সবই দিয়ে দিই তোমারে
সবই দিয়ে দিই তোমারে
একে একে চলে যায় দিন শুধু বেঁচে থাকার তাগিদে।
এলোপাথাড়ি চিন্তা-স্রোত যত মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায় বেঁচে থাকার আশায়।
তবু মরে যায় শেষমেশ একটু পুষ্টির অভাবে।
তার শুধু খিদে একটু নিরালা-নির্জন আর একটু একাকীত্ব।
পার্থিব পেটের জ্বালা অলীক কল্পনার বিপরীত।
ছুটে চলি বেঁচে থাকার তাগিদে আর নির্নিমেষ অপেক্ষায়।
কখনও বা আসে অবসর একাকীত্বে ভর কালিমালিপ্ত রাত্রির গাঢ় অন্ধকারে।
কিন্তু হায়! বাস্তবিকতার জ্বালায় অলীক চিন্তাগুলো যে কখন পুড়ে ছারখার -
সেকথা বোঝার মত সময়ই বা আছে কার!
সাহিত্য, কবিতা? এ তো অকর্মণ্যদের সময় কাটাবার ছুতো!
এ পৃথিবী কর্মঠ খেটে খাওয়া মানুষের।
তবুও জখন অবসাদ আসে মনে, মনে হয় কিছু একটা রয়ে গেছে বাকী,
যেটা ছাড়া ব্যর্থ এ পৃথিবী।
নিখুঁত সাফল্যে ভরা ক্যারিয়ার কে না চায়?
প্রতিষ্ঠা পাওয়ার আশায়ে প্রতিষ্ঠিত করবার অবসরই বা আছে কার!
যারা একটু সরে দাঁড়ায়, অন্যকে জায়গা করে দেয়-
তারা তো পরাজিতের দলে।
তারা আমারই ছেড়ে দেওয়া যায়গায় বিজয়ের পতাকা ওড়ায়।
হাসে, আর বলে - এ পৃথিবী বোকাদের নয়, সব কিছু নিতে হবে ছিনিয়ে।
বিনিদ্র রজনীর ঝিঁঝিঁ পোকারাও গেছে সব মরে।
সারা রাত বাস ট্রামের নিরলস চিৎকার কঠিন অন্ধকারকে ছিন্নভিন্ন করে,
বলে, এ পৃথিবী শুধু ব্যস্ত মানুষের।
অযত্নে মেঝেতে পড়ে থাকা বইগুলো আমার বড়ই ধূলিময় ও ধুসর।
পায়নি পালিশ করা আলমারির স্পর্শ।
তবুও তো তারা আমার সাথে কথা বলে চুপিসারে, অনর্গল।
বোঝাতে পারিনি আমি, বোঝাতে চাইনা আর।
শুধু বুঝেছি বোঝাটাই শেষ কথা নয়, এর পরেও আরও কিছু আছে
অজানা, অধরা।
যা কিছু পেয়েছি আমি বেঁচে থেকে না পাওয়ার দলে
সেটুকু আগলে রেখে বেঁচে থাকি আপেক্ষিক ভাবে।
গবুও মহি রূহের মত মাথা উঁচু করে যখন দেখি,
আকাশে আজও ওঠে চাঁদ শত শত নক্ষত্রের ভিড়ে,
মনে মনে ভাবি,
যা কিছু পেয়েছি আমি সবই দিয়ে দিই তোমারে।

