STORYMIRROR

প্র হে লি কা 🍁

Abstract Romance Others

3  

প্র হে লি কা 🍁

Abstract Romance Others

যদিদং হৃদয়ং মম 🦋

যদিদং হৃদয়ং মম 🦋

8 mins
322

আজকে আমার বিয়ে।


আপনারা শুনে খুব একটা অবাক হচ্ছেন না‌ নিশ্চয়, অবাক না হ‌ওয়াটাই স্বাভাবিক। বিয়ের বয়স হলে বিয়ে তো হবেই। এটাই‌ স্বাভাবিক। 


হ্যাঁ আমার‌ও বিয়ের বয়স হয়েছে, তাই আমার‌ও বিয়ে হচ্ছে। 


সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি বিভিন্নরকম নিয়ম পালন করার পর, এখন বেনারসী আর ভারী ভারী গয়না‌‌ পড়ে,‌ মেক‌আপ করে, মুখে একটা আলগা হাসি নিয়ে, ছাদনাতলায় বরের পাশে বসে আছি।


আর আমার চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব সবাই ঘুরে বেড়াচ্ছে, অনেক ফটোগ্ৰাফার ফটো‌ তুলছে, চারদিকে‌ সব ঝলমলে ব্যাপার স্যাপার।‌ বাবা, মা‌ বাড়ির অন্য লোকেরা ব্যস্ত হয়ে ঘুরে‌ বেড়াচ্ছে এদিক ওদিক। তাদের কত্ত কাজ! বাড়ির বড় মেয়ের বিয়ে বলে‌ ক‌থা! আমার ভাইটাকে অবশ্য দেখতে পাচ্ছি না আমি। কোথায় গেলো কে জানে!! নিশ্চয়ই বসে বসে আইসক্রিম খাচ্ছে!! তাও আবার আমাকে না দিয়ে! 


কিন্তু এতসবের মাঝেও আমার মনটা ভালো‌ নেই‌ জানেন।


একটুও ভালো‌ নেই! 


কারণ আজকে আমার বিয়ে!


আমি এখন‌ও ভাবতেই পারছি না, আমার বিয়ে হতে চলেছে! এই সবকিছু ছেড়ে আমাকে চলে যেতে হবে! নিজের নাম থেকে শুরু করে অভ্যাস, সব‌ই কি পাল্টাতে হবে আমাকে!!

খুব কষ্ট হচ্ছে জানেন, খালি একটাই কথা বারবার মাথায় ঘোরাফেরা করছে, কেন মেয়েদে‌র‌ই sacrifice করতে হয়?

বছরের পর বছর ধরে, যে বাড়িতে থাকলাম, যে মানুষগুলোর সাথে‌ থাকলাম, তাদের সবাইকে ছেড়ে চলে যেতে হবে!! এত স্মৃতি, সব ছেড়ে চলে যেতে হবে!!


সমাজ কেন এত নিষ্ঠুর বলতে পারেন...??


সবচেয়ে বেশী কষ্টটা কার জন্য হচ্ছে‌ জানেন...?? তুর্যর জন্য। 

তুর্য আমার প্রেমিক, আমার ভালোবাসা। তাকে ছেড়ে‌ দিতে হচ্ছে আমাকে!

আমাদের এত বছরের প্রেম! সব, সব কি শেষ হয়ে যাবে!!

আমার এখন‌ও বিশ্বাস হচ্ছে‌না!!


খালি মনে পড়ছে তুর্যর সাথে কাটানো সময়গুলো! কত সুন্দর ছিল সেইসব দিনগুলো!!


মনে পড়ছে সেই দিনটার কথা, যেদিন তুর্যকে প্রথম দেখেছিলাম আমি।


সেদিন কলেজের ফ্রেশার্স পার্টি ছিল। আমার বন্ধুদের অনুরোধে সেদিন সবাই শাড়ি পড়ে কলেজ গিয়েছিলাম।


শখ করে শাড়ি পড়লে কি‌ হবে, শাড়ি‌ সামলানোর ক্ষমতা তো ছিল‌ না!!


স্কুটি টাকে কোনোরকমে পার্কিংয়ে রেখে বেড়িয়ে এসেছিলাম আমি, বন্ধুদের আর তর স‌ইছিল না, তাই ওদের সাথে তাল মিলিয়ে তাড়াতাড়ি যেতে গিয়ে শাড়িটা পায়ে জড়িয়ে খেলাম হোঁচট!!


ভাবলাম মান সন্মান সব গেলো বুঝি!! এত লোকের সামনে যদি হোঁচট খেয়ে পড়ি, তাহলে মানসন্মান আমার হাওড়া ব্রিজে গড়াগড়ি খাবে!!


ভয়ে চোখদুটো বন্ধ করে নিয়েছিলাম আমি, কিন্তু হঠাৎ হাততালির আওয়াজে চোখ খুলে তাকালাম। অবাক হয়ে‌ দেখলাম গোটা কলেজের লোক আমার দিকেই হাঁ করে তাকিয়ে আছে!!


এবার বুঝতে পারলাম কারণটা! 


আমি‌ হোঁচট খেয়ে পড়তে পড়তেও পড়ে যাইনি, তার‌ আগেই‌ দুটো‌ হাত আমাকে ধরে‌ নিয়েছিল, লোকটা আর কেউ না, আমাদের কলেজের ইউনিয়নের জি এস!! 


আর সেইজন্যই ক্যাম্পাস ভর্তি স্টুডেন্টরা হাততালি দিচ্ছে!!...

আমার তো লজ্জায় পাতালে ঢুকতে ইচ্ছা করছিল!  


সামনের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, জি এস ও আমার দিকে কেমন করে যেন একটা তাকিয়ে আছে! আমি তড়িঘড়ি সোজা হয়ে দাঁড়ালাম। জি এস আমাকে ছেড়ে দিয়ে হঠাৎ বলল,

--- "শাড়ি পড়ে সামলানোর ক্ষমতা না থাকলে শাড়ি পড়ো কেন!"

যদিও জি এস কথাটা আস্তেই বলেছিল, তাই আমি ছাড়া আর‌ কেউ‌ শুনতে পায়নি। তারপর আর কাউকে কিছু না বলে সোজা ছুট দিয়েছিলাম বন্ধুদের কাছে!


এই ঘটনার পর থেকেই আমাকে অনেক টোন টিটকিরি শুনতে হয়েছে। কলেজের মেয়েগুলো আমাকে অনেকসময় তো‌ শত্রু অবধি ভাবত!!... যত‌ই হোক, তাদের ক্রাশ ছিল জি এস তুর্যদীপ সেন!!...


এরপর থেকে যতবারই আমি জি এস এর সামনাসামনি হয়েছি, ততবার‌ই একটা সংকোচ ঘিরে‌ ধরেছে আমাকে। অকৃতজ্ঞের মত ধন্যবাদটাও দিতে পারিনি আমি!


তবে আশ্চর্যের ঘটনা হল, কলেজ ক্যাম্পাসের অনেক জায়গাতেই আমি তখন থেকেই জি এস কে দেখতে পেতাম!! কাকতালীয় ভেবে এড়িয়ে গেলেও, কেমন একটা লাগত আমার!!


সেদিন ব্রেক টাইমে লাইব্রেরীতে ঢুকেছিলাম আমি, কিছু ব‌ই নেওয়ার ছিল। হঠাৎ করে কোথা থেকে জি এস এসে আমার সামনের টেবিলে বসে পড়ল। আমি ঢোক গিলে জি এস কে পাত্তা না দিয়ে ব‌ইটার দিকে মনোযোগ দিলাম।


--- "এই যে..."


জি এস এর গলা শুনে আমি ভয়ে ভয়ে ওনার দিকে তাকালাম। 


--- "হ - হ্যাঁ বলুন।"


--- "আমাকে দেখে কি বাঘ ভাল্লুক মনে হয়?"


আমি প্রথমে উপর নীচে মাথা নাড়লাম, জি এস ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই আমি দুপাশে জোরে জোরে মাথা নাড়লাম। মনে মনে বললাম, তার চেয়েও বেশী কিছু মনে হয়!


জি এস চেয়ারে আরাম করে বসে বলল,

--- "সেদিন পড়ে যাওয়ার‌ হাত থেকে আমি তোমাকে‌‌ বাঁচালাম, আর‌ তুমি থ্যাংক ইউ বলা তো দূর, বরং আমাকে ইগনোর করছ প্রতিদিন!! তোমার মনে হয় না, এটা তুমি অন্যায় করছ আমার‌ প্রতি?"


আমি ঢোক গিললাম। আমি কিছু বলার আগেই তুর্য আবার বলল,

--- "এর জন্য তোমাকে শাস্তি পেতে হবে।"


আমি বরাবর‌ই শান্তশিষ্ট একটা মেয়ে। একেতেই এই লোকটার কথা শুনে ভয় পাচ্ছিলাম, এবার ভয় টা আর‌ও বেড়ে গেলো!!


তুর্য আমাকে ভয় পেতে দেখে মুচকি হেসে বলল, 

--- "ভয় পেলে নাকি? আমি তো শুধু তোমাকে আমার সাথে বসে এক কাপ কফি খাওয়ার অফার দিতে চাইছিলাম।"


ব্যাস!!

এখান থেকেই আমাদের বন্ধুত্ব শুরু। আর এই বন্ধুত্ব এক কাপ কফি থেকে রোজ অন্তত একবার করে কফিশপে দেখা করা অবধি টেনে নিয়ে গিয়েছিল আমার সম্পর্ক কে।


একদিন ক্লাসে যাওয়ার সময় কয়েকজন মেয়ে, আমাকে করিডোরে দাঁড় করিয়ে যাচ্ছেতাই ভাবে অপমান করছিল। অপমান করছিল তুর্যকে নিয়ে।


--- "কি দিয়ে ভুলিয়েছিস তুই তুর্যকে? তোর না আছে রূপ, আর না আছে গুন! তা সত্ত্বেও তোর পিছু পিছু কেন ঘোরে তুর্য!"


আমি একটা কথার‌ও জবাব দিতে পারিনি। কারণ আমি খুব শান্তশিষ্ট একটা মানুষ। সবসময় ঝামেলা এড়িয়ে চলতেই পছন্দ করি আমি। তাই মনে মনে একটা কথাই ভেবে নিয়েছিলাম, তো তুর্যর আশেপাশে আর কোনোদিন আসব না আমি।


প্রতিবাদ করেছিল তুর্য! হঠাৎ করে করিডোরে এন্ট্রি নিয়েছিল ও।

--- "সবাইকে নিজের মত খারাপ ভাবিস না রূপা। ও তোর চেয়ে অনেক ভালো। ওর মনটা তোর মত কুৎসিত নয়, বরং ফুলের মত পবিত্র ও।"


রাগী গলায় ধমকে বলেছিল তুর্য ওই মেয়েগুলোর লিডার কে।


আর‌ও অনেক অপমান সেদিন ও করেছিল


আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে তুর্য মানুষটা আসলেই ঠিক কতটা ভালো!!

তাই হালকা করে ক্রাশ তো খেয়েছিলাম,‌ কিন্তু যতদিন এগোতে লাগল, এই অনুভূতি গুলো আর‌ও বাড়তে লাগল!


আমি বুঝতে পারছিলাম, কিন্তু পিছিয়ে আসতে পারছিলাম না!!


কয়েকদিন পর হঠাৎ জ্বর হলো আমার। আর সেই জ্বর ছিল টানা সাতদিন অবধি!! তাই টানা সাতদিন আমি কলেজে যেতে পারিনি। সেইসময় তার কথা সবচেয়ে বেশি মনে পড়ছিল, সেটা হলো তুর্য। 


সাতদিন পর কলেজে গিয়ে তুর্যর যে অবস্থা আমি দেখেছিলাম, তাতে রীতিমত ভয় ধরে গিয়েছিল আমার!


উস্কোখুস্কো চুল, লাল চোখ, আলুথালু পোশাক! সবসময় পরিপাটি হয়ে থাকা তুর্যর এই অবস্থা দেখে আমার নিজের‌ই কষ্ট হচ্ছিল!


তখনই তুর্যের অনুভূতির ব্যাপারে বুঝেছিলাম। ততদিনে আমি এটাও বুঝেছিলাম যে এই মানুষটার মায়াতে জড়িয়ে গিয়েছি আমি! কিন্তু আমি বলতে পারিনি। যত‌ই হোক, আমি তো মেয়ে, তার উপর লাজুক স্বভাব আমার। তাই বুঝেও কিছু বলতে পারিনি। বরং অন্য উপায় ভাবছিলাম, কীভাবে তুর্যকে দিয়ে স্বীকার করানো যায়।


কয়েকদিন পর, আমি আর তুর্য কলেজ শেষে ঘুরতে গিয়েছিলাম একটা পার্কে। দুজন চুপচাপ পাশাপাশি হাঁটছিলাম। তুর্য কিছু একটা ভাবছিল, আমি বললাম...


--- "কী ভাবছ?"


তুর্য ভাবনার জগত থেকে বেরিয়ে এসে বলল...

--- "হুম... না কিছু না। কিছু বলবে?"

--- "হ্যাঁ মানে আমি ভাবছিলাম যে অনেক তো বয়স হলো, এবার একটা প্রেম করতে হবে ভাবছি।"


তুর্য ভ্রু কুঁচকে তাকালো আমার দিকে। আমি অন্য দিকে তাকিয়ে বললাম,

--- "ওই ইকোনমিক্স ডিপার্টমেন্টের পৃথ্বীশ আছে না, ওকে আমার বেশ লাগে, আর ইলা বলছিল যে পৃথ্বীশ‌ও নাকি আমাকে বেশ পছন্দ করে! তাই ভাবছিলাম যে..."


কথাটা বলে তুর্যর দিকে তাকালাম, তুর্য অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে ছিল আমার দিকে! আমি আবার বললাম,

--- "তাহলে প্রপোস টা সেরে আসি, কি ব..."


কথাটা পুরোপুরি ঠিকঠাক বলার আগেই তুর্য আমার দু কাঁধ ধরে ঝাকুনি দিয়ে বলল,

--- "ইয়ার্কি হচ্ছে?"


আমি আমতা আমতা করে বললাম,

--- "অ্যাঁ! মানে! আমি ইয়ার্কি কেন করব!?"

--- "প্রেম করার খুব শখ তোমার তাই না?"

--- "ইয়ে মানে হ্যাঁ তো!"

--- "এই যে, মিস অক্ষিতা বসু, একটা কথা কান খুলে শুনে রাখো, তুমি একমাত্র আমার, আমার মানে আমার। না আমার কোনো ব্যাক্তিগত সম্পত্তি ন‌ও তুমি, তবে আমার হৃদয়ের অধিকারীনী তুমি। তাই তুমি আমার সাথে যা খুশি তাই করো, কিন্তু অন্য কারোর কথা মাথাতেও আনবে না তুমি। তুমি জানো সেই কবে থেকে আমি তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন সাজিয়েছি! তোমার সাথে সংসার করার স্বপ্ন, তোমার সুখে দুঃখে তোমার পাশে থাকার স্বপ্ন,‌ তোমার সাথে খুনসুটি করার স্বপ্ন, তোমার সাথে জীবন সায়াহ্নে বসে সূর্যাস্ত দেখার স্বপ্ন... এই স্বপ্ন গুলো আমি অতি যত্নে সাজিয়েছি। তাই ভুলেও অন্য কারোর কথা ভাববে না তুমি। আমার দুনিয়া জুড়ে যেমন অক্ষিতা, তেমন তোমার দুনিয়াতে আমি আমাকে দেখতে চাই।"‌


আমি লজ্জায় লাজুক হেসেছিলাম সেদিন। কোনোমতেই বলতে পারিনি নিজের মনের কথা। সিনেমা বা গল্পে যেমন দেখায়, গোলাপ ফুল দিয়ৈ হাঁটু গেড়ে বসে প্রপোস, সেসব কিছুই না। শুধুমাত্র কয়েকটা কথা দিয়ে যেভাবে মানুষ টা আমার আগামী জীবনটা সুন্দর করার প্রতিজ্ঞা দিল, তাতে আমি বুঝে গিয়েছিলাম যে আমার চয়েসে কোনো ভুল ছিল না।


--- "এইবার সিঁদুরদানের পালা।"

পুরোহিত মশাইয়ের কথা শুনে আমি উঠলাম!!... কি হবে আমার প্রেমিকের!! তবে সত্যি সত্যিই কি আমি আমার প্রেমিক কে সারাজীবনের মত হারিয়ে ফেলব!!

বৌদিভাই আমার মাথায় লজ্জাবস্ত্র ধরল।

খুব কষ্ট লাগছে, তার সাথে ভয় আর নার্ভাসনেস... সব মিলিয়ে আমার অবস্থা করুণ! নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলাম, কিন্তু পারছি না! "কি হবে আমার প্রেমিকের" এই কথাটাই বারবার মনে হচ্ছিল!


সেই রঙিন বিকেলগুলো! সেই ক্লাস বাঙ্ক করে কাটানো সময় গুলো! সেই কফিশপে কাটানো সময়গুলো!‌ সব হারিয়ে যাবে!!

সংসারের বাঁধনে হারিয়ে যাবে!!



হঠাৎ করে হাতে একটা উষ্ণ স্পর্শ পেলাম আমি। ব্যাস, সমস্ত শরীর আমার এক প্রশান্তিতে ভরে উঠল। এই যে ভরসার হাত, এই‌ হাতটাই খুঁজছিলাম আমি। এই উষ্ণতাটাই চাইছিলাম। সমস্ত নার্ভাসনেস আমার চলে গেল। তার সাথে সাথেই আমার সিঁথি রাঙা হয়ে উঠল লাল টকটকে সিঁদুরে! আমি চোখ বন্ধ করে নিলাম। বুঝতে পারলাম সিঁদুর আমার নাকে চোখে ছড়িয়ে পড়েছে। আমার চোখ দিয়ে এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ল। শাঁখের আওয়াজ বেড়ে গেল। 


আশপাশ থেকে অনেকে বলে উঠল,

--- "নাকে সিঁদুর পড়েছে, মেয়ে স্বামী সোহাগী হবে।" 


--- "চিন্তা নেই অক্ষি, আমি সবসময় তোমার সেই পাগল প্রেমিক হয়েই থাকব। যত‌ই আমাদের বিয়ে হয়ে যাক না কেন, জীবন সায়াহ্নে বসে সূর্যাস্ত দেখার সময়‌ও আমি তখন‌ও তোমাকে খোলা চুলে দেখার আবদার করতে থাকব। তোমার প্রেমিক হয়েই থাকব আমি, আজীবন। আর তুমিও আমার প্রেমিকা হয়েই থেকে যেও।"


আমার লজ্জাবস্ত্রের মধ্যে মাথা ঢুকিয়ে বলল তুর্য। হ্যাঁ স্বামী সোহাগীই হয়েছি আমি। তুর্যর এই কান্ডকারখানা দেখে আশেপাশের সবাই অনেক লেগপুল করতে থাকল, আর আমি মুখ নামিয়ে বসে থাকলাম। 


আমার অনুভূতি এখন বর্ননা করার মত অবস্থায় নেই। সন্ধেবেলা থেকে নিজের প্রেমিক কে হারিয়ে ফেলার যে ভয়টা পাচ্ছিলাম আমি, সেটা এখন দূর হলো।



হ্যাঁ তুর্যর সাথেই আজ আমার বিয়েটা হয়ে গেলো। আমি‌ এখন মিসেস তুর্যদীপ সেন। আমাদের সাড়ে ছয় বছরের ভালোবাসা আজ বিয়ের মাধ্যমে পূর্ণতা পেলো। 


তুর্য আমার হাতটা ছাড়েনি। আর ভবিষ্যতেও ছাড়বে‌ না কোনোদিন সেটা আমি জানি। ও আমার প্রেমিক হয়েই থেকে যাবে‌ সারাজীবন, আমি শুধু এইটাই চাই।



প্রথমে আমার কথা শুনে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন তাই না?

আমিও ভয় পেয়েছিলাম। নিজের প্রেমিক কে হারিয়ে ফেলার ভয় কোন প্রেমিকার হয় না বলুন তো?




Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract