তিন্নি (পর্ব ৬)
তিন্নি (পর্ব ৬)
“ তুই তো আনন্দে আত্মহারা তাই না? শুভমের টিম মেমবার......উউউফফফ! শুভম কি হ্যান্ডসাম না? ” মৃগ নিজের মনেই বলে যাচ্ছিল।
তিন্নি কোন কথা না বলে চুপ করে রইল। তিন্নি যে কোন উত্তর দিচ্ছে না সেটা প্রথমে ও খেয়ালই করেনি। ও নিজের মনে কথা বলে চলল। খানিকক্ষণ বাদে যখন ও বুঝতে পারলো যে তিন্নি সেভাবে উৎসাহ দেখাচ্ছেনা তখন ও বলল,” ,” কি হয়েছে? তোর মুখটা এমন শুকনো দেখাচ্ছে কেন?”
তিন্নি ধীরে ধীরে বলল, “ আমি আজ রোজিকে ...... আচ্ছা মৃগ এই ফ্ল্যাটে ছেলেদের আসার অনুমতি আছে?”
মৃগ খানিকক্ষণ চুপ করে রইল, তারপর ধীরে ধীরে বলল,” সত্যি কথা বলতে কি এখানে ছেলেদের আসার কথা নয়। কিন্তু সব সময় কি নিয়ম মানা হয় ? তুই রোজি কে কার সাথে দেখেছিস? “
“ একজন মাঝারি হাইটের লোক। মাথার চুল কোঁকড়া......”
“ বুঝেছি, এ হল ওর কেরালাইট বয় ফ্রেন্ড। এ কেরালাতে একটা মাল্টি ন্যাশনাল কম্পানিতে কাজ করে। মাঝে মাঝে এখানে আসে। যখন আসে তখন রোজির সাথে দেখা করতে আসে। ওর বাঙ্গালুরুতেও একজন বয়ফ্রেন্ড আছে। “
“ ওর কতজন বয় ফ্রেন্ড আছে?” তিন্নির চোখগুলো গোল গোল হয়ে উঠলো।
“ এরা কেউই ওর আসল বয় ফ্রেন্ড নয়। সব টাইম পাস। তারওপর ও অনেক গুলো ডেটিং সাইটেরও মেম্বার। শুনতে পাই ওর বসের সঙ্গেও ওর নাকি কি সব ইনটু মিন্টু আছে। “
তিন্নি একটা ভীষণ রক্ষণশীল পরিবেশ থেকে এসেছে । ওর কাছে এই গুলো খুব নতুন। ওর বন্ধুদের অনেকেরই বয় ফ্রেন্ড আছে। কিন্তু তারা এতোটা ফরওয়ার্ড নয়।
“ তা ও কি সবাইকে নিয়ে বাড়ীতে আসে?”
“ না না তা কেন? ব্যাঙ্গালুরুতে কি হোটেলের অভাব? তুই ছাড় না ওর কথা। তোর প্রথম দিনের অভিজ্ঞতার কথা বল। শুভমকে কেমন লাগলো?” মজার ভঙ্গিতে ভুরুটা নাচালো মৃগ।
“ ঠিকই লাগলো। “ তিন্নি বলল মৃদু স্বরে।
“ ঠিক! জাস্ট ঠিক? জানিশ ওর গ্রুপে ঢোকার জন্য কত মেয়ে পাগল! ইস আমি যদি তোদের মত ইঞ্জিনিয়ার হতাম!” তিন্নির বিছানায় ধপাস করে শুয়ে পড়লো মৃগ।
ওর হাব ভাব দেখে হেসে ফেলল তিন্নি।
এরপর ওদের আলোচনায় শুধু শুভম আর শুভম। শুভম কত বুদ্ধিমান, ও কাজে কত দক্ষ, ওর কত সুনাম, ওকে দেখার জন্য কত মেয়ে ক্যানটিনে আর করিডোরে দাঁড়িয়ে থাকে ইত্যাদি ইত্যাদি। শুধু তাই নয় মৃগ শুভমের পুরো বায়োডাটা বলে দিল। শুভম দিল্লির ছেলে। হাইট ছ ফুট আধ ইঞ্চি । বাবা পাঞ্জাবী। মা বাঙালি। ওর একটা দিদি আছে। শুভম কানপুর আই আই টি থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং করে আমেরিকা থেকে এম এস করে এসেছে। ওর প্রিয় পোশাক সাদা ফুল শার্ট আর অ্যাকুয়া মেরিন জিন্স। শার্টের হাতা ও সাধারণত অর্ধেকটা গুটিয়ে রাখে। টাই পরা খুব একটা পছন্দ করে না। শার্টের গলার বোতাম লাগায় না। প্রিয় পারফিউম ভার্সেস।
শুভম সম্বন্ধে এত কথা বলে মৃগ একটু দম নিল। তারপর তিন্নিকে জিজ্ঞাসা করলো,” তিন্নি কেও বিস্তারিত বর্ণনা দিতে হল শুভমের সঙ্গে কাটানো সময়ের। তিন্নি বুঝলো মৃগ শুভমের অনুরাগিণীদের মধ্যে একজন।
সেদিন কার রাতের খাবার ওরা এক সঙ্গেই খেল।এবার তুই বল। কি হল অফিসে?”
(ক্রমশ...)