Ushri Chatterjee Bandyopadhyay

Romance Others

3  

Ushri Chatterjee Bandyopadhyay

Romance Others

তৃষিত তিতাস (পর্ব ৩)

তৃষিত তিতাস (পর্ব ৩)

4 mins
566



মঙ্গরগঞ্জ, উত্তরবঙ্গ :

-----------------------------


তিস্তাকে পাশে রেখে উজানের জিপ এগিয়ে যেতে থাকে... রাংপো থেকে জিপ মুনসং-এর পথ ধরে মঙ্গরগঞ্জ-এর দিকে এগোতে থাকে... সরু, চড়াই-উৎরাই পথ বেয়ে জিপটি খুব ধীর গতিতে পেরোতে থাকে প্রায় ১১কিমি পথ... শেষ কয়েক কিমি পথ পাথুরে মাটির পথ... চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রকাশ করতে গেলে বোধহয় অভিধান কম পড়বে... কিন্তু গাড়ির ভেতরে যিনি বসে আছেন, তার এইসবে কোনো আগ্রহ নেই... কপালের রগ চেপে ধরে মাথা নীচু করে সে বসে আছে... গাড়ি যত এগোচ্ছে, তত যেন তার অতীত তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরছে... চারপাশের সবুজকে দূরে ঠেলে ছেঁড়া ছেঁড়া সাদাকালো ছবি তাকে ছুঁতে চাইছে... এই সব ছেঁড়া ছেঁড়া ছবিগুলোকে বিনি সুতোর মালায় গাঁথার জন্য তার উজানের সামনে আসাটা খুব দরকার... কিন্তু কোথায় সে !!! 


হঠাৎই গাড়ি থেকে নামার সময় গাড়ির ভেতর থেকেই উজান দেখে পাহাড়ের উপরের ঢালে সাদা চিকনের সালোয়ার-কামিজ পরিহিতা একটি মেয়ে দোলনায় দোল খাচ্ছে... তার সাদা আর গোলাপী বাদনী ওড়নাটা হাওয়াতে উড়তে উড়তে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে ক্ষণে ক্ষণে নেমে নেমে আসছে, সারা পাহাড়টা কল্লোলিত হচ্ছে তার হাসির হিল্লোলে... উজান মেয়েটার মুখ দেখার চেষ্টা করে, কিন্তু গাছের আড়াল আর মেয়েটি উল্টো দিকে মুখ করে থাকায় উজান মেয়েটার মুখ দেখতে পায় না... কিন্তু পাহাড়ি হাওয়া যেন তার হয়ে উজানকে ছুঁয়ে গেল... এই হাওয়া, এই স্পর্শ উজানের খুব চেনা... এই চেনা হাওয়া উজানকে আগেও ছুঁয়েছে... নিজেকে সামলে নিয়ে ক্যাম্পের দিকে পা বাড়ায় উজান... ক্যাম্পের সামনে এসে হঠাৎই উজানের পা থমকে দাঁড়ায়... থেমে যায় একটা গান কানে আসায়... সেই গলা, সেই সুর, সেই গান... তাহলে উজান ভুল ছিল না- সে আছে... সে এখানেই আছে... গানের সাথে সাথে ছেঁড়া ছেঁড়া ছবি জোড়া লেগে ধোঁয়া ধোঁয়া আলোকে যুবতীটি উজানের সামনে এসে দাঁড়ায়... 


Voice Over Song :

----------------------------


Khoi Sab Pehchaane Khoye Saare Apne...

Samay Ki Chhalni Se Gir Girke...

Khoye Saare Sapne....

Khoi Sab Pehchaane Khoye Saare Apne...

Samay Ki Chhalni Se Gir Girke....

Khoye Saare Sapne...

Aur Is Pal Mein Koi Nahin Hai....

Bas Ek Main Hoon Bas Ek Tum Hoo...

Kuchh Naa Kaho Kuchh Bhi Naa Kaho...


         (গান সৌজন্য : 1942 A Love Story)


কিছু ছেঁড়া ছেঁড়া সাদা কালো ছবি :

-------------------------------------------------


যুবক : এই 'में-तुम' টা কে !!!


যুবতী : মা বলে 'তুম'টা নাকি আমার রাজপুত্তুর... তার সাথে এটাও বলে, আমার রাজপুত্তুর আমাকে কি তুলবে !!! আমিই আমার রাজপুত্তুরকে তুলে নিয়ে পালাব... হি ... হি ... হি.


যুবক : অসহ্য ... বাসুদা যে তোমাকে কি সহ্য করে কে জানে !!! সারাদিন শুধু বকবক বকবক..


যুবতী : শুধু বাসুদা !!! কেন আপনি করেন না বীরেন বাবু !!!


 মুখ ঘুরিয়ে ছোট্ট করে জিভ কেটে ফিক করে হেসে ফেলে...


যুবক : চুপ করুন ... হাসছে আবার... ওইসব বাবু টাবু বলবেন না তো আমাকে...


যুবতী : ঠিক আছে... ঠিক আছে... বীরু... বীরু... বীরু বাবু... 


যুবক : অসহ্য..


যুবতী : আরে শুনুন শুনুন... আমাকে ফেলে এত লম্বা লম্বা পা ফেলে হাঁটা লাগালেন যে.... আমি হাঁটতে পারছি না তো... আরেএএএ... দাঁড়ান... ওই দেখো... কেমন দুমদাম হাঁটা লাগায় !!! শুনু.... আহহহহ... বীরুউউউ...


যুবক : (যুবতীর চিৎকারে পেছন ফিরে) রুক্মিণীইইই...


মঙ্গরগঞ্জ, উত্তরবঙ্গ :

-----------------------------


উজান : রুক্মিণীইইইই....


রুক্মিণীকে ধরার জন্য গতজন্মের অভ্যেসবশতঃ হাত বাড়ায় উজান... কিন্তু সে তো অতীত... বর্তমানে ফিরে নিজেকে সামলাতে সময় লাগে উজানের... একটা গাছে এক হাত দিয়ে ঠেস দিয়ে অন্য হাত কোমরে দিয়ে হাঁপাতে থাকে.... হঠাৎই দেখে উজান মেয়েটা নেই... উজান ইতি উতি, পাহাড়ের চড়াই-উৎরাই-এ খুঁজতে থাকে মেয়েটাকে... নাহহহ, কোথাও নেই... সত্যিই কি ছিল !!! নাকি উজানের সাদা-কালো অতীত রঙীন হয়ে উজানের সামনে ধরা পড়ল... বলে গেল, সে এসে গেছে... তার আসার সময় হয়ে গেছে... মনটা ভারি হয়ে যায় উজানের.... আবার সেই সুর, সেই গলা, সেই গান ভেসে আসে কানে... ঠিক যেন উজানের মনের কথা বলছে....


Voice Over Song :

-----------------------------


Humne Jab Dekhe They Sunder Komal Sapne...

Phool Sitaare Parvat Baadal...

Sab Lagte They Apne...

Humne Jab Dekhe They Sunder Komal Sapne...

Phool Sitaare Parvat Baadal...

Sab Lagte They Apne...

Aur Is Pal Mein Koi Nahin Hai...

Bas Ek Main Hoon Bas Ek Tum Hoo...

Kuchh Naa Kaho Kuchh Bhi Naa Kaho...


      (গান সৌজন্য : 1942 A Love Story)


যুবতী : এটাই নিয়তি !! আমি আর তুমি যে যেখানেই থাকি না কেন ভাগ্য বারবার আমাদের মুখোমুখি দাঁড় করাবেই করাবে !! এই মঙ্গরগঞ্জ, যেখানে আমাদের ভালবাসার গল্প শুরু হয়েছিল এতদিন পর আবার সেখানেই আমাদের দেখা হলো .... একেই বলে 'Destiny'....


উজান - ভালোবাসা !! কিসের ভালোবাসা..আমি তোমাকে ভালবাসি না... তুমি আমাদের শত্রু রায়বাহাদুর হরিদয়ালের মেয়ে.... তোমাকে ভালোবাসার প্রশ্নই ওঠে না...


যুবতী: সত্যি !! মন থেকে বলছো ?? তাই !!!


উজান : Idiotic কথাবার্তা ছেড়ে আমার.... আমার সামনে এসে দাঁড়াও... 


যুবতী : এই তো আমি....


যুবতী উজানের চোখ হাত দিয়ে ঢাকা দেয়.... তারপর আস্তে আস্তে সরিয়ে দেয়... উজান দেখে দূর থেকে একজন PPE পড়ে তার দিকে এগিয়ে আসছে.... উজানকে নমস্কার করে বলে....


Welcome Sir.... আমি ডক্টর হিয়া মিত্র... মঙ্গরগঞ্জে আপনাকে স্বাগত... আসুন আপনাকে ক্যাম্পে নিয়ে যাই....


(উজানের সামনে এসে দাঁড়ালো হিয়া !!! নাকি বীরেন ওরফে বীরুর সামনে রুক্মিণী !!! কেমন হবে উজান আর হিয়ার প্রথম দেখা হওয়া !! কি অপেক্ষা করছে ওদের দুজনের জন্য !! উজান কি তার ভালোবাসাকে চিনতে পারবে !!! আর হিয়ারও কি অপেক্ষার শেষ হবে !!! মনে পড়বে এই দুজনের সবকিছু !!! কি বলো তোমরা !!!)




Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance