অনাহূত
অনাহূত
প্রভাতী সূর্যটা আস্তে আস্তে তার আলোর চাদরটা
বিছিয়ে দেয় ফুটপাথের উপর...
ছেঁড়া নাইটিটা গায়ে জড়িয়ে, উন্মুক্ত শরীরটা
ঢেকে নেয় লছমি ,
কিন্তু পুরোটা আর ঢাকতে পারে কৈ...
ছোট্ট পাঁচ মাসের শিশুটা, মায়ের ওঠা বুঝতে পেরেই
কেঁদে ওঠে দুধের জন্য।
আস্তে আস্তে উঠে পড়ে তার পাশে শুয়ে থাকা,
দেড় বছর, তিন বছর ও পাঁচ বছরের আরও
তিনটি বাচ্চা..
উঠে দাঁড়ায় রুক্ষ চুল আর বড় দাড়িওয়ালা লছমির প্রেমিক...
কোনও কোনও রাতে দু-তিন জন নাগরও জুটে যায়!
তবু লছমির ঝাঁপি কিন্তু শূন্যই থেকে যায়...
শুরু হয় লছমির দিনের বেলার সংসার সংসার খেলা..
ঝড় আসে,বাজ পড়ে ,বৃষ্টি নামে,
ফুটপাথের উপর দিয়ে যাওয়া মেট্রোরেলের ব্রীজটাই
তখন হয়ে ওঠে ত্রাণকর্তা...
শীতের তীব্রতা আর গ্রীষ্মের প্রখরতা, সবের মধ্যেই
লছমির বাচ্চাগুলো করে সাবলীলতা আর প্রাণবন্ততার
উদযাপন...
শুধু উল্টোদিকের ফুটপাথ থেকে লছমির দিকে তাকিয়ে
থাকে শূন্য দৃষ্টি মেলে, লছমির বৃদ্ধা পাগলী মা, যারও
যৌবনটা কেটেছে লছমির মতো করেই...
বেলা বাড়ে, রাস্তায় দ্রুতগতিতে চলা পথচারীরা,
আড় চোখে তাকিয়ে যায় লছমি আর তার বাচ্চাগুলোর দিকে ...
কারও কারও দাক্ষিণ্যে জুটে যায়, ছেঁড়া জামা বা
পুরনো চাদর,
কিন্তু শারদীয়ায় নতুন জামাকাপড় পাওয়ার স্বপ্ন,
ওদের অধরাই থেকে যায়
কারণ, ওরা যে চিরঅনাহূত