বন্দী দশা
বন্দী দশা
বন্দী দশায় আছি আমি
বাবা মা পেতেছে জাল,
সবই তো বাবা মা'র হাতে
মন্দ মোর কপাল।
বেশি ঘুমের জো নেইকো
সকাল সকাল তাড়া,
চোখে মুখে খাবার গুঁজে
ছুটি যে পাশের পাড়া।
অসচেতন হলেই স্যার
জোর হুঙ্কার ছাড়ে,
মায়ের কাছে নালিশ যায়
মা বাবা বেত মারে।
স্কুলও আছে এরপর
হাজার পড়া ও লেখা,
বিকাল বেলা স্যার আসে
চলে নাচ গান শেখা।
সন্ধ্যা বেলা একটুখানি
খেলি গেম মোবাইলে,
ছোট্ট মন উড়ে যায় মাঠে
খেলে যেথা সবে মিলে।
এর মধ্যে কলা বিভাগের
স্যার হন হাজির,
অবশ হয়ে আসে আমার
ক্লান্ত ছোট শরীর।
স্যার চলে যেতে যদি ভুলে
খুলি টেলিভিশন,
'গেল গেল,'
গোল বেঁধে যায়
'উচ্ছন্নে গেছে মন।'
'স্কুলের পড়া বাকী আছে
ফার্স্ট দূর - হবি ফেল,
কাঁড়ি কাঁড়ি খরচ করি
দেখবি, দেখাবো খেল?'
আচ্ছা, বলো, ফার্স্ট হলেই
হয় কি খাঁটি মানুষ?
বড়ো অফিস, ভালো চাকরি
টাকা কেড়ে নেয় হুশ।
টাকা তোমরা ঢালছো বটে
শুকনো গাছে জল,
পুঁথিতে আমি বিদ্বান হবো
মন রবে দুর্বল।
শাস্তি আর জবরদস্তি
খাদ যে ভালোবাসায়,
নিজ স্বপ্ন অন্যের হাতে
পূরণ করা কি যায়?
শিশু মন চায় একটুখানি
আদর ভালোবাসা,
কাঁচা মাটির শিশু হৃদয়
তৈরি হয় তাতে খাসা।
স্নেহহীনতা আর একাকীত্ব
গড়ে কঠোর মন,
বাবা মা'র তাই বৃদ্ধাশ্রম
থাকে কপাল লিখন।