মিথ্যে ভালবাসা
মিথ্যে ভালবাসা


কেন ভালবাসলিনা আমায়?
তুই কেন একটুও ভালবাসলিনা আমায়?
পুকুরের জলে সদ্য স্নান করা ভিজে শরীরে,
খালি গায়ে জড়ানো আঠপৌরে শাড়ীতে,
কাঁচা হলদে রং এর খোলা পিঠের উপর,
কালো একঢাল চুল ছড়িয়ে,
পায়ে নুপুরের রিনিঝিনি শব্দ করে,
যখন গাঁয়ের পথ দিয়ে আমি হেঁটে যেতাম,
সবাই বলত ‘গরীবের ঘরে এত রূপ, যৌবন বেমানান।’
কিন্তু তুই আমায় ভালবাসলিনা কোনদিন।
লোকে যে বলে সুন্দরী মেয়েদের দেখলেই নাকি তোদের মাথা ঘুরে যায়, তোরা প্রেমে পড়ে যাস।
তবে তুই কেন আমায় ভালবাসলিনা?
আমার তো তোদের মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মত যথেষ্ট রূপ, যৌবন ছিল।
তাইতো সেদিন রাতে,
আমার রূপে পাগল হয়ে গিয়েছিল ছোটবাবু।
সেদিন যখন ঘরে চাল বাড়ন্ত বলে জমিদার বাড়ি গিয়েছিলাম দুমুঠো চাল আনতে,
ছোটবাবু ফাঁকা বাড়ীতে দুমুঠো চালের বদলে, ছিনিয়ে নিয়েছিল আমার সব।
বিশ্বাস কর, আমি কিন্তু তখন মনে মনে শুধু তোকেই ডাকছিলাম।
জলে ভেজা আমার দুচোখ,
কোন মিথ্যা আশায় বুক বেঁধে,
শুধু তোকেই খুঁজছিল।
কোঁচড় ভরে চাল আর সারা শরীরে কলঙ্ক নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলাম রাতের অন্ধকারে।
যাক্ ছোটবাবু আমার মন না বুঝলেও আমার শরীরটাকে ভালবাসায় আমাদের পেটের ক্ষিদের জ্বালাটা মিটেছিল বেশ কয়েকদিন।
কিন্তু তুই আমার মন ও শরীর—
কোনটাকেই ভালবাসলিনা।
আজ একবার মিথ্যে করেই না হয়,
ভালবাসলি আমায়।
শরীরটা নষ্ট হলেও মনটা তো আজও তোরই ভালবাসার অপেক্ষায় রাত জাগে।