আলোতে মা
আলোতে মা
মনে নেই কবে প্রথম আমার চোখে আলো পড়েছে,
মায়ের কোলে থেকেও হয়তো তাকাতে কষ্ট হয়েছে!
সুমিত্রা যখন কৌশল্যা ও কৈকেয়ীর ভালোবাসা পায়,
মনে মনে ভাবি রাজাদের বেশী বৌ থাকা মন্দ নয়।
ভারি মজা, মুনি ঋষিদের তপস্যা ও মন্ত্রবলে,
বরের হাতের দেওয়া চরু-পায়েস খেলেই ছেলে হয় !
দুভাগের পায়েস অল্প করে খেলেও ডবল লাভ হয়,
সুমিত্রা তো এভাবেই লক্ষ্মণ ও শত্রুঘ্নকে পেয়ে যায়।
কিন্তু একটা কথা বুঝিনি, ভরত ও শত্রুঘ্ন মিলে মিশে,
একসাথে দুজনে কেন ভরতের মামার বাড়িতে রয় ?
আর মন্হরার মাথায় কেন যে এতো দুষ্টবুদ্ধি গজায় !
মনখারাপে মানুষ দশরথের মতোই কেঁদে মরে যায়!
সুতরাং চেষ্টা করতেই হবে, যেন আমার কারণে,
কেউ এতো বেশি দুঃখ, কষ্ট, কখনও না পায় ।
আকাশের রামধনু দেখে, চোখ খুব অবাক হয়েছে,
সূর্যের আলো ভেঙে রামধনু হয়, বাবা মা তা বলেছে।
মায়ের মুখে গল্পের ছলে সীতা-রামের কাহিনী শুনে,
হরধনুকে রামের ধনুক বা রামধনু ভেবেছি মনে মনে,
খুব কষ্ট পেয়েছি কথাটা জেনে, রাম-সীতা যাবে বনে!
চিন্তা কি,সাথে ভাই লক্ষ্মণ যাবে ওদের পাহারা দিতে,
অমন ভাই যে আমারও চাই, মাকে বলি এনে দিতে।
আবার ভাবি, কৈকেয়ী কেন যে মন্থরার কথা শোনে ?
রাম-লক্ষ্মণ, নদীর জল , তুলসী অথবা সেই ব্রাহ্মণ,
দশরথ রাজার শ্রাদ্ধের কথায় কেন চুপ করে থাকেন !
সীতা রামের আপনজন, তিনি কি মিথ্যে কথা কন ?
বনে গিয়েও সীতার কেন সোনার হরিণের লোভ হয় !
লক্ষ্মনের কাটা সেই গন্ডিটা সীতা কেন পার হয় ?
রাম-রাবনের যুদ্ধ শেষে যখন সীতাকে ফিরে পান,
রাম কেন এমন হৃদয়হীন, সীতার অগ্নিপরীক্ষা চান!
সীতা খুব ভালো মেয়ে, তাই এসব অন্যায় মেনেছেন,
রাজ্যে ফিরে প্রজাদের সামনে আবার শুদ্ধ হয়েছেন।
বনে একা লব কুশকে বড় করে আবার সেই কথা!
কেন আর সহ্য করবেন একজন মা এই অপমান !
সীতা পাতাল প্রবেশ করে এভাবেই প্রতিশোধ নেন,
ছেলেদের নিয়ে সারাজীবন রাম একা ভালো থাকুন।
মায়েরা শেষমেশ স্মৃতিতে থাকলেও, জিতে যান।