ত্রিভুজ ( দ্বিতীয় ভাগ )
ত্রিভুজ ( দ্বিতীয় ভাগ )
নুপুর শুয়ে শুয়ে ফোন দেখছিলো হঠাৎ তার সময়ের প্রতি খেয়াল হতে দেখে ঘড়িতে সাড়ে পাঁচটা বাজে। শিতের বেলা সন্ধা একটু আগেই হয় তাই পশের বাড়িতে শঙ্খধ্বনি বেজে উঠলো। নুপুর বিছানা ত্যাগ করে জামাকাপড় বদলে চলে গেল ঠাকুর ঘরে। আজ বাড়ির সকলে মিলে তার একমাত্র নোনদের ছেলে দেখতে গিয়েছে। কিছুটা দুরের রাস্তা তাই ফিরতে ফিরতে একটু দেরি হয়ে যাবে, পূজার কাজ সম্পূর্ণ করে নুপুরকে আবার রাতের খাবার বানাতে হবে। তার শশুর - শাশুড়ি অবশ্য তাকে নিয়ে যাবে বলেছিলেন সেই যেতে চায়নি কারণ তার নতুন নতুন রান্না করতে বেশ ভালোই লাগে সকলে বাড়িতে থাকলে সেই সুযোগটা তার কপালে জোটেনা বাড়ির কেউ তাকে সহজে রান্না ঘরে ঢুকতে দেয়না। শাশুড়ি বলে রান্নাঘরে বেশি গেলে বৌমার গায়ের রং কালো হয়ে যাবে। আজ সারাদিন ধরে অনেকগুলো রেসিপি মুখস্থ করেছে সে পাশাপাশি সেগুলোকে ডাউনলোড করেও রেখেছে কারণ যদি প্রয়োজন পরে তাহলে ঝটপট সেখানথেকে দেখে নিতে পারবে। ঠাকুর ঘরের কাজ প্রায় শেষের পথে হঠাৎ বাইরে একটা গাড়ির ব্রেক করবার শব্দ। নুপুর বুঝতে পারে তার হাসবেন্ট এসে পড়েছে। সে ধুপটাকে ধুপদানিতে গঁজু ঠাকুর প্রণাম শেরে বেড়িয়ে আসে ঠাকুর ঘর থেকে।
দরজা খুলতেই সামনে প্রদ্যুতকে দেখতে পায় সে। নুপুর তার পাশদিয়ে বাইরের দিকে একটু দেখে নিয়ে জিঙ্গাসা করে যাকে আনবেন বলেছিলেন সে বুঝি আসেনি? কারণ বাইরে কাউকে দেখতে পায়না সে সুধু গাড়িটাকে দেখতেপায়, ড্রাইভার কাকা প্রথমে গ্যারেজ খোলে তারপর গাড়িটা নিয়ে গিয়ে সেখানে ঢোকায় ফলে কিছুটা সময় গাড়িটা তাদের দরজার সামনে থাকে। প্রদ্যুত বলে এসেছে বইকি গেস্ট রুমটা গোছগাছ হয়েছেতো? নুপুর বলে হয়েছে বাবা হয়েছে আমাকে বলেগিয়েছ আর সেই কাজ হয়নি এমনটা কখনো হয়েছে নাকি আগে তুমি ওনাকে সেখানে নিয়ে যেতেই পারো। প্রদ্যুৎ বলে নিয়েতো যাবোই তার আগে দুইকাপ চা করে ফেল চা খেতে খেতে নতুন অতিথির সাথে তোমার আলাপ করিয়ে দেব কারণ ওকে খেয়াল তোমাকেই রাখতে হবে যে। নুপুর বলে আচ্ছা ওনাকে নিয়ে এসে ভিতরে বসুন আমি চা বানিয়ে আনছি দুই মিনিটে।
নুপুর চা বানাতে যায়, প্রদ্যুৎ গাড়িথেকে বিশালকে নাবিয়ে নিয়ে আসে তাদের বাড়িতে। ছিলেটির আসল পরিচয় না পাওয়া যাওয়ার ফলে প্রদ্যুৎ তার নাম রেখেছে মানিক। প্রদ্যুৎকে বেশ পছন্দ করে মানিক। তাদের মধ্যে রোগী ডাক্তারের চাইতেও অধিক একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। দুজনে বেশ হেঁসে হেঁসেই কথা বলছিল, নুপুর চা নিয়ে সেখানে প্রবেশ করে বিশাল কে দেখতে পেয়ে থমকে দাঁড়ায় কয়েক মুহুর্ত, তারপরই সে সঙ্গা হারিয়ে মাটিতে পড়ে যায়, হঠাৎ এইভাবে সঙ্গা হারাতে দেখে ভয় পেয়ে যায় প্রদ্যুৎ। ছুটে গিয়ে তাকে ধরে সে, ততক্ষণে কাপ প্লেট, চা সবটাই মাটিতে গড়াগড়ি দিচ্ছে। প্রদ্যুৎ তাকে তাদের বেডরুমে নিয়ে গিয়ে শুয়ে দেয়। বাইরে এসে বলে মানিক তুমি একটু এখানেই বস আমার স্ত্রী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে ওকে একটু প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তোমায় তোমার রূমে পৌঁছে দেব কেমন। বিশাল ওরফে মানিক ঘারনেড়ে সন্মতি জানায় তাকে।
চলতে থাকবে...........

