খাঁচার পাখি
খাঁচার পাখি
খাঁচার পাখি
মানিক চন্দ্র গোস্বামী
ডানায় আমার জোর নেই আর,
শক্তি কোথায় ওড়ার,
মুক্ত আমায় কোরো না ফের,
ইচ্ছেটুকু হারিয়ে গেছে বহির্বিশ্ব দেখার।
ছোট্ট ভুলের মাশুল দিয়ে
হারিয়ে ফেলেছি মান,
দানার টোপে বন্দি পাখির খাঁচায় বন্ধ প্রাণ।
মনের মাঝে জেগেছিলো সমাজ সেবার ব্রত,
উৎসাহী কাজে খুশি,
অনাথ শিশুর ক্ষুধার জ্বালা মেটানোর কাজে রত,
খাবার পেয়ে হাসতো শিশু শশী।
নিজের কাজের গুণগান শুনে হতাম বেজায় খুশি।
দ্বিগুন সাহসে বড়দিনে স্যান্টার সাজে গিয়ে,
কেক, মিষ্টি, চকোলেট কত দিলাম বিলিয়ে।
পাড়ার লোকে হঠাৎ ছুটে ধাক্কা আমায় দিয়ে,
ছেলেধরার তকমাটা দিলোই পরিয়ে।
গালিগালাজ, কিল, চড়, ঘুষি,
বাদ দিলো না কিছু,
পুলিশ হাতে তুলে দিয়ে প্রকাশ করে খুশি।
মান-সম্মান, সম্ভ্রম সব রইলো পড়ে পিছু।
মিথ্যে অভিযোগের ফলে জীবন কাটে কারায়,
আমি এখন বন্দি পাখি, মান মিশেছে ধুলায়।
বেশ তো ছিলাম মুক্ত হয়ে স্বাধীন জীবন ধারায়,
মানব সেবার মূল ধর্মের পথ ভরেছে কাঁটায়।
উচ্চাকাঙ্খা চলার পথে আহ্বান করে বিষ,
প্রাণের মাঝে তপ্ত আগুন জ্বলছে অহর্নিশ।
সমাজের চোখে অপরাধী আজ, সবার কাছেই হেয়,
মনের শক্তি হারিয়ে যাওয়ায় বন্দি থাকাই শ্রেয়।
মুখ ফিরিয়ে প্রতিবেশী ছিন্ন করেছে টান,
খ্যাতির আসনে বসার বদলে গারদে হয়েছে স্থান।
খাঁচার মাঝে বন্দি থেকে মুক্ত আকাশ পানে,
চেয়ে থেকে হতাশ চোখের অশ্রু মুছি ক্ষনে।
