ভোটের ভাষণ
ভোটের ভাষণ
মাঝের পাড়ার মধ্যমণি মদন মোহন রায়,
ছোকরা বুড়ো, বাপ কি খুড়ো সব্বারি সহায়৷
যে যখনি কাদায় পড়ে, তোলেন মদন বাবু,
সব বিপদই মদন বাণে এক্কেবারে কাবু৷
সিঁধেল চোরে পড়লে ধরা, যায় বা যদি জেল,
জামিন করা মদন বাবুর বাম হাতেরই খেল৷
বিশ্ব বখাট বাদল বিশুই মাধ্যমিকে কাৎ,
মদন দেবেন নকল রেজাল্ট, তাঁর কাছে জল ভাত৷
গরীব চাষী বড্ডো গোঁয়ার, ছাড়ছেনা তার জমি,
থাকতে মদন চিন্তা কিসের? পিটিয়ে দখল ভূমি৷
ভাল্লাগেনা এ জীবন আর, কঠিন এ পথ চলা!
সমাজ সেবী মদন বাবুর মদের দোকান খোলা!!
এহেন লোক মদন মোহন, কর্মে সু মহান!
'দাঁড়াও ভোটে', ধরলো সবে 'মদন মহীয়ান'!!
মুচকি হেসে ঠ্যাং নাচিয়ে মদন হলো রাজী,
নেতা হয়ে এবার আমি মারবো সকল বাজি৷
তেড়ে ফুঁড়ে হাঁকটি পেড়ে ভোটের প্রচার শুরু,
নিরীহ নিপাট মানুষ জনের বক্ষ দুরুদুরু৷
এমনিতেই মদন জ্বালায় জ্বলছে মাঝের পাড়া,
জিতলে মদন হতেই হবে এবার ভিটে ছাড়া৷
যা হোক, সেদিন সন্ধে বেলায় পচিম দিকের মাঠে,
বিরাট মঞ্চ ; ব্যস্ত মদন ভোটের ভাষণ পাঠে |
হাজার লোকে ভর্তি সে মাঠ একটুও নাই খালি,
কারণে আর অকারণে মারছে কেবল তালি৷
এই মাঠেতে রোজ সন্ধেয় কালি ধোপার গাধা,
খোশ মেজাজে চিবোয় সে ঘাস; আজ পেয়েছে বাধা৷
মেজাজ তাহার বিগড়ে আছে, ঘাস পায়নি খেতে
ছিঁড়লো দড়ি, যখন সবাই বক্ত্রিতাতে মেতে. . .
তুমুল জোরে মারলো ঢুঁসো মদনের পশ্চাৎ,
স্তব্ধ ভাষণ, কাঁদন রোদণ, মদন চিতপাৎ৷
পড়লো মদন, ভাঙলো চরণ, কাদা বদন ভরা,
ভোটের ভাষণ মদন বাবুর এবার হলো সারা |