Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

আরিয়ানা ইচ্ছা

Drama Action

3  

আরিয়ানা ইচ্ছা

Drama Action

চুক্তিভিত্তিক বন্ধন (বিয়ে)

চুক্তিভিত্তিক বন্ধন (বিয়ে)

4 mins
150



২য় পর্ব,,,


আজ দুইদিন যাবৎ নওশেদ আলী সারাক্ষণ মেয়ের সাথে থাকছেন,,। নওশী একটু স্বাভাবিক হয়ে উঠলেও আগের মতো ছটপটে স্বভাবটা আর লক্ষ করা যাচ্ছেনা তার মধ্যে,,। কোথায় যেনো হারিয়ে গেছে সেই হাসিখুশি প্রানবন্ত স্বভাবটা। এই দুই রাতেই ঘুমের ঘোরে হঠাৎ করে উত্তেজিত হয়ে উঠতো পরে অনেকক্ষন মাথায় হাত বুলিয়ে পানি খাইয়ে ওকে শান্ত করতে হয়েছে। নওশেদ আলী একবার ভেবেছিলো চাকরীটা ছেড়ে দেবে কিন্তু পরে ও জয়েন্ট করার পরের শপথ এর কথা মনে পড়ে,, ওতো তখন নিজের কাছেই ওয়াদা করেছিলো ও সব নিরীহ ও অত্যাচারীত গরীব মানুষদের ন্যায়ের জন্য ওর জীবন উৎসর্গ করবে। তখন অবশ্য ভাবেনি যে সীমা আসবে ওর অন্ধকার জীবনে একটুকরো আলো হয়ে। জীবনটাকে আলোময় করে তার অংশকে এভাবে একাই সামলানোর দায়িত্বে দিয়ে চলেও যাবে,,,,। কিন্তু এখন ওর একমাত্র অবলম্বন ওর মেয়েকে কিভাবে রক্ষা করবে ও,,, চারমাস আগে অন্য জায়গায় বদলীরও চেষ্টা করেছিলো কিন্তু সম্ভব হয়নি রজব আহমেদের জন্য,, রাজুর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত আর সব প্রমাণ কোর্টে পেশ করেছে নওশেদ আলী,, এমনকি রাজুর বিরুদ্ধে সাক্ষী ও দিয়েছে সে তাই তো এতো রাগ রজব আহ্ মেদের তার উপরে,,,। অনেক ব্লাকমেইল করেও যখন কোনো কার্য হাসিল করতে পারেনি ছোট্ট নওশীর পেছনে পড়েছে,,,।

,,,,অনেক কিছু ভেবেচিন্তে বুকে পাথর চাপা দিয়ে এক গভীর আর কঠোর পরিকল্পনা করে নওশেদ আলী পরদিন মেয়েকে নিয়ে লক্ষীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন,,,।

,,নওশেদ আলী মেয়েকে নিয়ে সব প্রথমে জমিলা খালার বাড়িতে যায়,,, অতীতে জমিলা খালা নওশেদ আলী কে জানিয়েছিলো একটা খুব লক্ষি মেয়ে আছে আশ্রমে,, সেখানে খালা কাজ করত দিনে এক বেলা করে,, তারপরে একদিন নিজেই অভিভাবক হয়ে ওদের বিয়ের ব্যবস্থা করে দেন,। নওশেদ তাকে খুব ভালোবাসতো নিজের খালার মতো তাই তার পরামর্শে সীমাকে বিয়ে করে ফেলেছিলো।


,,


ছোট্ট একটা দুই রুমের ফ্ল্যাটে থাকে খালা তার ছেলে,পুত্রবধু আর পোপুত্রকে নিয়ে,,,। দরজায় অনেকক্ষন দাঁড়িয়ে থাকার পর সাত বছরের এক ফুটফুটে ছেলে দরজা খুলে বেরিয়ে আসে,,। নওশেদ আলী জিজ্ঞেস করে নাম কি তোমার? ছেলেটি বললো তার নাম জয়,,। নওশেদ আলী জয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় বলে আহ কি মিষ্টি ছেলে কি মিষ্টি নাম তোমার,,। তা তোমার দিদা কোথায়,,,? নওশেদ আলী জয়কে একদম পিচ্চি অবস্থায় দেখেছিলো,, জয় তাদেরকে একটা ঘরের সামনে নিয়ে যায়,, সেখানে ঢুকে জমিলা খালার অবস্থা দেখে নওশেদ চমকে উঠে,,। বিছানায় একদম হাড্ডিসার কঙ্গালের মতো পড়ে আছেন জমিলা বেগম,,। নওশেদ ডাকে খালা,,। চিনতে পেরেছেন আমাকে!? আমি নওশেদ,,। 

জমিলা বেগম মুখটা তার দিকে ঘুরিয়ে বলেন,, আরে বাবা কেমন আছো তুমি!!? আমি তোমাকে কি করে ভুলতে পারি,,তুমিতো আমার ছেলের মতো,,। জীবনে যে কত উপকার করেছো তুমি তার ঋন যে কখনো শোধ করতে পারবো না বাবা। 

নওশেদ,,বলে না খালা! জীবনে যে তুমি আমাকে কি দিয়েছো তা কখনো নিজেও জানোনা,, অমূল্য রত্নর জন্য আজীবন আমি তোমার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো খালা,। এই যে দেখো এটা আমার মেয়ে নওশী। জমিলা বেগম নওশীকে দেখে বললো এতো দেখতে একেবারে সীমার মতো হয়েছে,,, একেবারে একটা আস্ত পরী যেনো,,। সীমার খবরটাই খুব কষ্ট পেয়েছিলাম বাবা,,। নওশেদ আলী ওখানে আরও কিছুক্ষণ থেকে জমিলা খালার চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দিয়ে আসলো খালার ছেলে রতনের হাতে,,,।


,,


অতীতে,,,, খালার ছেলে রতনের পড়াশোনা আর ব্যবসা দাড় করাতে অনেক সাহায্য করেছিলো নওশেদ। কিন্তু ছেলেটা এস.এস.সি পাশ করে মিথি নামের এক মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করে নেয়। তারপরে এসব ঝামেলা অশান্তি থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করেছিলো নওশেদ,,।


,,,,


নওশেদ আলী এবার তার আগের ফ্ল্যাটের কাছে এসে জানতে পারে ওদের প্রতিবেশী আসফাক হায়দার বাড়ি করে অন্যত্র চলে গেছেন।

দারোয়ানের কাছে নিজের আইডি কার্ড দেখিয়ে পরে ওদের বর্তমান ঠিকানা জেনে নেয়। লক্ষীপুর আদর্শ সামাদ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের গেট দিয়ে বের হচ্ছে বছর চৌদ্দর একটি ছেলে,,। পরনে স্কুল ড্রেস কাধে অনেক বোঝাযুক্ত ব্যাগ। হঠাৎ ওর পাশে ওর সেম ক্লাসের একটি মেয়ে এসে ওকে একটি খাতা ধরিয়ে দিয়ে বলে,, তোকে অনেক ধন্যবাদ মায়ান,,। তোর গনিত খাতাটা না পেলেতো আমি এই অধ্যায়ের অংক গুলো বুঝতেই পারতাম না। মায়ান বাড়ির বাইরে খুব কম কথা বলে। মেয়েটি হাত বাড়িয়ে বলে 'আমি লতা,, আজ থেকে আমরা বন্ধু'। মায়ান ওর বাড়ানো হাত তোয়াক্কা না করে বলে,, দেখো তুমি এখন কোচিং-এ ভর্তি হয়েছো এর আগে আসোনি তাই তোমাকে সকালে নতুন বলে খাতাটা দিয়েছি স্যারের কথায়,, আর আমার মেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব করার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই বলেই আমি এই স্কুলে ভর্তি হয়েছি।

এরপরে আমার স্কুলের কাছে আসবেনা আর খাতাটা কোচিং এ দিলেও হতো,,। মায়ান চলে যায় আর লতা হাবলার মতো দাঁড়িয়ে থাকে,,ভাবে ছেলেটি কেমন জানি! অহংকারী,!!! মায়ানের স্কুল থেকে বাড়ি দশ মিনিটের মতো রাস্তা তাই সাইকেল নেয়না হেঁটেই যায়,,।


_____,,,,,মায়ানের জীবনের একটাই লক্ষ্য ও ভালো জায়গায় চাকরী করে ওর বাবা মা'কে একটু ভালো জীবন উপহার দিতে চাই,,। মায়ান ছোট বেলা থেকে একটু চাঁপা স্বভাবের,,,। ওর ইচ্ছা বা অনুভূতি কারো সামনে প্রকাশ করতে পারেনা,,। তাইতো ওর বন্ধু খুব কম আর সবসময় নিজেকে গম্ভীর করে রাখে,,। বাড়িতে এসে আগে ওর মাকে সালাম দিয়ে ওর মায়ের কোলে থাকা ওর বোন (পাঁচ মাস তেরোদিনের,,) ছোট্ট মায়াকে একটু দেখে দাদীর ঘরে যায়,দাদীকে সালাম দিয়ে বলে কেমন আছো? জিজ্ঞেস করে উত্তর পাওয়ার পরই নিজের ঘরে চলে যায়,,। মায়ান এবার অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র,,। সকালে স্কুল খুব ভোরে কোচিং আর বাড়িতে পড়াশোনা করে সময় কাটা ছাড়া বাইরে ঘুরতে খুব একটা পছন্দ করেনা মায়ান,,,। মায়ানের ইংরেজী খুব পছন্দ,,। যদিও সব বিষয়ের সে পারদর্শী কিন্তু ইংরেজি দক্ষতাটা মনে হয় ওর বাবার চাইতেও বেশী।,,,,,,,


চলবে,,,


Rate this content
Log in

Similar bengali poem from Drama