আমি সাগরের বেলা 5
আমি সাগরের বেলা 5


“উঠুন!” এবার কড়া স্বরে, তাঁর গালে একটা হাল্কা থাপ্পড় মেরে বললাম আমি। আঘাতে কাজ হোল কিছুটা।
“অ্যাঁ... অ্যাঁ...” শব্দের অস্ফুট স্বর থেকে বুঝলাম, যে সম্বিৎ ফিরছে। আমি তাঁর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে এবার একটু নরম গলায় জিগ্যেস করলাম, “ঠিক আছেন...? উঠতে পারবেন...?”
লোকটা অত্যন্ত ভ্রুকুঞ্চিত করে, চোখ না খুলেই মাথায় হাত দিয়ে উঠে বসলেন।
“আপনি কি আমায় পুলিশে দেবেন...?” ভারি গলায় প্রশ্ন এলো।
“হ্যাঁ, কতকটা সেরকমই ইচ্ছে করছিল বটে। কোন হোটেলে উঠেছেন আপনি?”
আমার দিকে না তাকিয়েই মাথা নেড়ে বলল ভদ্রলোক, “চেক আউট করেছি আজ সকালেই।“
“সেকি! আপনার লাগেজ?”
ভদ্রলোক উত্তর দিলেন না। অপলক দৃষ্টে তাকিয়ে রইলেন সমুদ্রের দিকে। বুঝলাম বেপারটা স্রেফ বেপরোয়া, দায়িতগ্যানহিনতা না... অন্য।
“এবার...?” আমি জিগ্যেস করলাম, “সন্ধ্যে হয়ে এসেছে, কোথায় যাবেন...?”
করুণ দৃষ্টিতে আমাড় দিকে তাকালেন ভদ্রলোক, “আপনি আমায় কেন বের করে আনলেন? নিজের সাথে কতটা লড়াইয়ের পর মানুষ এরকম একটা সিদ্ধান্তে আসতে পারে, আপনি কি তা জানেন? তাকে আবার সেই মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে বাধ্য করলেন আপনি?”
আমি বেশ বুঝলাম ভদ্রলোক কেঁপে কেঁপে উঠছেন কথাগুলো বলতে গিয়ে। উত্তেজনা থেকে না ঠাণ্ডা থেকে, সেটা হলপ করে বলা কঠিন। বেপারটা ভুল কোনও দিকে এগোতে পারে, বেশ বুঝতে পারছিলাম। অন্ধকারও নেমে এসেছে, এবার হোটেলে ফেরাটাও প্রয়োজন।
“আমি ঐ হোটেলটায় উঠেছি,” আঙ্গুল দিয়ে দেখালাম, “আপনি সম্পূর্ণ ভিজে গেছেন, জামা কাপড় গুলো বদলে একটু জিরিয়ে নেবেন নয়... যাবেন?”
লোকটার আক্রমনত্তক ভাবটা কেটে গিয়ে একটা অসহায়তা আর চরম বেদনার ভাব দেখা দিলো মুখে।
“আসুন, আসুন।“ আমি হাত ধরে উঠতে সাহায্য করলাম ভদ্রলোকে। উনি কোনোরকম প্রতিবাদ করলেন না। বাধ্য ছেলের মত উঠে দাঁড়ালেন। আমি তাঁর হাত ধরে আসতে আসতে হোটেলের দিকে এগোতে সুরু করলাম।
END OF PART 1