পুতুল নই
পুতুল নই
হঠাৎ করেই যদি মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যায়,
কিছুতেই আর ঘুম না আসে চোখের পাতায় ?
কে না জানে,যে রাত জাগলে শরীর খারাপ হয়ে যায়!
নরওয়ের হেনরিক যোয়ান ইবসেনের চিন্তা মাথায়,
ঘুরে ঘুরে কেন যেন অযথা ঘিলু কুড়ে কুড়ে খায় !
একটু যশ প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষ কিভাবে খেটে যায়,
সারাজীবন ধরে ঘুরে বেড়ায় প্রায় অর্দ্ধেক দুনিয়ায়।
বার্গেনের বেহালা বাদক ওলবুলের সাথে বন্ধুত্ব হয়,
পেশাদার রঙ্গমঞ্চের সাথে এভাবেই হয় তাঁর পরিচয়।
পাঁচ বছর বার্গেনে কাজ করে হয় অভিজ্ঞতা অর্জন,
এবারে ইবসেন, সুসলা থোরমেনকে বিবাহ করেন।
একসময় তাঁরা দুজনেই ক্রিস্টিয়ানায় ফিরে আসেন।
নাটকের মঞ্চে এবারে তাঁর রচনা "লাভার'স কমেডি",
শিল্পী মহলে প্রচুর সাড়া জাগালেও মেলেনি খ্যাতি !
হতাশ হয়ে তাই নরওয়ে থেকে নেন স্বেচ্ছা নির্বাসন,
এরপর কিছু বছর তিনি ইটালীর অধিবাসী হন।
এখানে ধর্মজাযকের বিয়োগান্তক কাহিনী "ব্র্যান্ড"
রচনা করে তিনি সেখানকার সমাজে সাড়া জাগান।
স্ক্যান্ডিনেভিয়ায় এই নাটকটি দারুণভাবে সফল হয়!
এর দুবছর পর "পিয়ার গিন্ট" নাটকটি মঞ্চে আনেন।
থিয়েটার পাগল জনগনের হৃদয়ে তিনি জায়গা পান।
মন যা চায় তাই পেয়ে গেলে মানুষের সব পাওয়া হয়,
মানুষ তখন যায়, অন্য কোনো এক নতুন জায়গায়।
এভাবেই তো হেনরিক ইবসেন জার্মানিতে পা রাখেন,
মিউনিখের এক রঙ্গমঞ্চে তাঁর গদ্য রূপে লেখা_____
সামাজিক নাটক "দ্য পিলার'স সোসাইটি" মঞ্চস্থ হয়।
দর্শক,শিল্পীদের প্রচুর প্রশংসা কুড়াতে তা সক্ষম হয়।
এরপরেই তো রচিত হয় তাঁর সেই অমর সৃষ্টি______
"আ ডল'স হাউস", নারীদের নানা অধিকারের কথা,
উঠে আসে তৎকালীন সমাজের অন্ধকারের ব্যাথা।
নোরার সংলাপে নারীর অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন,
নারীর বিশ্বাস,ভালোবাসা,সততা ছিল কত মূল্যহীন !
আজকের যুগের নারী, মানুষ হিসেবে কি মূল্য পান?
নারী কি শুধুই শরীর,মানবী কি প্রানহীন এক পুতুল ?
সমাজের সকল স্তরের মানুষেরা কি ভালোবাসেন !
পুরুষের কাছে নারীর শরীর দামী, নাকি তাঁর মন ?
পূজোর দরকার নেই, নারী শুধু চায় যথাযথ সম্মান।
এক মানবী হয়ে সেই মহামানবকে জানাই প্রণাম,
পুতুল নই, তোমাকে আমার সেলাম জানাই ইবসেন ।
