গৃহস্থের স্বপ্ন
গৃহস্থের স্বপ্ন
ভাতের সাথে পাতলা মুসুরি ডাল আর গরম আলুভাজা,
সপ্তাহে তিনদিন মাছের ঝোল, রবিবারে মাংস হবেই।
ছেলেটা ভীষণ ভালো পড়াশুনায়, কিন্তু আজকাল
ফোনে ভারী সময় নষ্ট করে।
মেয়েটার বিয়ে হয়ে গিয়েছে।
দূর শহরে থাকে যৌথ পরিবার।
স্বপ্ন রবিবার সন্ধেবেলা বলে, শোন আর একটু মন দিয়ে
কাজ করলে প্রোমোশনটা হয়ে যাবে। ছেলেটা ফোনে ই ক্লাস
করছে, যা মেধা তাতে আই আই টি হয়ে যেতেও পারে।
মেয়েটার সেদিন ভারী মন খারাপ ছিল, বলে দেব চিন্তা করিস না,
একটা বাচ্চা হয়ে গেলে অশান্তি আর থাকবে না।
স্বপ্ন দুদিন সময় পায় না আসতে। সোম মঙ্গল পেরিয়ে
আবার বুধবার কড়া নাড়ে। লক ডাউনে কাজ হারিয়েছি।
পার্ট টাইম একটা কাজ করে কিছু রোজগার।
ছেলেটা দরজা বন্ধ করে সারাদিন চ্যাট করে।
আর মেয়েকে না থাকতে পেরে বলেছি আগামী সপ্তাহে নিয়ে আসব।
মাছের কিছু রোগ হয়েছে, বোধহয় আর্ বয়স ও হচ্ছে আমাদের,
তাই মাছ এখন একদিন ই হোক।
গৃহস্থ আবার এক রবিবার বারান্দায় হেলান দিয়ে বসে,
উঁচু বাড়ীর ফাঙ্ক দিয়ে আকাশ দ্যাখে। ছেলেকে পাশে বসিয়ে
বোঝায়, মেয়ে ফিরে এসেছে, চোখে মুখে ভরা শ্রাবণ।
স্বপ্ন তার মাথায় হাত রাখে,
তার মন্ টাকে সিমেন্ট দিয়ে পোক্ত করতে চায়।
গৃহস্থ বন্ধুদের ফোন করে, কিভাবে আর একটু কামাই করা যায়।
আবার ইস্টি কুটুম পাশের গাছে;
শ্রাবনের ধারা মনের ভিতর।
বোধনের সুরের মত আশার বানী।
টাইমে ট্রেন স্টেশনে ঢোকার আনন্দ;
গৃহস্থ সেই তৃপ্ত, মনে আবার সাজায় তার সাধের স্বপ্ন।