আমি সাগরের বেলা 10
আমি সাগরের বেলা 10
“কি দরকার সম? আমি কি তোমায় ভালবাসি সেটা যথেষ্ট নয়? আবার আলাদা একটা নাম দিয়ে এটাকে প্রমান করতে হবে?” নিনির অপ্রতিভ উত্তর আমার মনে রাগের সঞ্চার করে।
“এক বছরের বেশি হয়ে গেলো আমরা এরকম ঘনিষ্ট ভাবে কথা বার্তা বলছি, একটা সম্পর্কে যেতে তোমার সমস্যা কোথায়?”
“সম্পর্ক একটা বাঁধন। আমাদের এই সুন্দর সম্পর্ক যেটা অলরেডি আছেই, সেটা তোমার ভালো লাগছে না এখন আর?”
“না। আমার একটা নাম চাই সম্পর্কটার।“
উত্তর এলো না অপর দিক থেকে। নিনি তখন কটকে র আমি কলকাতায়। মনে হয়েছিল কথাবার্তা কয়েকদিন বন্ধ থাকবে, আস্তে আস্তে মাথা থেকে বেরিয়ে যাবে বেপারটা। কিন্তু ইংরেজিতে ওই যে প্রবাদটা আছে যা বলে মানুষ ভাবে এক, ঈশ্বর ঘটান আরেক... সেটা যে কত অংশে সত্য, তার প্রমান এক মাসের মধ্যেই পেলাম। আমার খাওয়া দাওয়া, ঘুম। কলেজ সব মাথায় উঠল। সকালে উঠে মোবাইলে যখন হাতটা যেত, তার মেসেজ দেখতে না পেয়ে যেন আবার ঘুমে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করত। সারা দিনটা জেগে কাটানোটা একটা দুর্বিষহ যন্ত্রণা মনে হত। কতবার তাকে মনে মনে কটাক্ষ করেছি, কতবার হাত উদ্যত হয়েছে তাকে ফোন করার জন্য, কিন্তু কোনওক্রমে নিজেকে বিরত করেছিলাম।
অবশেষে হার মানলাম। যোগাযোগ পুনরায় স্থাপিত হোল, আমারই উদ্যোগে।
“এত দিনে মনে পড়ল আমায়?” নির্বিকার গলায় এলো কথাটা। আমার মধ্যে যে উথালপাতাল চলেছে এত দিন, তার যেন কোনও চিহ্নই পেলাম না তার গলায়।
“তুমিও তো করতে পারতে।“ আমি ঠাণ্ডা ভাবেই বললাম।
“হুম... পারতাম বটে। কিন্তু তোমার যখন একটু সময় দরকার ছিল, আমার মনে হোল সেটা দেওয়াই ভালো। তারপরও যদি তুমি যোগাযোগ কর, বুঝব সত্যই আমায় ছাড়া থাকতে পার না।“
“তুমি আমার পরিক্ষা নিচ্ছিলে?”
“দিচ্ছিলাম সমন্বয়। আমি দিচ্ছিলাম পরিক্ষা তোমার কাছে।“
প্রত্যেকটা কথার মধ্যে হেঁয়ালি আমার অসঝ্য লাগতো। কিন্তু উপায় ছিল না সঝ্য না করে। মানুষ অভ্যাসের দাস। আপস হোল। কোনও রকম বাড়তি চাহিদা বা বাঝ্যিক আড়ম্বর ছাড়াই চলবে আমাদের সম্পর্ক। যেমন চলছিল।
END OF PART 2