ঘর ও প্রতিষ্ঠা চাই
ঘর ও প্রতিষ্ঠা চাই
আমরা ছুটে যাই কোথাও শুনলে হচ্ছে নাম গান,
আমরা তালি দিই, হরে কৃষ্ণ হরে রাম, করি গান।
পারলে দুই পাঁচ টাকা প্রণামীও দিই, নেই অভিমান,
বাবু-বিবিরা, অষ্টপ্রহর কীর্তনের নামে নাক সিঁটকান।
মন দিয়ে শুনি, নবদ্বীপের মোহান্তরা যা দেন প্রবচন,
বুঝি, বা না বুঝি, ভালো তো বাসি, ওনারা গুরুজন !
আছে শিক্ষিত দুই চার জন, পারে হয়তো ভুল ধরতে,
কিন্তু তারাও যে জানে, কারো মনে কষ্ট হয়না দিতে।
ওরা যেন পায় প্রতিষ্ঠা, না হয় কোনো বাধা পেতে।
সখ্য ভাব, মধুর ভাবের পথে যাইনা, আমরা তো দাস,
সেবক হই খোদ ভগবানের, একদম অনুগত ও খাস !
হরির লুটের বাতাসা রাখি শাড়ির আঁচলে বেঁধে,
ধুলোটের সময় গড়াগড়ি যাই, বসন ভিজাই কেঁদে।
নিজে পাখার বাতাস না পেলেও কোনো ক্ষতি নেই,
গোপালের খাওয়া ও ঘুমের সময় হাওয়া দেওয়া চাই।
নানা মৌসুমি ফলমূল জোটেনা বাড়ির গোপালের,
আছে তো তার তরে আমাদের ঘরে মজুত হরি মটর।
কীর্তনের আসরে ফুল, ফল, নৈবেদ্য এসব দেখে,
আমাদের মন ভরাই, সার্থক হয় এই দৃষ্টি বা নজর !
দিনে, রাতে কয়েক ঘন্টা করে ওখানে বসে কাটালেই,
ভোগের অন্ন কিংবা খিচুড়ি জানা কথা জুটে যাবেই ।
কি আর করি! আমরা গরীব, কাজ চাইলেও তা নেই।
বড়লোকদের উৎসব অনুষ্ঠানে আগের মতো কই,
"দরিদ্র নারায়ন সেবা","কাঙালী ভোজন" শুনতে পাই!
তার মানে, দেশে আর গরিব মানুষ বলে কেউ নেই !
যেভাবেই হোক, দুবেলা দুমুঠো খেতে পায় সকলেই ?
ওয়ার্ডের কমিশনার দেখি শত টাকা প্রণামী দেয়,
শুনেছি গরীব মানুষ বসবাসের জন্য পাকা ঘর পায়।
শুধু জানি, ঘর পেতে গেলে আগে জমি থাকা চাই,
পাকাবাড়ি হলে থাকে যেন সেথা গোপালের মন্দির !
স্বপ্ন দেখতে কোনো ক্ষতি নেই, হোক না তা সুদূর।
