বৃহন্নলা
বৃহন্নলা
তোমার মতই আছে দেহে প্রাণ ;
তোমার মতই শিরায় শিরায় রক্ত,
তোমার মতই অনুভবি যত ঘ্রাণ ;
নারী বা পুরুষ বলাটাই ভারি শক্ত।
তোমার মতই জন্ম মায়ের গর্ভে ;
তোমার মতই আমারও আছে সত্ত্বা,
তোমার মতই ভয় হয় মান খর্বে ;
গর্ব আমার পায় নাই সারবত্তা ।
তোমার মতই আছে মোর অনুভূতি;
তোমার মতই রক্ষা করতে লাজ,
মানুষ হয়েও পাইনা যে স্বীকৃতি ;
ব্রাত্য করেছ তুমি ; তোমার সমাজ ।
নারী পুরুষের গোপন অঙ্গসুখ ;
ছেড়েছে আমায় জনমের ত্রুটি বলে,
মা বাবারাও দেখে না আমার মুখ ;
মনটা আমার কেমন যেন জ্বলে ।
আধা নারী আধা পুরুষ আমি ;
কিন্তু দেহে মেয়ে মেয়ে ভাব,
আমি যে কি জানেন অন্তর্য্যামী ;
আমায় পেয়ে তাঁহার কিবা লাভ !
জাত ধর্ম শিক্ষা দীক্ষা সবই ;
শিকেয় তোলা পাইনি তার খোঁজ,
পেট চালাতে উদয় অস্ত রবি ;
বাঁচার তাগিদ লড়াই করি রোজ ।
নব জাতকদের বাড়ি বাড়ি নাচি ;
তাণ্ডব নাচে শুরু পথের চলা ,
জোর জুলুমেই যে কয়দিন বাঁচি ;
তোমরা বল আমি যে বৃহন্নলা ।
লিঙ্গ যোনীর ধার ধারি নাকো ;
প্রকৃতির এই একটি বিশাল ত্রুটি,
তৃতীয় লিঙ্গ নামটি দিয়ে ডাকো ;
হিজড়ে আমি তাতেই জোগাই রুটি।
