Ankita Chatterjee

Romance

4.0  

Ankita Chatterjee

Romance

অর্ধাঙ্গিনী পার্ট- 2

অর্ধাঙ্গিনী পার্ট- 2

4 mins
312



আমিও স্নান করে পুজো করলাম, রেগুলার পুজো করার অভ্যাস আমার নেই, কিন্তু ইন্ডিয়াতে আমাকে রেগুলার পুজো করতে হবে।।


মাম্মা- কি রে কী ভাবছিস?


শ্রেয়া- না,কিছুনা।।


মাম্মা- বুঝতে পারছি রে , জানিস আমিও আমার বাবার বাড়ি ছেড়ে এসেছিলাম, এই মুহূর্তে তুই যে কষ্ট টা পাচ্ছিস সেটা আমিও পেয়েছিলাম,কিন্তু কী করবি বল এটাই এই পৃথিবীর নিয়ম , প্রত্যেকটা দেশে প্রত্যেকটা জায়গায় এমনকি প্রত্যেকটা ধর্মেও মেয়েরাই বিয়ের পর তার বাড়ি ছেড়ে যায়।।


শ্রেয়া- মাম্মা আমাকে এখানে বিয়ে দিলে কি হতো বলো না,বলো না মাম্মা?( কেঁদে দিয়ে)


মাম্মা- এই দেখো কাঁদছিস কেনো?


শ্রেয়া-তুমিও তো কাঁদছো?


মাম্মা- জানিস শ্রেয়া, সবার বাড়িতে মেয়ে জন্মায় না, একমাত্র যারা খুব ভাগ্য করে তাদের বাড়িতেই মেয়ে হয়, আরে মেয়ে হাওয়াতো খুব ভাগ্যের ব্যাপার, মা লক্ষীর রূপ হয়ে মেয়েরা জন্মায়, কিন্তু তাদেরকে তো রাখা যায়না বল,তারা তো অন্যের বাড়ির লক্ষ্মী হয়,তুই হওয়ার পর তোর পাপা আমার থেকে বেশি খুশি ছিলেন আর......


শ্রেয়া- ( মাম্মা কে জড়িয়ে ধরে) মাম্মা আমি যাব না মাম্মা ,রেখে দাও না,মাম্মা আমি জীবনেও তোমাদের থেকে দূরে থাকিনি তাহলে আমি তোমাদের থেকে অতদুরে কী করে থাকবো, আমি পারবো না, আমি যাবো না।


পাপা- কী হলো আমার প্রিন্সেসের?


শ্রেয়া- পাপা ( জড়িয়ে ধরে) পাপা তুমি না থাকলে আমাকে প্রিন্সেস কে ডাকবে, পাপা প্লিজ আমাকে পাঠাও না আমি যাবো না ,পাপা আমি তোমাদের ছাড়া ওতো দূরে থাকতে পারবো না ।


মাম্মা- শ্রেয়া কিছু কথা বলি?


শ্রেয়া- হুমম।।


মাম্মা- মা তুই কারো বাড়ির বৌমা হতে যাচ্ছিস,কারো বৌদি আর সবথেকে ইম্পরট্যান্ট তুই একজনের  # অর্ধাঙ্গিনী মানে বেটার হাফ হতে যাচ্ছিস, বিয়ের পর থেকে তোর সাথে তার জীবন বাঁধা পড়বে শুধু এই জন্মের জন্যই নয় সাত জন্মের জন্য।। তার সম্মান তোর হবে ঠিক তেমনি তোর সন্মান তার হবে সবকিছুই তোদের দুজনের একে অপরের সাথে জুড়ে যাবে, তাদের সন্মান করবি, তুই আরেকটা পরিবার পাবি, এটা ঠিক তুই আর তোর পাপার # প্রিন্সেস থাকবি না , কিন্তু তুই কারোর মনের # রানী হতে পারবি তার হার্টের # কুইন , দেখবি আকাশও তোকে খুব ভালোবাসবে, তোর চোখের জল যেমন আমরা সহ্য করতে পারিনা, দেখবি সেও করতে পারবে না।। আমার বিশ্বাস আমাদের মেয়ে আকাশের যোগ্য # অর্ধাঙ্গিনী হবে , কী হবি না?


শ্রেয়া- হবো মাম্মা।।


পাপা- এই তো আমার প্রিন্সেস বড়ো হয়ে গেছে, শোন তুই একদম চিন্তা করবি না, আমরা ইন্ডিয়া তে যাওয়ার ব্যবস্থা করবো আর তুই তো আসবি তাই না।।


শ্রেয়া- হুমম।।


পাপা-আমার কাজ আছে আমি যাচ্ছি, 5টা বাজতে চললো, তুই দই চিড়ে খেয়ে নে।।


শ্রেয়া- হুমম।। ( আমি জানি পাপা এখন কাঁদবে তাই চলে গেল আর দাদা তো এদিকে আসবেই না, ওও কাঁদবে জানি)


মাম্মা- নে দই চিড়ে টা খেয়ে নে।।


শ্রেয়া- ওমা দই চিড়ে খাবো না।।


মাম্মা- সারাদিন আর কিছু খেতে পাবি না।।


শ্রেয়া-কোনো অসুবিধা নেই তাও এটা খাবো না।।


মাম্মা কিছু বলবে তার আগেই,


সূর্য- আর আমি যদি বলি বুনু কে নিজের হাতে খাওয়াবো, তাহলেও কি বুনু খাবে না।।


শ্রেয়া- খাবো তো খাবো।।


( দাদা খাইয়ে দিচ্ছে, দাদার চোখ পুরো ফুলে আছে বোঝাই যাচ্ছে যে কান্না করেছে, আর কবে এরকম ভাবে খাওয়াবে জানি না, ভেবেই চোখে জল চলে এলো।।)


সূর্য- বুনু কি হয়েছে?


শ্রেয়া- দাদা ( গলা ধরে আসছে) আমি থাকতে পারবো না তোদের ছাড়া।।


সূর্য- কিছুদিন পরে আবার আসবি তো বুঝলি,আচ্ছা মাম্মা খাইয়ে দিলাম আমার কাজ আছে আমি আসছি( আর কিছুক্ষন থাকলে আমি কী বুনুর চোখের জল মোছাব আমিই হয়তো কাঁদবো)


মাম্মা- আচ্ছা।।( আমি বুঝিরে সবার অবস্থা বুঝি আমার নিজের ও ভালো লাগছে না কিন্তু এটাই নিয়ম)


শ্রেয়া- মাম্মা।


মাম্মা- মা তুই রিয়ার সাথে বসে থাক , আজ অনেক কাজ আছে তো ।।


শ্রেয়া- মাম্মা লগ্ন কয়টাই?


মাম্মা- রাত 12 টা 28 মিনিট এ।।


শ্রেয়া- মাম্মা তাহলে এখন তো অনেক সময় 12 ঘন্টারও বেশি তাহলে,


মাম্মা- মা তুই যা আমি আসব পরে।।


শ্রেয়া- হুম আমি জানি তো আর আসবেনা ( বলে চলে এলাম রুমে) , ভালো লাগছে না সব ছেড়ে যেতে হবে, আর যেখানে যাবো সেখানে জীবনেও যায়নি।।


রিয়া- এতো টেনশন নিস না একেই তো সারাদিন উপোস তার ওপর টেনশন নিলে ফেরের সময় দেখবি সেন্সলেস হয়ে যাবি।।


শ্রেয়া-হুহ।।


এদিকে,,,,,,,,


(গল্পের নায়ক আকাশ চ্যাটার্জী, বিশিষ্ট বিজনেসম্যান শেখর চ্যাটার্জী র ছেলে, তবে আকাশ নিজে আলাদা বিজনেস খুলে নিজের প্রচেষ্টায় ইন্ডিয়ায় টপ বিজনেস টাইকুন দের লিস্টে আছে, "চ্যাটার্জী ফ্যাশন হাউস" এটা আকাশের নিজস্ব, আকাশ চ্যাটার্জী দেখতে খুব হ্যান্ডসাম আর গায়ের রং অনেক ফর্সা , ইউসুয়ালি এত ফর্সা দেখা যায় না, আর চোখের মনির রং গাঢ় নীল আর হালকা নীলের সংমিশ্রণ, কোনো রকম নেশা করেনা, তবে আকাশ চ্যাটার্জীর কোনো প্রকার সম্পর্কে বিশ্বাসী নয়, তাতে সেটা যে কোনো ই সম্পর্ক হোক না কেন, ব্যতিক্রম ভাই বোন।। কারণ সে তার ছোট বোন অদ্রিজা চ্যাটার্জী কে খুব ভালোবাসে আর তারই কথা রাখতে বিয়েটা করছে, বাকি সব গল্পে জানবেন।।)


অদ্রি( আকাশ এই নামেই ডাকে) - দাভাই দই চিড়ে টা খেয়ে নে না প্লিজ।।


আকাশ- অদ্রি তোর কথা রাখতে বিয়ে করছি, এটা এনাফ নয়।।


অদ্রি- প্লিজ।।


আকাশ- না।।


বাবা( আকাশ অদ্রির বাবা) - আকাশ খেয়ে নাও, এতবার যখন বলছে।।


আকাশ- মি:চ্যাটার্জী আপনাকে কে আমাদের ভাইবোনের কথার মাঝে বলতে বলেছে।।


বাবা- আকাশ!


আকাশ- প্লিজ লিভ।।


অদ্রি- দাভাই


আকাশ- অদ্রি এটা বলিস না যে এভাবে বলা ঠিক হয়নি।।


অদ্রি- আচ্ছা তুই দই চিড়ে খা নয়তো সারাদিন আমি কিছু খাবো না বলেদিলাম।।


আকাশ- অদ্রি?


অদ্রি- দাভাই এটা রিচুয়াল।।


আকাশ- আচ্ছা দে( আমি তো তোর জন্য সব করতে পারি, তাহলে এটা তো কিছুই না)


সারাদিন এভাবেই সবার পেরিয়ে গেলো।।


শ্রেয়া- (আজ আমাকে একটা লাল লেহেঙ্গা পরানো হয়েছে কারণ আমার লেহেঙ্গায় পরার ইচ্ছে ছিলো, আর মাথা থেকে কোমর পর্যন্ত সব সোনার গহনা, মাথার মুকুট টাও সোনার আর কোমরের কোমর বন্ধনীটাও, শুধু নুপুর গুলোই রুপোর, কারণ একমাত্র ভগবানরায় সোনার নুপুর পড়েন, মানুষরা রুপোর নুপুর পরে ,তাই আমিও রুপোর নুপুর পড়েছি, আর চুলটা খোঁপা করে ফুলের মালা দেওয়া আর গাঢ় কাজল, লাল লিপস্টিক আরো অনেক মেকাপ, )


আরো প্রায় এক ঘন্টা বাদে আমাকে মণ্ডপে নিয়ে যাওয়া হলো।।


শুভদৃষ্টির সময় পানপাতা সরিয়ে দেখলাম যা দেখলাম আমি তো রীতিমতো অবাক।।


চলবে,,,,,,,,,,



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance