পদবি , গোত্র সব বদলে গেলো।।


কিছুক্ষণ পর বিদায়ের সময়,,


শ্রেয়া- মাম্মা আমি যাবোনা, মাম্মা আমি তোমার কাছে থাকবো ,মাম্মা।।


পাপা গো তুমিতো তোমার প্রিন্সেস কে ছাড়া থাকতে না, তাহলে আজ কি করে পাঠাচ্ছ?


দাদা এই দাদা প্লিজ আমি যাব না কিছু কার না দাদা


ওখানের সবাই শ্রেয়ার কান্না দেখছে আর তাদের চোখেও জল এসে যাচ্ছে, এমনকি আকাশেরও, যদিও তার অন্য বিষয় ভেবে জল এসেছে,


আকাশ- ( এই মেয়েটা এভাবে কাঁদছে , তাহলে তো আমার অদ্রির যখন বিয়ে হবে তখন আমার ও এরকম কষ্ট হবে)


দাদা- বুনু, দাদা আছে না ,আমরা যাবো তো।।


পাপা- হুম প্রিন্সেস তুমি কাঁদলে তোমার পাপার ভালো লাগবে বলো।।


মাম্মা- মা আমরা যাবো তুইও আসবি তো কাঁদিস না, ইঁদুর মাটি গুলো তোর পাপাকে দে।।


শ্রেয়া- না।।


দাদা- বুনু এটা রিচুয়াল ।।


শ্রেয়া-আমি দেবো না, দিলেই আমাকে চলে যেতে হবে।


মাম্মা- মা দে, এটা তো করতে হবে বল।


শত চেষ্টা করেও শ্রেয়া থাকতে পারলো না, তাকে ইঁদুর মাটি তার পাপার হাতে দিতেই হলো।।


শ্রেয়া-এই রিয়া আমি যাব না।


রিয়া- ভালো থাকিস।।


মাম্মা- শ্রেয়া।।


শ্রেয়া- হুম।।


মাম্মা- আকাশ তোর স্বামী, সাত পাকে বাঁধা পড়েছিস তোরা , আকাশের নামের সিঁদুর পড়েছিস, জীবনে কখনো ওর সাথ ছাড়বি না, ওর যোগ্য অর্ধাঙ্গিনী হবি, আকাশের প্রত্যেকটা সুখে যেমন থাকবি তেমনি প্রত্যেকটা খারাপ সময়েও থাকবি, ওর পরিবারের সবাইকে সম্মান করবি, আকাশের কথা মেনে চলবি, ওর সাথে পুরো জীবন থাকবি, প্রত্যেকটা সময়, থাকবি তো?


শ্রেয়া- থাকবো মা ।।


পাপা- আকাশ।।


আকাশ- হ্যাঁ।।


পাপা- আকাশ আমার মেয়েটাকে দেখো, ও কোনোদিনও আমাদের থেকে দূরে যায়নি, ওর কিছু ভুল হলে ক্ষমা করে দিও।।


আকাশ-আপনি চিন্তা করবেন না, আমি আছি তো।।


পাপা- প্রিন্সেস চলো।।


শ্রেয়া-


আমাকে গাড়িতে বসিয়ে দিল আর যতক্ষণ না , তারা আমার চোখের আড়াল হলো আমি তাদের দেখতে থাকলাম, তারপর চুপচাপ কান্না করছি।।


এদিকে,,,,,,


শ্রেয়া যাবার পর সবাই ভেঙে পড়েছে, শ্রেয়ার পাপা ওখান থেকে শ্রেয়ার রুমে চলে গেলেন, আর সূর্য তো ওখানে ওর মাম্মা র কাছে বসে পড়েছে,


সূর্য- মাম্মা এই প্রথম ,এই প্রথম বুনু আমার কাছে কিছু চাইলো আর আমি দিতে পারলাম না মাম্মা আমি আমার বুনু কে ছাড়া কি করে থাকবো( কাঁদতে কাঁদতে)


মাম্মা- কিছু করার নেই রে বাবা , থাকলে কি আমি আর পাঠাতাম।।


পাপা- প্রিন্সেস আজকের পর থেকে আর কে সব অবদার করবে কাকে আমি বলবো আয় খাইয়ে দি, কি করে থাকবো প্রিন্সেস তোকে ছাড়া , কিছুক্ষণ এর মধ্যে তো ঘরটা খাঁ খাঁ করছে, আমরা কি করে থাকবো?


( "বিদায়" এটা এমন একটা অনুভূতি যেটা বলে বোঝানো সম্ভব নয়, আর আমি সেভাবে ওটা বলতে পারবোও না, আর বিয়ের পর একটা মেয়ের কাছে এটা কি সেটা একটা মেয়েই বলতে পারবে, বিয়েতে একটা ছেলের কিছু ছাড়তে হয় না, কিন্তু একটা মেয়েকে তার পরিবার , মা বাবা ,ঘর, এমনকি নিজের পদবি পর্যন্ত ছেড়ে আসতে হয়, তাকে সব আবার নতুন করে শুরু করতে হয়, যেটা লিখে অন্তত বোঝানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়)


এদিকে,,,,,


যেই বাংলো টাতে আকাশ রা আছে সেখানে আনা হলো শ্রেয়াকে , আকাশ দের ফ্যামিলির কেও তাকে বরন করলো।।


অদ্রি- বৌদিভাই।।


শ্রেয়া- অদ্রি আমার ভালো লাগছে না , বাড়ি যাবো।।


অদ্রি- বাড়ি সেটাতো দেরি আছে , তোমার অষ্টমঙ্গলার পর আমরা বাড়ি যাবো, ততদিন ক্যালিফোর্নিয়া তেই থাকো ( আমি একটু মজা করে বললাম যাতে বৌদিভাই এর কিছুটা হলেও মন খারাপ কম হয়)।।


শ্রেয়া- না অদ্রি আমি তোমাদের বাড়ির কথা বলছি না আমাকে একবার আমার বাড়িতে নিয়ে চলো।।


অদ্রি-আমি তোমার কষ্ট বুঝতে পারছি কিন্তু ,,,,, অষ্টমঙ্গলার দিন যাবে তো আর আমাদের বাড়ি কেন বলছো ওটা এখন থেকে তোমারও বাড়ি।।


শ্রেয়া- হুমম।।


এভাবেই দুটোদিন পেরিয়ে গেলো, আজ বৌভাত কিন্তু সেই পার্টিটা ইন্ডিয়া তে হবে , কিন্তু রিচুয়াল গুলো এখানেই হচ্ছে।।


রাত 10 টা,,


শ্রেয়া- অদ্রি আমাকে একটা রুমে নিয়ে গেল।।


অদ্রি-বৌদিভাই।।


শ্রেয়া- হুম।।


অদ্রি- Best Of Luck ফুলশয্যার জন্য আর বাড়ি গিয়ে নয়তো আরো একবার আয়োজন হবে।


অদ্রি- ঠিক আছে তুমি বসো।( আমি চলে এলাম)


শ্রেয়া- বাহ রুম টা ভালো সাজিয়েছে তো গোলাপ রজনীগন্ধা মিক্স , কিন্তু মাম্মা পাপা দাদার জন্য মন খারাপ করছে।।


চলবে


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama