তিতাস ( পর্ব -১০ )
তিতাস ( পর্ব -১০ )
তিতাস
( পর্ব -১০ )
কলমে - কৃষ্ণ ব্যানার্জী
কাকা বাবু বাজার থেকে ফিরলেন দীপমাল্য অলরেডি কুকের পোশাক পরিধান করে প্রস্তুত। সব কিছু দেখে মনে হচ্ছে আজ একটা বিশাল কিছু ঘটতে চলেছে। দীপমাল্যকে ঐ পোশাকে দেখে কিছুটা অন্যরকম লাগছে। কাকাবাববুর হাসি পেলেও অতি কষ্টে চেপে নিয়ে বললেন এটা কি পড়েছো দাদাবাবু। দীপমাল্য বল্য কাকাবাবু এই পোশাকটা পরিধান করলে মনে একটা জোর আসবে, একটা অনুপ্রেরণা পাবো কারণ এর আগেতো কখনো এতো বেশি রান্না একসঙ্গে করিনি। কাকাবাবু বলেন তা বেশ আমিকি কোন কাজে আসতে পারি। একটু ভেবে দীপমাল্য বলে কাকাবাবু আপনি আলু, পেঁয়াজ এসব কাটতে পারেন তো? কাকাবাবু মাথা নেরে সন্মতি জানাতে দীপমাল্য বলে ব্যাস ওটুকু সহযোগিতা করলেই অনেক আপনি ওগুলো কেটে দিলেই হবে। এতটা উৎকন্ঠা আগে কখনো দেখেননি কাকাবাবু। কাকাবাবুর মনে একটা প্রশ্ন ঘুরঘুর করতে থাকে কে এই তিতাস একটি বার তাকে দেখতে হয়। ইতা পূর্বেও এবাড়িতে বহু মহিলা এসেছে কথাবার্তা বলেছে আবার চলে গিয়েছে হয়তো খুব বেশি হলে একটা চা, দুটো বিস্কিট কিন্তু এই মেয়েটি যেন দাদাবাবুকে হিলিয়ে রেখে দিয়েছে যাক দুপুরে দেখা হয়েই যাবে এই বলে সে কর্মে মনো দেন আর দীপমাল্যকে চোখে চোখে রাখে যাতে রান্না করতে গিয়ে কোন গোলমাল না পাকিয়ে বসে।
দীপমাল্য মাংস ধুয়ে টুয়ে রেডি রান্না ঘরে গ্যাসের পাশে সেটাকে রেখে এসে হাজির হয় কাকাবাবুর কাছে। পেঁয়াজ কাটতে গিয়ে কাকাবাবুর নাজেহাল অবস্থা। চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল পড়ছে। দীপমাল্য একটু মজা করেই বলে কি কাকাবাবু আপনার কি কাকিমার কথা মনে পরছে তেমনটা হলে ডেকে নিতে পারেন। কাকাবাবু বলে আপনার তো তেমনটাই মনে হবে বুড়ো বয়সে পেঁয়াজ কাটাচ্ছেন আবার মজা করছেন। দীপমাল্য বলে যাক আপনার কাজ কতটা হলো এইতো হয়ে গিয়েছে আর একটা পেঁয়াজ দিলেই শেষ। দীপমাল্য বলে ওগুলোকে পিশতে হবে মাংস ধোয়া হয়ে গিয়েছে মাথাদিয়ে ডাল রেডি এবার মাংসটা হলেই হবে। কাকাবাবু বলে আর ভাত? দীপমাল্য বলে ওটা শেষে করবো নইলে ঠান্ডা হয়ে যাবে আপনি ঝটপট করুন। কাকাবাবু বলে কাটা শেষ পিশায়ের দ্বায়ীত্বটা আপনাকেই নিতে হবে কারণ আপনার ঐ যন্ত্র আমি চালাইতে পাড়িনা। দীপমাল্য বলে পারিনা বললে হবে সময় বদলাচ্ছে যুগ বদলাচ্ছে আপনাকেও বদলাতে হবে আশুন আমার সাথে শিখিয়ে দিচ্ছি।
অপরদিকে তিতাস প্রায় প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে একটু হালকা মেকাপ না দিলেই নয়, যদিও তিতাস এ সব একেবারেই পছন্দ করেনা কিন্তু সময়ের সাথে চলতে গেলে একটু আধটুতো করতেই হবে। পথে একটা ছোট্ট কাজ রয়েছে মিনিট দশেক সময় লাগবে। ঘড়িতে এখন সারে এগারোটা বাজে এখনো মিনিট দশেক লাগবে তার তৈরি হতে কালকে যে সময় সে দীপমাল্যকে দিয়েছিল তার চাইতে বেশ কিছুটা আগেই পৌঁছেযাবে সে। দীপমাল্য অবশ্য বলেছিল ও সারেবারোটার মধ্যে খেয়ে নেওয়াটাই পছন্দ করে। তিতাস বারোটার মধ্যে পৌঁছেগেলে সঠিক মসয়ের মধ্যেই সবটাই হয়ে যাবে। তিতাসের মনে হলো দীপমাল্যকে একটা ফোন করে দেওয়া উচিৎ তাই সে ফোন করলো। দীপমাল্য তখন ভাতের মার গালছে । হাড়িটা উপর করেদিয়ে সে ফোনটা ধরে। হা তিতাস বলো? তার মানে তিতাসের নাম্বারটা সেভ করে রেখেছে দীপমাল্য। দীপমাল্য আবার জিঙ্গাসা করলো কিছু বলবে আসছোতো? তিতাস বলে আসছি একটু পরেই বেরচ্ছি পথে একটা সাইবার ক্যাফেতে যাবো মিনিট দশেকের কাজ আছে তারপর ওখান থেকে আপনার বাড়ি। দীপমাল্য বলে আমার রান্নাও হয়ে গিয়েছে শোনো আমার গাড়ি তোমার বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে আছে ওটাতে উঠে পরবে কেমন। তিতাস বলে এটা আপনি কি করেছেন এটুকু রাস্তা হেঁটেইতো যাওয়া যেতো তাই না। দীপমাল্য বলে আমার বিগ ফ্যান বলে কথা এটুকু ভদ্রতাতো আমার করা উচিৎ তাই দয়াকরে গাড়িতে উঠে পড়বেন তাহলে আমি খুশি হবো। তিতাস বলে ঠিক আছে বাবা আমি আপনার গাড়িতেই যাবো এবারতো রাখুন নইলে কিন্তু দেরি হয়ে যাবে। দীপমাল্য বলে ইটস ওকে তুমি তাহলে বারোটার মধ্যে চলে আসছো কেমন। তিতাস বলে আশাকরছি এবার রাখুন। দীপমাল্য বলে ও ইয়েজ এই বলে ফোনটা রাখে। কয়েক মুহুর্তে দীপমাল্যর মুখের পরিকাঠামোটাই বদলে যায় বিষয়টা এতোখন ধরে কাকাবাবু বিষয়টা ফলোয়াপ করার পর ছোট্ট করে বলে কি দাদাবাবু মনটা আজ বেশ উৎফল্য মনে হচ্ছে। দীপমাল্য কাকাবাবুর ইঙ্গিত বুঝতে পারে সে বলে না না তেমন কিছুই নয় আপনি যেমনটা ভাবছেন।
চলবে…………………..