ঢ্যাপের খই
ঢ্যাপের খই
সারাদিন কাজের ফাঁকে পেতো যদি একটু অবসর,
নতুন কাজ জুটিয়ে নিতো ঠিক আবার পর পর।
তিল - নারকোলের নাড়ু, মুড়কি, পিঠে-পুলি, খৈচুর,
চিঁড়ে-মুড়ির মোয়া বানিয়ে দিতো হাতে, "এই নে ধর!"
তালের বড়া, নলেন গুড়ের পায়েস, যখনকার যেটা,
অবসরের ফাঁকে ফাঁকেই বানিয়ে ফেলতো সবকটা।
খাইয়ে দাইয়ে, দেখে সকলের তৃপ্ত এক একখানা মুখ,
তাঁরাই জানে এ আনন্দ,বিনোদন অথবা কি সে সুখ!
সারা বছর পর কোথাও হয়তো বসতো রাসের মেলা,
চলতো সারা মাস ভর ধরে হোথায় নানা রকম খেলা।
সার্কাস, জাদু, সিনেমা, মরণকুয়া অথবা নাগরদোলা,
কাজের জিনিস পত্রও সেথায় পাওয়া যেতো মেলা।
মাঠের নতুন ধান, সর্ষে এসব তোলা হয়ে গেলে সারা,
মেলার পানে ছুটতো লোকে বেশ জুটিয়ে সারা পাড়া।
ঢ্যাপের খৈএর মোয়া সেখানে পাওয়া যেতো অবশ্যই,
কেউ মেলা থেকে ফিরলে খুঁজতাম , "এনেছো কই?"
বর্ষায় জলা জায়গায় ফুটতো যতো শাপলা ফুল,
কখন যে ফল হতো, পুষ্ট হতো, যারা সংগ্রহ করতো,
তারা সব যে কোথায় গেল! দেখিনা তো কই !
ঢ্যাপ না পেলে লোকে কি করে বানাবে ঢ্যাপের খই?
আগে খই পাবে, তবে তো নতুন গুড় দিয়ে মোয়া হবে,
অনেক বেশী বানালে খেয়ে দেয়ে তারপর তা বাঁচবে।
তারপর তো সেই ঢ্যাপের খই হাটে বা মেলায় বেচবে!
ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েরা চকোলেট, কেক খাচ্ছে,
অবসর সময় কাটাতে আজকাল মোবাইল ঘাটছে।
পরিশ্রম সবারই আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে,
বুড়ো বুড়িরা এখন ঘরে বসে টিভি সিরিয়াল দেখছে।
সকলেই কিন্তু আরাম করে করে বেশ মুটিয়ে যাচ্ছে,
নানা রোগ ব্যাধি মানুষকে তাই তো নাজেহাল করছে।
