জারজের দীর্ঘশ্বাস
জারজের দীর্ঘশ্বাস
দীর্ন হৃদয়ে বিমর্ষ বদনে করুন নয়নে কান্না
বুকভাঙ্গা ওর হতাশায় ভরা আর্তরবের যাতনা।
সেটা কী তার সমাজের প্রতি তীব্র ব্যঙ্গ ঘৃনা!
শত প্রতিকুলে ক্লান্ত শরীরে অভুক্ত উদরে নেই আশ
অন্তিমক্ষণে দিশেহারা মুখে পরাজয়ে ভারী নিঃশ্বাস!
স্রষ্টার প্রতি প্রতিবাদ! না অসহায়ের ব্যর্থ অভিশাপ!
সহস্র শ্বাপদ লোলুপ নজরে ভীত সন্ত্রস্ত প্রতিক্ষণে,
অনন্তকালসম অসহনীয় যেন ক্ষণিকের নরকবাস!
কী অপরাধে অবাঞ্ছিত আজ ঘনকুয়াশা আঁধার রাতে
রুধিরে সিক্ত তনু মোর ,জড়ায়ে জীর্ণ অশুচী বসনে
তাচ্ছিল্যে ভরা ঘৃণ্য নজরে, মাতঃ নিঠুর কী তব হিয়া!
অসহায় নীরব আপ্রান আকুতি মোরে করো দয়া!
সঙ্কট সম জঙ্গাল ঘন ভয়াবহ পিচ্ছল ভীষণ খাতে
দূষিত ঘ্রাণে প্রানবায়ু কাঁদে নর্দমার সিক্ত আবহে ।
কেন এত ব্যাথা,কেন বঞ্চনা মম ব্যাকুল বিদুর কান্না
কেহ কী আছো!বাঁচাও মোরে,বিষাদের বিদায় বাজনা!
প্রকৃতির ক্রন্দন দুখ কাতরতা,স্তব্ধ রাখিছে এ ব্যকুলতা
বিবেক বধিরতায় সভ্য সমাজে, এ বুঝি আজব কথা !
নীরবতা ভেঙ্গে, আকাশ বাতাস গুমড়ে কাঁদে আজি
আঁধার নিশি বিষন্নতায় নীরব, লজ্জায় মুখ ঢাকি
সৃষ্টির সেরা জীব কুলমনি, করো যে তোমারা গর্ব!
আত্মজে ফেলি কোন জীব মাতা করে মাতৃত্বের খর্ব !
বরাহ কিম্বা শ্বাপদ, ছাগল,শাবকের মোহে ওরাও পাগল।
তব চোখে ওরা ঘৃণ্য অধম, নিজ গৌরবে দম্ভ অহং!
আহারের তরে,শ্বাপদ নজরে,স্বেচ্ছায় ত্যজি রুধির পিন্ড
নির্জনে ফেলি গাড় নিদ্রায় মা!থাকিতে পারে কী মগ্ন!
অপার স্নেহে, অনন্ত মোহে ,তপ্ত পরশে, কাঙ্খিত ধনে,
সহস্র বাঁধা রাখিতে না পারি,যতনে পোষিত হৃদয় খন্ড।
শত নিরাশায়, নির্বাক ভাষায় ,অনুশাসনের অস্তিত্ব ভয়ে
জারজ জননীর অশ্রু আগুনে, জ্বলুক আদিমতার দম্ভ।
এই কী সমাজ,এই মানবতা!হতভাগী কেন মানব মাতা!
আজিও কেন সে একাকী মননে ভুগিবে নীরব ব্যাথা!
বহুভোগী কত প্রবৃদ্ধ প্রান,শত কোটি যার আমিত্বের দাম
কভু সাধনায়,কত প্রার্থনায়, মঙ্গলে জপি ঈশ্বরনাম
সহস্র বর্ষে মিলিয়ন ব্যায়ে, ফিরে যদি তারা,করি উল্লাসে,
নাওয়া খাওয়া ভুলে,ভক্ত কুলে, চর্চায় মাতি দিবারাত্রে
আবেগে সহস্র বৃদ্ধকিশোর, তার জয়গানে মজি
কৌলিন্যে দীপ্ত উনি যে অমর,সহস্র মিডিয়ায় গর্বিত ছবি!
প্রভু ক্রীতদাস আজিও যে আছে, বদলেছে শুধু শাসকের নাম।
এই সেই সমাজ সেই দুনিয়া, অধরা আজিও মনুষ্যত্বের দাম।
কেন নবীনের একটিও প্রান অবহেলা নীরবে হবে খান খান
কার অপরাধে জারজ ওরা!পাপীষ্ঠের মুখোশ খুলে
ধরে আন
কারা সমাজের মুখোশ ধারী, যত শোষনের ভন্ড ঠিকাদারী
একটিও শিশু কী অপরাধে,জারজের জ্বালায় দগ্ধ নীরবে!
শত যাতনার প্রসবের পরে,জননী কেন জাতকেরে ফেলে!
গর্ভে জারজ কেন শঙ্কায় কটাক্ষ অনলে ইজ্জত হারায়।
এই কী সমাজ সাম্য কোথায়, কার পাপ কেন গোপনীয় হায়
ধিক্কার শত,প্রতিষ্ঠান যত,চক্ষুবাঁধিয়া দাঁড়ায়ে নারী
কাঁদিয়া মরে চিরঅসহায় এই কী তব বিচারের বাণী