জাহাজ পাড়ি
জাহাজ পাড়ি


বাবা তুমি জাহাজ পাড়ি;
অনেক দিনের পর আসবে বাড়ি।
সকালে স্কুলে ছাড়তে তুমি পাশে,
সন্ধেতে পড়ার টেবিলের কাছে তুমি বসে।
পড়ার ফাঁকে মনে যে অনেক প্রশ্ন আসে।
বোনের কিন্তু ভারী মজা,
তোমার ঘাড়ে বসে প্রশ্ন করে আমায়
দিদি বল তো অঙ্ক ভুল হলে কি হবে সাজা।
বাবা, সেবার যখন হাতির পিঠে জলদাপাড়া;
গন্ডার দেখে জঙ্গল কুটিরে রাত কাটানো।
তোমার গল্পের ঝুড়ি সন্ধেবেলা;
ভীষণ ঝড়ে জাহাজ, হঠাৎ ডাকাতি জাহাজে,
তারপর সেই সাদা ভূত জাহাজের ডেকে,
উরিবাবা, আমরা দুই বোন ভয়ে তখন স্বপ্নজালে।
এখন বুঝি তুমি ভরা জোয়ারের তালে
আমরা প্রতিদিন দিন গুনি তুমি কখন আসবে বলে।
বাবা,এ কদিন বোনের শরীর ভালো নেই।
মা দিন রাত বোনের কাছে,আমি চুপ করে বসে বোনের পাশে
তোমার বানানো গানের সুর, বোন যেন রাজকন্যা,
আয়নাপুরের ফুলে ফলে সাজানো বাগান,
কিন্তু তার মাঝে ডাইনীবুড়ি ইয়া বড় দাঁত,
রাজকন্যাকে কামড়ে দিয়ে মাছি হয়ে পগারপার।
সুদূরপাড়ের রাজপুত্র আসে, হাতে শঙ্খ জল,
ডাইনীকে মেরে রাজকন্যাকে বাঁচায়
এরই মাঝে বোন হাসে, বাবা যেন কাছে ওর।
বাবা, কাল আমার তাসের দেশ;
দেশ ছাড়িয়ে মহাসমুদ্রে তুমি তখন
তোমার টিয়া রাজপুত্র হবে, তাসের দেশে যাবে।
তোমার বানানো মুকুটখানি পরে।
নিশ্ছুপ হলে আমি তখন ও ছক্কা পঞ্জা আর রাজার সামনে,
একটু ভয়, ওই যে দূরে তাকাই যখন অন্ধকারে
জোনাকির আলো আর রাতের গভীরে
বাঁধ ভেঙে দি আমি তাসের দেশে, সামনে দেখি তোমারে।
তুমি তখন জলে জলে, এঘর খালি ওঘর খালি।
কাল থেকে মায়ের গান, বুঝি এলেই এবার বলে।