জীবনদেবতা
জীবনদেবতা
এখনও ভীষণ ভাবে বেঁচে আছি আমি,
আমার শরীর থেকে একটা একটা করে প্রত্যঙ্গ
নির্মম ভাবে বিচ্ছিন্ন করেছ তোমরা।
তবু এই অতৃপ্ত চোখ দুটোতে আমার
বাঁচার বাসনা প্রবল।
অস্ত্রের ঝনঝনা শুনিয়ে
ঘুম পাড়াতে চেয়েছ বহুবার,
আঘাতে আঘাতে করেছ জর্জরিত।
তবু দেখ, আমার শিরায় উপশিরায়
উষ্ণ শোনিত স্রোত বন্ধ হয়নি এখনও।
কঠিন ভুমিশয্যা থেকে রাতের তারাভরা
আকাশের কাছে চেয়েছি শান্তির বারি।
শান্তি নয়, পেয়েছি মারন বিষের মতো
একপাত্র তরল উপহাস তোমাদের কাছে।
তবু মৃত্যু স্পর্শ করেনি আমাকে।
শত সহস্র কষাঘাতে ক্ষত বিক্ষত এ দেহের ভার
বহন করেছি ধুঁকতে ধুঁকতে,
অযুত কষ্ট সহ্য করে।
তখনও বাঁচার আকুতি ছিল যে প্রবল।
হে জীবন দেবতা, করুণ মিনতি রাখি চরণে তোমার, ফিরিয়ে নাও গো এবার আমায় ,
এ জীবন হয়েছে বড় ভারি ।
আজ এক নতুন শারদীয়া ভোর,
রাতভর বৃষ্টির পর অরুন আলোর স্পর্শে
খুলে গেল আমার পূবের জানালা,
সাথে পেলাম আমার মুক্তির চিঠি।
অকুন্ঠ ভালোবাসায় আজ
ভরিয়ে দিলে তোমরা আমাকে,
দুহাত ভর্তি করে দিলে অজস্র ফুল,
সাথে দিলে বেদনার ভার।
ধন্য হলাম আমি, ধন্য জীবন দেবতা ॥