অফিস ঘর
অফিস ঘর
রক্তখোচিত ছুরি দিয়ে গড়িয়ে পড়া একফোঁটা রক্ত বিড়ালটার কপালে পড়তেই, 'মিউ' করে চিৎকার করে উঠলো। ফাঁকা প্লাটফর্মে প্রতিধ্বনিত আওয়াজ, তার কিছুক্ষন পরেই ছুটে পালাতে গিয়েই চার পেয়ে জন্তুটার ঘাড় ধরে তুলে নিলো একটা শক্ত মুষ্টি। পরমুহূর্তেই প্ল্যাটফর্মের মেঝেতে বিড়ালটার কাটা মুন্ডু গড়াগড়ি খেতে লাগলো। জনশূন্য প্ল্যাটফর্মটার একপাশে অনেকটা রক্ত পরে আছে। একহাতে ছুরি আর অন্য হাতে টাকা ভর্তি ব্রিফটা নিয়ে প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরিয়ে যেতে দেখছে দুজোড়া চোখ। চোখের কোল বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। কিন্তু তার কিছুই করার ক্ষমতা নেই। অসহায় ভাবে দেখতে-দেখতে একসময় চোখের তারা দুটো স্থির হয়ে গেল।
পরদিন সকালে লিফ্টের দরজা খুলে বেরোতেই, অফিসে বলাইকে দেখে সজলের চোখ কপালে। তাড়াতাড়ি বলাইয়ের সিটের সামনে এসে টেবিলের ওপর ব্যাগটা রেখে ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেসা করলো, "আজকে, কিন্তু তোর তো একসপ্তাহ পরে আবার জয়েন করার কথা ছিল তাইনা"। সজলের কোথায় বলাই চোখ তুলে তার দিকে তাকিয়ে বললো, "আসলে ওদিকের কাজ এত সহজেই মিটে যাবে বুঝতে পারিনি, তাই ছুটিটা বেশি নিয়ে ফেলেছিলাম"। "ও, তো তোর পিসি এখন কেমন আছেন"। সজলের প্রশ্নের জবাবে বলাই বললো, "এখন আমার কাছেই আছেন, উনি এখন থেকে আমার সাথেই থাকবেন"। আরো দুটো-একটা গল্পঃ করে সজল নিজের টেবিলে চলে গেলো।
দুপুরে অফিসের ক্যান্টিন থেকে কসা আলুর্দমের গন্ধ পেটের খিদেটাকে যেনো দ্বিগুণ করে দিয়েছে। পাঁচটার মধ্যে আজ একটা চেয়ার ফাঁকা। সোমিক হালদার একটুকরো লুচি আলুরদমের তরকারিতে ভিজিয়ে মুখে পুরে প্রশ্ন করলো, "কি ব্যাপার আজ বলাই বেপাত্তা কেনো, আমরা সবাই এখানে, ওর এত ঘাড় গুজে কাজ করার কি হইছে"। বাবলু রায় মুখে রাজ্যের চিন্তা জড়ো করে বললো, "ধরে নাও হয়তো সামনেই ওর প্রমোশন, তাই বড়ো সাহেবের মন পাওয়ার চেষ্টা করছে"। সাহেব বললো, "ওসব বড়ো সাহেব, ছোটো সাহেব জানিনা, তবে সাহেব বলতে সাহেব সামন্তকেই চিনি"। কৌতুক যুক্ত কথা নয়, তবুও এই কথাতেই নিজেদের মধ্যে তারা হাস্যরস পেয়ে গেলো। ততক্ষনে কথোপকথনের বিষয় অন্য দিকে ঘুরে গেছে। বলাইয়ের বিষয় কারোর কোনো খেয়ালই আর নেই।
কিছুক্ষনের মধ্যেই যে যার নিজের চেয়ারে কাজে বসে গেলো। সজল মাঝে-মাঝে মুখ তুলে ঘাড় গুঁজে কাজপ্রেমি বলাইকে দেখছিল বটে, কিন্তু অন্যরা সেটাও করছিল না। বাবলু আর সোমিক হালদার মুখোমুখি কম্পিউটারের সামনে বসে। মাঝে-মাঝে বলাইয়ের কাছে যাবে কিনা এই নিয়েই নিজেদের মধ্যে ফিসফিস করছে।
ওয়ার্কিং হওয়ার্স শেষে যখন অফিসের লিফ্ট গুলো স্টাফেদের সার্ভিস দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো, তখন বলাইয়ের টেবিলে রাখা কিবোর্ডটা একটু সরিয়ে সোমিক সেখানে বসে পরে বললো, "যা দেখছি ভাই এরপর তুমি পাগল হয়ে যাবে। আর তোমার এতো কাজপ্রেম দেখে, তোমার ঐ বান্ধবীটিও তোমায় ছেড়ে পালাবে"। মুখে একটা ম্লান হাসি এনে বলাই বললো, "ওর আর দোষ কি, ও তো জানেইনা যে আমি ওকে ছেড়ে দিতে বাধ্য"। বাবলু রায় হাত নেরে বললো, "ধরে নিলাম তোমাদের মন কষাকষি হইছে, তাই বলে একেবারে ব্রেকআপ করার কি হইছে, ঝগড়া হইছে, নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নাও"। "এ আর কোনোদিনই মিটবে না, তবে আমাদের ব্রেকআপও হয়নি বুঝলে। যাই হোক এবার ওঠা যাক"। ওদের উঠতে দেখে সজলও এগিয়ে গেলো। একসাথে লিফ্টে না উঠে প্রতিদিনের মতো তিন-দুয়ে ভাগ হয়ে গেল তারা, কারণ লিফ্টে চারজনের বেশি ওঠা যায়না। অতএব দু-দলে ভাগ হওয়াই শ্রেয়। সহেবকে আস্তে দেখে বলাই বললো, "তোমরা নামো, আমি আসছি" বলেই সিড়ির দিকে ছুটে চলে গেলো।
অগত্যা চারজনে লিফ্টে উঠে পড়ল। গ্রাউন্ড ফ্লোরের বোতামটা টিপে গ্রিল টেনে দিতেই ঘড়ঘড় শব্দ করে পুরনো লিফ্টও চালু হয়ে গেলো। কিন্তু লিফ্টের দরজা খুলতেই অফিসের কারেন্ট অফ হয়ে গেলো। এমন সময় তাদের মনে হলো তারা যেনো ভুল ফ্লোরে নেমেছে, এটা গ্রাউন্ড ফ্লোর হতেই পারে না। এত দিন চাকরি করে এইটুকু বোঝা অসম্ভব কিছুই নয়। সোমিক লিফ্টের দিকে যেতে গেলো, তখনই সাহেব বলে উঠলো, "পাগল না ক্ষেপা, দেখতে পাচ্ছো না লোডশেডিং হয়ে গেছে, লিফ্ট চলবে কীকরে"। সাহেবের কথায় সোমিকের হুশ ফিরলো বটে, কিন্তু লিফ্টের দিকে ফিরেও সে প্রশ্ন করলো, "সজল তুমি কোন বোতামটা টিপেছিলে লিফ্টে উঠে?" সজল গোড়াই তার দিকে ফিরে বললো, "আমি নিজেও অবাক হয়ে গেছি, টিপলাম 'জি' কিন্তু লিফ্ট এসে থামলো সেকেন্ড ফ্লোরে, এটা যে কিভাবে হলো"। বাবলু রায় বেশ গোয়েন্দা কণ্ঠে বলে উঠলো, "ধরে নিলাম তুমি জানো তুমি 'জি' টিপেছো, কিন্তু তোমার দৃষ্টি তখন অন্য দিকে থাকায় 'টু' তে হাত পড়ে গেছে"। "কিন্তু এটা কেমন করে হতে পারে, আমি তো দেখেই 'জি' টিপলাম, আর তাছাড়া বলাই কোথায়, ও কখন আসবে, এই অন্ধকারে বেচারা বোধহয় বিভ্রান্ত হয়ে গেছে"। সজলের কথা শেষ হতেই সাহেব সামন্ত বেশ জোর গলায় বলে উঠলো, "কি অবল-তাবোল বোকছো তোমরা, আর বলাই কথা থেকে আসবে সজল, সে তো আজ অফিসেই আসেনি, আর কোনোদিন আসবেও না"। "সেকি, ছেলেটাকে আমরা আজ সারাদিন ঘাড় গুজে কিবোর্ডে হাত সঞ্চালিত করতে দেখলাম, আর তুমি বলছো......"। সজলের কথা তার মুখেই থাকলো, সাহেব বিরক্তি কণ্ঠে বলল, "আহ, ভালো লাগেনা ধুর ছাই কি পেট বানানো গল্পঃ করছো সজল"। সোমিক হালদার আবার মুখ খুললো। "তুমি কি বলতে চাও সামন্ত মহাশয়, একটা জলজ্যান্ত ছেলে আমাদের সামনে সারাদিন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কাজ করলো আর তুমি তাকে বিলক্ষণ আবসেন্ট মার্ক করে দিলে। তবে সে যে আর আসবে না অফিসে এটা তোমার কেনো মনে হলো"। সাহেব মনেমনে ভাবলো, উত্তেজনার বশে বলাইয়ের অফিসে আর কোনোদিন না আসার কথাটা তার মুখ দিয়ে ভুল করে বেরিয়ে গেছে। আরো যাতে কিছু কথা না বেরোয়ে, তাই সে মুহূর্ত সাভাবিক করতে বললো, "কি হইছে তোমাদের বলো তো, আজ কি কেউ বাড়ি যাবেনা নাকি, লিফ্ট গেছে তো কি হয়েছে সিড়ি দিয়েই যাওয়া যাক" বলে সে নিজেই সিড়ির দিকে এগিয়ে গেলো। কিন্তু এগোতে চাইলেই এগোনো যায়না। সিড়ির নীচ থেকে আচমকা বিড়ালের ডাকে সকলের গায়ের রোম দাঁড়িয়ে গেলো। কিছু বোঝার আগেই অন্ধকার অফিসের দেওয়ালে একটুকরো চাঁদের আলোয় তারা দেখতে পেলো অতিকায় এক বিড়ালের ছায়া। পরমুহূর্তেই তারা এক বিভীষিকাময় দৃশ্যের সাক্ষী হলো। সাহেব সামন্তের ডানহাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে বড়সড় একটা বিড়াল, আর বা-হাতটা ধরে রেখেছে একটা মানুষ মূর্তি। ঘেস্টাতে-ঘেষ্টাতে নিয়ে যাওয়ার সময় সাহেবের চিৎকারে গোটা অফিস কেপে উঠছে। এই ভয়াবহ দৃশ্যের আকর্শিকতায়ে বাবলু রায়ের অজ্ঞান দেহটা মেঝেতে পড়ে গেলো। মিনিটখানেকের মধ্যেই হলের অপর প্রান্ত থেকে বলাই দে তাদের এসে দাড়ালো। সজল আর সোমিকের ঘর্ম মুখমণ্ডলি দেখে, মুখে হালকা হাসি টেনে এনে বললো, "মনে হয় ডিটেকটিভ রায় এবার ইস্তফা দেবেন"। সজল কাপা কণ্ঠে বললো, "সাহেবকে ওই বিড়ালটা......"। ওর অর্ধেক কথা শুনেই বলাই বললো, "নিরীহ অবলা প্রাণীটাকে বিনা দোষে প্রাণ হারাতে হইছিলো, বদলা তো তাকে নিতেই হতো। ওরা নিজেদের কথা মুখে প্রকাশ করতে পারেনা বলে কি ওদের প্রাণের কোনো দাম নেই তোমরাই হলো"। সোমিক বললো, "কিন্তু বলাই, ভাই ওই লোকটা, ওই লোকটা কে ছিল, আর তাছাড়া একটা বিড়াল সাহেবের থেকে কি বদলা নেবে। আমার তো মাথা কাজ করছে না"। বলাইর হতে একটা জল ভর্তি বোতল ছিল। সেটার ঢাকনা খুলে বাবলুর চোখেমুখে জল ছেটাতেই তার জ্ঞান ফিরে এলো। সে ধড়মড়িয়ে উঠে বসতেই বলাই বললো, "তোমরা তো জানো আমার পিসিমার খুব শরীর খারাপ ছিল, তাই নিঃসন্তান,মাতৃষ্টানিও মানুষটিকে হাসপাতালে ভর্তি করার জন্যে আমি কাল দশলোক্ষ টাকা নিয়ে আরামবাগ যাওয়ার জন্যে ট্রেনে উঠতে গিয়েছিলাম। ধূধূ প্লাটফর্মে আমার এক পা ছিল, আর অপর পা সবে ট্রেনের শেষ সিড়িতে রেখেছিলাম। তখনই অনুভব করলাম কোমরে ব্যাথা। বুঝতে পারলাম শরীরে কোনো ধারালো অস্ত্র ঢুকেছে। অবশ্য অস্ত্রটি বেরোলো, কিন্তু পরপরই আরো দুবার অস্ত্রটি ঢুকলো,বেরোলো। মুখ দিয়ে অস্ফুটে 'আহ' শব্দটি বেরোতেই হাত আলগা হয়ে দশলক্ষ টাকার ব্রিফটা প্লাটফর্মে পরে গেলো। ব্রিফটা তুলবো ভেবে পিছনে ফিরতেই কালো হুডের ভিতরে মুখটা দেখতে পেলাম। মুখ দিয়ে সাহেবের নামটা বেরোতেই হুড খুলে ছোড়াটা বসিয়ে দিলো আমার হৃৎপিন্ডে। একহাতে বুক চেপে ধরে ওপর হতে ওর কলার ধরলাম। কিন্তু আমার তখন ওকে দছেপে ধরার শক্তি নেই। তবুও জিজ্ঞেস করলাম সে কেনো এমন কাজ করলো আমার সাথে, আমি তো তার কোনো ক্ষতি করিনি। উত্তরে সাহেব অট্টহাসিতে ফেটে পড়েছিল। প্ল্যাটফর্ম ছাড়িয়ে দুরদিগন্তে ছুটে যাওয়া ট্রেনটার দিকে আঙুল দেখিয়ে বলেছিল, বুড়ি আজ বাদে কাল এমনই টেশে যাবে, তার জন্যে এত টাকা নষ্ট করে কি হবে। তার চেয়ে বরং তুইও তোর পিসিমার কাছেই যা, আর আমি আরেকটু বড়লোক হয়েনি, তারপর তোর দীপ্তিও আমারই হবে। থ্রি-বি-এইচ-কেটার ফার্স্ট ইনস্টলমেন্টটা পেমেন্ট করেই ওর বাবাকে গিয়ে বলবো, অহঙ্কারী বুড়ো তখন আর আমায় না করতে পারবে না। এমনিতেও আমার ভাড়ার ঘর দেখে যা নয় তাই শুনিয়েছিল, কিন্তু এবার আর সেটা হবে না। কথাগুলো বলেই আমায় এক ধাক্কা মারলো সাহেব, আর সাথে-সাথেই আমি ছিটকে পড়লাম। আমার শরীরটা প্লাটফর্মে এলিয়ে গেলেও, গলা থেকে অবিচ্ছিন্ন মাথাটা ঝুলে রইলো রেলওয়ের উপর। তারপর জোর এক হেছকা টানে আমার রক্তাক্ত বুকে বিধে থাকা ছোরাটা তুলে নিলো। ফিনকি দিয়ে রক্তের ধারা বয়ে যেতে লাগলো। ঠিক তখনই জোর একটা মিউ চিৎকার শুনলাম। পরক্ষনেই দেখলাম সাহেবের শক্ত হতের মুঠোয় একটি বিড়ালের কারারুদ্ধ অবস্থা। আর তারপরই অবলা প্রাণীটার ধর থেকে বিচ্ছিন্ন দেহটা প্লাটফর্মে পড়লো। সাহেব পিছন ফিরে চলে যাওয়ার আগে প্রাণীটার রক্তাক্ত মুন্ডুটা আমার বুকের উপর ছুড়ে দিল। বিশ্বাসঘাকতায় আর যন্ত্রণার আমার চোখের কোল বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছিল। কিন্তু শেষ নিশ্বাসটুকু বেরিয়ে যাওয়ার আগে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ওকে ওর প্রাপ্য শাস্তি দেবই। সকালে তাড়াতাড়ি ট্রেন ধরা আর অফিসে আসার তারায় তোমরা খবরের কাজোগ পড়তে সময় পাওনা বা নিউজ দেখতেও সময় পাওনা, নইলে নিউজপেপারের হেডলাইনে আজ পড়তে 'রক্তগঙ্গা শরীর নিয়ে মৃত যুবকের বুকের উপর বিচ্ছিন্ন শরীরের বিড়ালের কাটা মুন্ডু'। তবে চাকরির জন্যে পিসিমার কাছে অনেকদিন যাওয়া হয়নি, ছুটিছাটাও তেমন পেতাম না, কিন্তু এখন থেকে আর ওসবের ঝামেলা নেই, পিসি-ভাইপতে এখন থেকে একসাথেই থাকবো"।
বলাইয়ের শেষ কথার পরেই আলো জলে উঠলো। সকলকে লিফ্টের দিকে যেতে দেখেই সোমিক ওর হাত টেনে ধরলো আর তিনজনে দুর্দম সিড়ি দিয়ে ছুটতে থাকলো। অফিসের মেন গেটের বাইরে উন্মুক্ত আকাশের নিচে দাড়িয়ে বড়ো করে নিশ্বাস নিতে লাগলো তারা।
সোমবার অফিস ঝাট দিতে এসে বমনউদগ্রিব গন্ধ পেয়ে দারোয়ানদের ডেকে আনে। তারপর তিনতলার স্টোররুম ডোরটা খুলতেই দুদিনের পচনধরা ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহটা দেখে এই ঝলমলে সকালে তাদের কপালে ঘামের রেখা ফুটে উঠলো। পরে পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছিল সাহেব সামন্ত কোনো হিংস্র জন্তুর শিকার হয়েছিল। জন্টুটার নখের আঁচড় লাশটার সর্বাঙ্গে অঙ্কিত হয়ে রয়েছে। গলাটা ধর আর মস্তককে আলাদা না করলেও, আড়াআড়ি ধাড়ালো অস্ত্রের দাগ রয়েছে সেখানে। আর হৃৎপিণ্ডের জায়গাটা শূণ্য, দেখে মনে হচ্ছে হারালো অস্ত্র দিয়ে অতি যত্নে হৃৎপিণ্ডটি কেটে নেওয়া হয়েছে।