STORYMIRROR

Sharmistha Banerjee

Abstract Others

4  

Sharmistha Banerjee

Abstract Others

স্ট্রেস

স্ট্রেস

3 mins
312

  মানসিক ভারসাম্যহীন বাবা মা'র উপর ছেলের শারীরিক নির্যাতনের কাহিনী প্রমান সমেত শোনার পর বিচারক ছেলেটিকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণা করলেন। আর দেবাদৃতের মুকুটে জয়ের আরও একটি পালক যুক্ত হল।


  দেবাদৃত রায়। শহরের নামকরা আ্যাডভোকেটদের অন্যতম। 

কোর্টের কাজ শেষ করে মার্সিডিজে বসে বাড়ি ফিরতে ফিরতে নিজের বাবা মা'র কথা খুব মনে পড়ছিল তার। এই কেসটার জন্য এই ক'মাস প্রচুর ছোটাছুটি করতে হয়েছে। কাজের চাপে ঠিক করে কথাও বলা হয়নি বাবা মা'র সাথে। দেবাদৃতের বাবা মা গ্রামের বাড়িতে থাকেন। অলি মাঝে মাঝেই দেখা করে আসে। অলি রায়। দেবাদৃতের স্ত্রী। কিন্তু আজ হঠাৎ করেই দেবাদৃতের নিজের মা বাবার কথা খুব মনে পড়ছিল। হয়তো এই বৃদ্ধ দম্পতির কেসটা নিয়ে এতদিন কাজ করার জন্য। 


  বাড়িতে ঢুকে জেতার খবর অলিকে দিতে সে বলল, "যাক, তাহলে কাল ইরার বিয়েতে তুমিও যেতে পারবে"

"তা পারব" বলল সে।

ইরাবতী মিত্র। দেবাদৃতের পিসতুতো বোন। কাল তারই বিয়ে উপলক্ষ্যে ওদের দেশের বাড়ি যাওয়ার কথা। ওরা প্রথমে গ্রামের বাড়িতে যাবে। সেখান থেকে মা বাবা কে নিয়ে সপরিবারে ইরার বিয়েতে উপস্থিত হবে। তাই নৈশভোজ সেরে ওরা তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ল। 


  দেবাদৃত ঘুম থেকে উঠে দেখল অলির অফিসে কাজ থাকায় ও অফিস বেরোল। আর বলে গেল সে অফিস থেকে সোজা ইরার বিয়েতে পৌঁছে যাবে। দেবাদৃত তাই রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়ল। অনেক দিন পর মা বাবার সাথে দেখা হবে আজ। ঘন্টা দুই লাগল। বাড়িতে ঢুকতেই মা বাবার কি আনন্দ। দুপুরের খাওয়া দাওয়া সেরে ইরাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিল ওরা। এই গাড়িটা নতুন নিয়েছে সে। গল্প করতে করতে গাড়িতে যাচ্ছিল ওরা। হঠাৎ করেই একটা বাচ্চা গাড়ির সামনে চলে আসে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে ড্রাইভার গাড়িটা নিয়ে একটা গাছে ধাক্কা মারল। সিটবেল্ট থাকায় ড্রাইভার বা দেবাদৃতের সেরকম কিছু হল না। কয়েকটা কাঁচের টুকরো এসে মুখে আর হাতে লাগল। আশেপাশের লোকজন এসে ওদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে ফার্স্ট এইড করে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওর মা বাবার মাথায় সামান্য ব্যাথা লাগলেও সেরকম কিছু হয়নি। তারপর ওরা মা বাবাকে নিয়ে ওদের কাছে চলে আসে। কিছুদিন পর থেকেই অদ্ভুত কিছু ঘটনা লক্ষ্য করে ওরা। একদিন অলি চা করছিল। তখন দেবাদৃতের মা এসে হঠাৎ করেই গরম চায়ের মধ্যে হাত ডুবিয়ে দেন। কখনো ঠাকুরঘরে বেড়ালকে ভাত খাওয়ান। বাবাও যখন তখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। দেবাদৃত অলি খুঁজে নিয়ে আসে। ওরা ঠিক করে বাবা মাকে ভালো কোনো ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে।


  হয়তো দুর্ঘটনায় মাথায় কোনওভাবে আঘাত পেয়ে দুজনের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে। এইরকম একদিন দেবাদৃত বাবাকে খুঁজতে খুঁজতে দেখল ওর বাবা ওদের বাড়ির সামনের খুব ব্যস্ত একটা রাস্তার মধ্যিখানে দাঁড়িয়ে আছে। রাস্তায় ভীষন স্পীডে গাড়ি ছুটছে। ও "বাবা, বাবা" বলে চিৎকার করতে করতে দেখল উল্টো দিক থেকে একটা গাড়ি ওর বাবার দিকে এগিয়ে আসছে। ও ছুটে গিয়ে কোনওভাবে বাবাকে সরিয়ে নিল।


  আর ঠিক সেই সময় ও একটা ধাক্কা অনুভব করল। কেউ যেন ওকে ঠেলছে। ও দেখল অলি ডাকছে, "দেবাদৃত, কখন থেকে ডাকছি তোমায়। আজ আমাদের ইরার বিয়েতে যেতে হবে তো। তার আগে গ্রামের বাড়িতে মা বাবার কাছেও যেতে হবে। ঘুম থেকে ওঠো এবার..."


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract