প্রতিদিন ভাবি
প্রতিদিন ভাবি
আমি প্রতিদিন ভাবি আজ তোমাকে কথাটা বলবোই,
অন্তত ইঙ্গীতে হলেও তোমাকে বোঝাবো, তোমাকে
আমি কতটা ভালোবাসি। কিন্তু তোমার অবগুণ্ঠিত চেহারা দেখলেই
আমার সব ভাবনা এলোমেলো হয়ে যায়, আমি
একেরপর এক ঢোক গিলতে গিলতে নিজেকে সামলাই।
তারপর অব্যক্ত ফিরে এসে আবার ভাবি, কথাটা তোমাকে বলবোই।
যেদিন তোমাকে প্রথম দেখি, সেদিন আমার মনের ভেতর
অনেকগুলো প্রশ্ন জমা হয়ে ছিল! মানুষ কি এতোটা সুন্দর হয় কখনও?
এতোটা পেলব আর মসৃণ কমনীয়তা!
দেহের সমস্ত সজীবতা যেন শীতের সবজির মতো টলটল করে,
যেন কুয়াশার আদরে পাওয়া স্নিগ্ধ অনুভব।
আমি দেখি আর ভাবি, ভাবি আর ভাবি...
এরপর যেদিন তোমার কণ্ঠ শুনতে পেলাম, মনে হলো
এতো নরম আর স্পষ্ট তোমার শব্দভূষণ! অথচ শুধু হাসি দেখার আশায়
আজ কেটে গেলো কতগুলো দিন!
তুমি কি হাসতে জানো না?
কীসের এতো দুঃখ তোমার? কী ভাবো তুমি সারাক্ষণ?
তোমার চারপাশে থাকা রমনীরাতো সারাদিন মাতিয়ে রাখে
চারশ তিনের বিশাল ক্লাসরুম! কেবল তুমিই থাকো চুপটি করে
আড়ালে আড়ালে। আমি এটাও ভাবি, হয়তো কোনও অসুখে কিংবা
সুখের অভাবে তুমি ম্লান হয়ে আসো প্রতিদিন।
হয়তো তোমার রক্তের প্লাটিলেট কমে গেছে,
হয়তো হেমাটোলজি’র কোনও ডাক্তার দেখানোর মতো সাধ্য নেই তোমার বাবার।
হয়তো তুমি জানোই না তোমার অসুখের খবর...
আমি এসবও ভাবি...আর ভাবি প্রতিদিন
আজ তোমাকে কথাটা বলবো, চলো ডাক্তার দেখাই,
যাতে ফিরে আসে তোমার চাঞ্চল্য। ভাবি তোমাকে বলবো
তুমি আমার পর নও, আমার প্লাটিলেট কম থাকা ভাগ্নির মতো আপন কেউ।
কিন্তু মেয়েদের সঙ্গে কথা বলার সাহস নেই আমার।
আমি ভিন্ন পরিবেশে বড় হওয়া মেয়েদের সঙ্গে মিশতে না জানা এক নবীন শিক্ষক।
অযাচিত কোনও কথা না বলাই আমার শিক্ষা। আমার নীতি।
তাই প্রতিদিন যা ই ভাবি তা ভাবনাই রয়ে যায় প্রতিদিন।