লকডাউন
লকডাউন
আমার দিদা আর সুচিত্রা সেন, নাকি
কাছাকাছি বয়সের ই হবেন।
খাওয়ার পর শোওয়া আর শোবার পর
আবার খাওয়া, কেন খারাপ হবে না
আমার দিদার মনটা?
এতদিন বুঝিনি আমি প্রকৃত
লকডাউন বলে কাকে?
দিদা বুঝে গেছেন সেই কথাটা
বছর কয়েক আগে।
সকলের এতো ভালোবাসা, এত যত্ন
পেয়েও, "বাঁচতে চাই না আর " এই
কথাটা কেন দিদা বলেন?
এবার বুঝতে পেরেছি হাড়ে হাড়ে।
হাত পা থাকতেও চলতে না পারা,
মুখ থাকতেও কথা বলতে না পারা,
দাঁত থাকতে চিবোতে না পারা,
কান থাকতেও শুনতে না পারা,
কতখানি কষ্টের যে হতে পারে!
বই না পড়তে পেয়ে আমি যে উঠেছি হাঁপিয়ে।
মাত্র তো দুদিন হলো, দু সপ্তাহও নয়,
দুবছর টানা যদি এরকম হয়?
আমি কি পারবো বাঁচতে চাইতে?
পিঠে-পুলি, রান্না-বান্না, ঢেঁকি পেতে চিঁড়ে কোটা,
ধান ভানা, প্রয়োজনে কুড়ুল দিয়ে কাঠ চেরা,
কত কিই দেখেছি দিদাকে একা হাতে করতে!
তার আগে ছিল ছেলেপুলেদের নাওয়ানো,
খাওয়ানো, পড়ানো, তাদের বড় করে তোলা।
দিদা আমার মানুষ তো নয়,
যেন বিরাট এক ম্যাজিশিয়ান।
সেই মানুষ যখন ঘরবন্দী হয়ে রয়,
ভাবিনি কখনো আগে তাঁর কতটা কষ্ট হয়।
