স্বাভাবিকতা ফিরুক
স্বাভাবিকতা ফিরুক
প্রতি বছর পুজোর সময় হাত দুখানি জুড়ে,
তোমার থেকে আশ্বাস বাণী আদায় করার তরে,
মনে মনেই তোমায় বলি পাশ করিও মা,
মন বসে না পড়াশোনায় তবু সম্মানে লাগে না যেন ঘা।
একই কক্ষে থাকি না যেন একটি বছর আর,
তোমার কাছে শপথ নিচ্ছি মন দিয়ে পড়বো পরের বার।
দিন ঘুরলেই পড়ার কথা থাকে না আর মাথায়,
মিথ্যে প্রতিশ্রুতি জেনেও মাফ করেছো আমায়।
তবুও দেখো ভালোই ছিলাম স্কুলের ছত্রছায়ায়,
প্রতিদিনের নিয়ম কেমন অভ্যাস হয়ে দাঁড়ায়।
সুযোগ ছিল অবাক চোখে বহির্জগৎ দেখার,
পড়ার সাথে আপস করে খেলাধুলায় মাতার।
বন্ধুত্বের সঠিক অর্থ স্কুলে গিয়েই পাই,
আপদে বিপদে সুখে দুঃখে বন্ধু হলো ভাই।
সময় এবং নিয়ম মানার সহজ পাঠের সোপান,
শিক্ষকেরা দক্ষ হাতে তৈরী হতে শেখান।
হঠাৎ কি যে হয়ে গেলো অতিমারীর ভয়ে,
স্কুল কলেজ সব বন্ধ হলো, জীবন সংশয়ে।
বন্দি হলাম ঘরের কারায়, চার দেওয়ালের মাঝে,
হেলায় কেমন প্রহর পেরোয় সকাল হতে সাঁঝে।
প্রথম প্রথম বেজায় খুশি, পড়াশোনায় ছুটি,
নিজের মুঠো ফোনটি পেয়ে আনন্দে লুটোপুটি।
ধীরে ধীরে মনকে ঘেরে একঘেয়েমির স্বাদ,
হতাশায় ভরা জীবনে নামে বিষন্ন অবসাদ।
প্রকৃত অর্থে বন্ধু ছাড়া জীবন মূল্যহীন,
একাকিত্বের বেদনা ভারী, শরীর ভেঙে ক্ষীণ।
বড় দুঃখ নিয়ে আবার তোমায় বলছি শোনো মাগো,
ভাইরাসের এই অসুর নাশে অসময়েই জাগো।
সব স্বাভাবিক করে দাও মা, আবার স্কুলে যাই,
সত্যি বলছি মন দিয়ে আমি করবো পড়াটাই।
বন্ধু বিনে আর পারিনে, অসহনীয় ব্যথা,
জোর হাতে মা তোমায় জানাই, রেখো আমার কথা।