উঁকি
উঁকি


জানিনা কেন আজ হঠাৎ তুমি
আমার স্মৃতির মণিকোঠায় মারলে উঁকি!
কত কথা পড়ল মনে।
জানিনা কি ছিল সেই উঁকিতে!!-
ধীর পায়ে এগিয়ে গেলাম তোমার দিকে।
চলতে চলতে পৌঁছেও গেলাম।
চমক ভাঙল ফাটকে প্রহরীর কথায়।
বললে আমার নাকি প্রবেশাধিকার নেই।
পরিচয় পত্র হবে দেখাতে।
অবাক হলাম।
বারো বছর-বারো বছর কাটিয়েছি তোমার কোলে-
শৈশব থেকে কৈশোর।
সেই আমার প্রবেশাধিকার নেই!!
হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম-
সেখান থেকেই দেখলাম তোমায়।
অনেক বদলে গেছ তুমি-হয়েছে অনেক পরিবর্তন -
কিছু গেছে নষ্ট হয়ে কিছু বা নতুন সংযোজন।
সেই কদম তলা-ছাতিম গাছ-
যার নীচে কখনো করেছি ক্লাশ।
তোমরা আছো-ঝুঁকে পরেছো বয়সের ভারে,
আমার কথা কি তোমাদের মনে পড়ে?
কচিকাঁচা বাচ্চারা হুটোপুটি করে খেলছে,
শিক্ষক-শিক্ষিকারা এক কক্ষ থেকে
অন্য কক্ষে ক্লাশ নিতে যাচ্ছেন।
কিন্তু এঁদের কাউকে তো পারছি না চিনতে,
সময়ের প্রবাহে সব গিয়েছে বদলে।
সেই বকুলতলায় প্রেমিক যুগল-আজও আছে বসে,
শুধু হৃদয়গুলি বদলে গেছে।
তুমি তো শুধু স্কুল নও-
ব্রিটিশ ভারতের হসপিটাল তুমি।
এখনো কান পাতলে তাদের পদধ্বনি শুনি।
হই রোমান্চিত ।এক অজানা শিহরণ যায় বয়ে।
জ্যোতিকণা সেনগুপ্ত-হ্যাঁ এই নাম
ছিল বড় দিদিমনির।
কঠোর শাসন-নিয়মানুবর্তিতা,
কিন্তু অন্তরে সুপ্ত কোমল মমতা।
শিক্ষার সাথে সাথে কত কিছু পেয়েছি এখানে!-
শুধু সফল নয়-আদর্শ মানুষ হতে শিখিয়েছো।
তোমার কোলে অধ্যয়নের সাথে
কত গল্প,হাসি,খেলা কত কি করেছি!
শিশু থেকে কিশোরে পরিণত হয়েছি,
সব সহপাঠী বন্ধুদের পড়ল মনে ,
কালের অন্তরালে যারা গিয়েছে চলে,
কত স্মৃতি বিজরিত সে সব দিন-
স্মৃতির মণিকোঠায় আজও অমলিন
একে একে সবাই গিয়েছি চলে-
স্বীয় স্বীয় জীবনে নিজের কর্মস্থলে।
ফিরে হয়নি দেখা,হয়নি ফিরে আসা,
কিন্তু আজও এতটুকু কমেনি তোমার প্রতি ভালোবাসা।
যুগ যুগ ধরে তুমি এমনই থেকো,
প্রতিনিয়ত সবার ভবিষ্যৎ গড়তে থেকো।