উজান মুখে
উজান মুখে
এম এ পাশ করা মেয়েটি শুধু পঙ্গু মায়ের হাসিমুখ দেখবার জন্য বিয়েতে মত দিয়েছিলো।স্বামীর ইচ্ছে অনুযায়ী স্কুলের চাকরীটা ছেড়ে আজ সুজাতার স্বামীর হেঁসেল ঠ্যালা আর শয্যাসঙ্গিনী হওয়া ছাড়া কোন কাজ নেই । মা না হতে পারায় দিনরাত স্বামীর কাছে সুজাতাকে লাঞ্ছিতা হতে হয়।এই জন্যই কি সে এতদূর পড়াশোনা করলো ? এর সদ্দুত্তর খুঁজে পায়নি সুজাতা । তাই সে মনে মনে একটা সিদ্ধান্ত নিলো ,এবার বন্ধু সৌম্যর সাথে যোগাযোগ করবার সময় এসেছে। সুজাতা এতদিন অনেক সহ্য করেছে, আর না। তার লেখাপড়া,তার চাওয়া -পাওয়ার সঠিক মূল্যায়ন অনিন্দ্য কোনোদিন দিলো না।সৌম্য সুজাতার কলেজ জীবনের খুব ভালো বন্ধু ।সৌম্যর বাবা একজন ব্যবসায়ী। তবুও সৌম্য সবসময় বলতো তার জীবনের একটাই লক্ষ্য সে পড়াশুনা শেষ করে একটা অনাথ আশ্রম খুলবে। সুজাতা কোনোদিন সৌম্যর সে কথায় গুরুত্ব দেয় নি । সৌম্য আজ মেদিনীপুরের একটা প্রত্যন্ত গ্রামের একটা অনাথ আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা ।সুজাতার সাথে প্রায়ই সৌম্যর কথা হত। কিন্তু আজ যে সৌম্যকেই সুজাতার বেশী প্রয়োজন। তাই সবার প্রথমে সৌম্যর কথা মনে পড়তেই সুজাতা নিজের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুছিয়ে স্বামী অফিস বেরোনোর পরই বেড়িয়ে পড়ল। সৌম্য বলেছিলো কোনোদিন কোনো বিপদে পড়লে আমার সাথে যোগাযোগ করিস।
যাবার আগে সুজাতা স্বামী অনিন্দ্যর উদ্দেশ্যে একটা চিরকুট লিখে যায়। তাতে লেখা "অনি আমাকে খোলা আকাশে বাঁচতে দাও"
আজ সুজাতা সৌম্যর অনাথ আশ্রমে শত শত সন্তানের" মা"।