কাঁকরোল
কাঁকরোল
বাঙালি রসনার তৃপ্তি যে কত রঙ - রূপ আহারে!
ভর্তা, সুক্তো, ছ্যাঁচড়া দেখেও মন বলে বাহা রে।
চচ্চড়ি, ঘন্ট, ছেঁচকি, লাবড়া, ডাল আর ডালনা!
লাউ, কচু এসবের ডাঁটা, পাতা কিছুই নয় ফেলনা।
ভাতুয়া বাঙালী কিন্তু লুচি পেলেও ছাড়ে না।
ধোঁকা খেয়ে ঠকলেও ভালোবাসে যে ধোঁকার ডালনা,
গেঁড়ি, গুগলি, কাঁকড়াও মেনু থেকে বাদ যায় না,
আমিষ ও নিরামিষ সব রকম পদ চাই, করে বায়না।
পটল, কাঁচকলা এদের খোসা দিয়ে করে নতুন রান্না!
থোড়,মোচা,মূলো এসব রান্না ঘরে ঘটায় নানা ঘটনা।
ছোটো মাছের চচ্চড়ি পেলে আর কিছু চায় না।
মাছের মুড়ো দিয়ে কাটা চচ্চড়ি, আহা মরি মরি!
মুড়ি ঘন্ট, মুগডালে মাছের মাথা খেতে যদিও ভালো,
কাঁটা বাছার ভয়ে যে এদের অনেকেই বিদায় দিলো।
উচ্ছে ঠিকমতো ভাজা হলে মুখে মধুর মতো লাগে,
নিমপাতা, পলতে পাতা, গিমা তেতোও আছে শাকে।
এত তেতো ভালোবেসেই তেতো কথাও বলতে পারে,
কাঁকরোল আছে তাদের, যারা তেতো খেতে না পারে,
সৎ সাহস দেখায় বাঙালী, লুকোয়না কারো আড়ে।
পান্তাভাতকে ছি ছি ভেবে অন্যেরা তো থাকে দূরে,
আপামর বাঙালী পান্তাকে নিয়েছিলো আপন করে।
ইলিশ নাকি চিংড়ি প্রিয় এ নিয়েও তারা ঝগড়া করে!
পটল, ফুলকপি, বেগুন, ডাঁটা ও আরও নানা সব্জি,
এক একটায় ভিন্ন ভিন্ন নানা রকম পদ, ও ভাজি।
ডালের পদ নানা, তেতো ডাল, টকডাল ও ডাল সেদ্ধ,
কচি পাঠার মাংসের ঝোল পেলে তো সকলেই মুগ্ধ।
সপ্তাহে তিন চার দিন চাই যে মাছের ঝোল,
তা না হলে কি করে মুখে ফোঁটে সুমধুর বোল!
শেষ পাতে খোঁজে বাঙালীর মন চাটনি বা অম্বল,
তারপর যদি থাকে দই-মিষ্টি, আল্হাদে গ'লে জল।