নয় খেলা
নয় খেলা
সাইকেলের পেছনে ক্যারিয়ারে বসে থেকে থেকে,
ঝিমোতে ঝিমোতে পেয়েছিল খুব ঘুম।
জুতোমোজা সহ বাঁ পা, ঢুকে গিয়েছিলো চাকায়,
পা যায় কেটে, সে দাগ থাকে আজীবন,
কিন্তু বাবা যে তাতে মাটিতে পড়ে গেল বেমালুম !
ঘটনাটায় পেয়েছিলাম যতটা ব্যাথা,
অবাক আমি হয়েছি তার চেয়ে বেশি অনেকগুণ!
এ কি আজব যন্ত্র! এতটুকু হলে গড়বড়,
আমার বাবাকে পর্যন্ত দেয় ফেলে ! সাহস এত বড়!
আমার পা দুটো আরও একটু লম্বা হোক,
একটু নাগাল পেলেই প্যাডেল দুটো!
বাগে আনতে হবে সাইকেলটাকে যেমন করেই হোক।
তারপর বড় হতে হতে, আমার সমান কাউকে,
দেখেছি অনেক সহজেই সাইকেল চালাতে।
কিন্তু চেষ্টা করেও শিখতে পারিনি কোনও মতে।
অনেকে আবার মাঝে মাঝে হাত ছেড়ে,
অথবা কখনও আবার প্যাডেল না করে,
দেখায় কতই না তাদের কেরামতি!
ব্যাপারটা দেখতে এতো সোজা অথচ.
ধুর! যাকগে, বলে হাল ছেড়ে দিয়েছি একটা সময়,
কিন্তু কলেজে ভর্তি হয়ে রিক্সা ভাড়া বাঁচাতে,
আবার সাইকেল চালানো শেখার কথা মনে হয়।
বাড়িতে কথাটা বলতেইদেখি হঠাৎ একদিন,
বাবা নিয়ে এলো "জ্যোতি" নামের লেডিজ সাইকেল!
হ্যাঁ, এইবার মনে হলো, হয়তো পেরে যাবো,
ক্রিং ক্রিং করে মনের আনন্দে বাজাই বেল।
পারতেই হবে, সাইকেলে ওঠাতো এখন সোজা,
বাবা আর ভাই দুজনে চলেছে সাথে দিয়ে পাহারা।
হাইওয়ে দিয়ে বিকেল বেলা পেরিয়ে কুলিক নদী,
টুরিস্ট লজের পাশের ঢালু রাস্তায়
চালালাম আমি সাইকেল, একদম একা,
সকলেই তখন আনন্দে আত্মহারা।
রোজ ভোরে বাবা আর আমি দুজনে দুই সাইকেলে,
এরপর চললো প্র্যাকটিস পুরো শহর জুড়ে।
শিখলাম নানা নিয়ম কানুন, চলবেনা হলে এলেবেলে,
থাকতে হবে সদাই নিরাপদে, এটা তো নয় খেলা।