Sharmistha Mukherjee

Romance Others

4  

Sharmistha Mukherjee

Romance Others

সময় প্রবাহমান 🧭তৃতীয় পর্ব

সময় প্রবাহমান 🧭তৃতীয় পর্ব

18 mins
599



রাজদীপ বলে , " তুই হলে কোন জায়গাটা পছন্দ করতিস ? মানে পাহাড় না সমুদ্র , দেশ না বিদেশ ? " গিনি বলে , " আমার পছন্দ জেনে লাভ নেই রাজ , তবে আমার সবসময় পছন্দের জায়গা সমুদ্র । সমুদ্রের কোল ঘেঁষে ওঠা সূর্য , আবার সমুদ্রের কোলেই ধীরে ধীরে ডুবে যাওয়া সূর্য দেখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে । তোর মনে আছে আমাদের ক্লাস টুয়েলভের পূজার ছুটিতে আমরা সবাই মিলে মন্দারমণি গিয়েছিলাম । সেইসব দিনগুলো আমি আজও খুব miss করি । "


 রাজদীপ বলে, " সেই সব দিন কখনও ভোলার নয় গিনি । তবে মনে রাখার মতো বিশেষ কিছু নেই বললেই চলে " এই বলেই গিনির মুখের দিকে তাকিয়ে দ্যাখে গিনি করুণভাবে ওর মুখের দিকেই তাকিয়ে আছে । গিনিকে করুণভাবে নিজের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে রাজদীপ বলে , " এই গিনি কি হোলো তোর ? আজকে উঠতে হবে বুঝলি, অনেক কাজ পড়ে আছে । ওহ্ ! ভালো কথা, শাঁওলির সাথে দেখা হয়েছিল গত কাল । শাঁওলি বিয়ের কথা জানালো , খুব ভালো খবর । ডিসেম্বর মাসে শাঁওলির আর জানুয়ারিতে আমার বিয়ে । তুই কবে বিয়ে করছিস ? "  


রাজদীপের কথায় একটু হেসে গিনি বলে ," তোরা এক এক করে আগে সাদীকা লাড্ডু খেয়ে দ্যাখ কেমন লাগে তারপর না হয় আমি খাবো । " এই বলে কিছুটা জোর করেই হাসতে থাকে । সেদিন কথা শেষ করে দুজন যে যার মতো নিজেদের বাড়ির পথে যাত্রা করে । এইভাবে শাঁওলির বিয়ের কেনাকাটা , বাকী সমস্ত কিছু জোগাড় করা আর অন্যদিকে রাজদীপের বিয়ের ডেকোরেশন নিয়ে চিন্তাভাবনা এই নিয়েই গিনির বেশ কিছুদিন কেটে যায় । এর মধ্যে শাঁওলির সাথে একদিন স্কুলের পাশের গলির ক্যাফেতে দেখা করে গিনি । শাঁওলি নিজেই খুব দরকার বলে দেখা করতে বলেছিল । সেদিন শাঁওলি বলে , " গিনি একটা সমস্যায় পড়েছি , একটা solution বের কর শীঘ্রই । "


গিনি বলে , " সেতো বুঝলাম ম্যাডাম , কিন্তু সমস্যাটা ঠিক কি সেটা না বললে সমাধান বের করবো কি করে ! "  


শাঁওলি বলে , " আর বলিস না , আমার সব বন্ধুরা মিলে বায়না ধরেছে একটা ব্যাচেলর পার্টি দিতেই হবে । কিন্তু কথা হচ্ছে পার্টিটা দেবো কোথায় ? "  


গিনি বলে , " কি বলছিস , মেয়েদের ব্যাচেলর পার্টি ? "  


শাঁওলি বলে , " ধূর ! শুধু মেয়েদের হতে যাবে কেনো , ছেলে - মেয়ে সবাই মিলে । আমাদের স্কুলের কিছু আর আমার নিজের কিছু বন্ধুবান্ধব ।এছাড়া আমার কয়েকটা ভাই-বোন এই ধর্ সব মিলিয়ে মোটামুটি ত্রিশ জনের মতো । কিন্তু পার্টি কোথায় দেবো সেটাই ভেবে পাচ্ছি না । তুই একটা জায়গা ভেবে ঠিক কর গিনি । "  


গিনি কিছুক্ষণ ভেবে তারপর দারুণ উত্তেজনার সাথে লাফ দিয়ে উঠে বললো , 

" এই শাঁওলি, আমিতো একেবারে ভুলেই গিয়েছিলাম সাউথ সিটিতে আমার কাকাইয়ের ফ্ল্যাটটার কথা । কাকাইয়ের ঐ ফ্ল্যাটটা তো পুরো ফাঁকা পড়ে আছে কাকাই আমাদের ছেড়ে চলে যাবার পর থেকে । ফ্ল্যাটটা যেহেতু আমার নামে তাই ভেবেছি বিক্রি করে দেবো । তা একদিকে ভালোই হোলো, ব্যাচেলর পার্টিটা কাকাইয়ের ফ্ল্যাটেই হবে ।শাঁওলি পার্টির সব আয়োজনের দায়িত্ব আমার উপর ছেড়ে দিয়ে তুই নিমন্ত্রণগুলো কর । "


শাঁওলি বলে , " যাক বাঁচা গেল , আমিতো রীতিমতো চিন্তায় ছিলাম । আমি জানি তো সবকিছুর সমাধান তোর কাছে আছে । "  


ডিসেম্বর মাসের পাঁচ তারিখে সাউথ সিটিতে গিনির কাকার ফ্ল্যাটে ব্যাচেলর পার্টিতে রীতিমতো আনন্দের ঢেউ উঠেছে । খাওয়া - দাওয়া, হার্ড ড্রিংকস - সফট ড্রিংকস আর তার সাথে মিউজিক আর নাচ । এই পার্টিতে গিনির জন্য যে বিশাল জোরে ধাক্কা খাওয়ার মতো surprise অপেক্ষা করে আছে সেটা আগে ঘুণাক্ষরেও টের পায় নি গিনি । 

পার্টি বেশ জমে উঠেছে এমন সময় হঠাৎ করে শাঁওলি বলে ওঠে , " Excuse me friends , আজকের এই পার্টিতে আমার তিনজন প্রিয় মানুষ আছে যারা না থাকলে হয়তো আমি বন্ধুত্বের মানেই বুঝতে পারতাম না । এই তিন জনের মধ্যে অবশ্য একজন আমার জীবনে as a husband এন্ট্রি নিতে চলেছে , আর সেই কারণেই আজকের এই পার্টি । আর বাকি দুজনের কথা বিশেষ কিছু বলার নেই । So let me introduce my would be husband Priyam , " বলতে বলতেই দরজা দিয়ে ভিতরে ঢুকে আসে প্রিয়ম আর সাথে ছিল রাজদীপ । প্রিয়মকে দেখেই গিনি একেবারে লাফ দিয়ে উঠে শাঁওলিকে বলে , " মানে ? তোর সাথে প্রিয়মের বিয়ে ঠিক হয়েছে সেটা আমাকে আগেতো বলিস নি । তার মানে তোর সাথে প্রিয়মের সম্পর্ক দিব্যি ছিল যেটা আমার কাছে তুই পুরোপুরি গোপন করে গেছিস । কিন্তু কেনো বলিস নি সেটাই বুঝতে পারছি না । "  


শাঁওলি বলে , " Sorry , Sorry dear . আসলে তোকে একটা দারুণ surprise দিতে চেয়েছিলাম । তবে হ্যাঁ , আমার বিয়ের এই surprise - এর প্ল্যানটা প্রিয়ম আর রাজদীপের । ওরাই তোকে কিছু জানাতে না করেছিল । আমি কি করবো বল ? "


প্রিয়ম খুব জোরে জোরে হাসতে হাসতে বলে , " কিরে কেমন লাগলো এই surprise ? Sorry গিনি , আসলে এই প্ল্যানটা প্রথম রাজদীপ আমাকে বলে , যেনো আমার আর শাঁওলির সম্পর্ক আছে বা আমাদের বিয়ে হচ্ছে সেটা তোকে সামনাসামনি surprise দেওয়া হবে । তারপর আমি এই ব্যাপারে শাঁওলিকে সব জানাই । শাঁওলি তো কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না এই প্ল্যানে , অনেক কষ্টে মানিয়েছি । "


এরপর প্রিয়ম, শাঁওলি, গিনি আর রাজদীপ বসে কথা বলতে থাকে । 


গিনি বলে , " এই প্রিয়ম, H. S এর রেজাল্ট বেরোনোর পর আমাদের কাউকে কিছু না বলে কোথায় উধাও হয়ে গিয়েছিলি ? এমনকি ফোন নাম্বারটাও বদলে দিয়েছিলি । আবার এতো বছর পর কোথা থেকে উদয় হলি ? আর শাঁওলির সাথেই বা নতুন করে সম্পর্ক তৈরী হোলো কবে থেকে ? রাজের সাথেই বা যোগাযোগ হোলো কিভাবে ? "


প্রিয়ম বলে , " আরে, আরে দাঁড়া ! এতোগুলো প্রশ্ন একসাথে ? উফ্ ! সব বলছি , একটু ধৈর্য্য ধর । আসলে আমার বাবা - মা আগে থেকেই প্ল্যান করে রেখেছিল H. S এর পর আমাকে বড়ো মামার কাছে মুম্বাইতে পাঠিয়ে দেবে । এই ব্যাপারে আমি কোনোদিন তোদের বলতে পারি নি, তার উপর বাবার কড়া নির্দেশ ছিল কোনো বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখা যাবে না যতোক্ষণ না আমার 

IIT Bombay - Indian Institute of Technology - তে admission হচ্ছে । তাই আমি রেজাল্ট বেরোনোর পর উধাও হয়ে গিয়েছিলাম । আমি জানতাম শাঁওলি আমার উপর খুব রেগে আছে কিন্তু আমার কিছু করার ছিল না । মুম্বাইয়ে যাওয়ার দুমাস পর একদিন রাতে আমি শাঁওলিকে ফোন করি , অনেকবার ফোন বেজে বেজে কেটে যায় । আমি ভাবলাম শাঁওলি রেগে আছে তাই ফোন ধরছে না , যাইহোক মোট আটবার ফোন করার পর তিনি ফোন ধরলেন । তারপর কি হয়েছিল শাঁওলির মুখেই শোন । এই শাঁওলি তুই বল এবার , আমি একটু গেষ্টদের সাথে কথা বলে আসি । " 


গিনি প্রিয়মকে বলে , " এই বাজে ছেলে কয়েকদিন পর তোদের বিয়ে আর এখনো তুই তুই করে কথা বলছিস ? "


প্রিয়ম বলে , " আচ্ছা, আচ্ছা বুঝলাম কিন্তু এতোদিনের অভ্যাস বদলাতে একটু সময় লাগবে dear . তবে অবশ্য কারো সামনে আমরা তুই করে কথা বলি না শুধু নিজেদের মধ্যেই বলি । " এই বলে প্রিয়ম গেষ্টদের সাথে কথা বলতে চলে যায় । 


শাঁওলি এবার বলতে শুরু করে , " প্রিয়ম মুম্বাইয়ে যাওয়ার দুমাস পর যখন আমাকে হঠাৎ ফোন করে আমি ফোন ধরে ওর নাম শুনেই রাগে ফেটে পড়ি । তারপর প্রিয়ম সবকিছু বুঝিয়ে বলার পর আমার মাথা ঠান্ডা হয় । তবুও কেমন যেন একটা ভয় ভয় করছিল দুমাস পর আবার সম্পর্কটা জোড়া দিতে । অনেক ভেবেও কোনো কুল কিনারা না করতে পেরে আমি রাজদীপকে ফোন করে সব বলি । "


শাঁওলির মুখে রাজদীপের কথা শুনে গিনি সোফা থেকে লাফ দিয়ে উঠে বলে , " রাজদীপকে ফোন করেছিলি মানে ? রাজের নতুন নাম্বার তোর কাছে ছিল ? তুই তো কোনোদিনও আমাকে বলিস নি যে রাজের সাথে তোর যোগাযোগ আছে । "


গিনি খুব রেগে গেছে দেখে রাজদীপ বলে ,

 " আট বছর আগে কলকাতা ছেড়ে লন্ডন যাবার আগের দিন আমি শাঁওলির সাথে দেখা করেছিলাম । তোকে propose করেছিলাম কিন্তু তুই আমাকে পাত্তাই দিস নি এমনকি এক সপ্তাহ সময় ছিল আমার যাওয়ার, তার মধ্যে তুই আমার সাথে কোনোরকম যোগাযোগ করিস নি । তাই আমি শাঁওলির সাথে দেখা করে সব জানাই । আমি যাবার আগেই শাঁওলিকে আমার নতুন নাম্বার দিয়েছিলাম আর এই কথা কোনোভাবেই যাতে তোকে না জানায় সেটা promise করিয়ে নিয়েছিলাম । আমি ভেবেছিলাম তুই আমার সাথে যোগাযোগ রাখতে চাস না তাই আমিও তোকে বিরক্ত করতে চাই নি । "


রাজদীপের কথাগুলো শুনে গিনি একেবারে চুপ করে যায় তারপর বলে , " ঠিক আছে যা হয়েছে ভালোই হয়েছে । এই শাঁওলি তারপর কি হোলো বল ? রাজের ব্যাপারে আমার কোনো আগ্রহ নেই , ওর বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজনের দায়িত্ব আমার সেটা ঠিকঠাক করে দিতে পারলেই আমার কাজ শেষ ।তারপর যদি রাজ মনে করে আমার সাথে যোগাযোগ রাখবে তাহলে আমিও যোগাযোগ রাখবো । অবশ্য যদি রাজের স্ত্রী যোগাযোগ রাখার অনুমতি দেয় তবেই । "


গিনির কথা শুনে শাঁওলি আর রাজদীপ দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে । 

রাজদীপ আর শাঁওলিকে হাসতে দেখে খুব রেগে যায় গিনি , উঠে চলে যায় ওদের সামনে থেকে । শাঁওলি বুঝতে পারে গিনি সত্যিই খুব রেগে গেছে আর কষ্টও পাচ্ছে মনে মনে । শাঁওলি তাড়াতাড়ি করে ছুটে যায় গিনির কাছে কিন্তু ততোক্ষণে গিনি রাগের বশে পার্টি ছেড়ে বেরিয়ে যায় । কোথাও গিনিকে দেখতে না পেয়ে শাঁওলি প্রিয়ম আর রাজদীপের ওপর রেগে গিয়ে চীৎকার - চেঁচামেচি করে বলে , 

" Both of you enjoy the party, I won't be at this party. " এই বলে শাঁওলিও বেরিয়ে যায় পার্টি ছেড়ে । গিনি খুব কষ্ট পাচ্ছে ভেবে শাঁওলি নিজের মাকে ফোন করে বলে , " Don't worry mom, I'm staying at Gini's house tonight. " গিনির বাড়িতে পৌঁছে কলিংবেল দিতেই গিনির মা দরজা খুলে শাঁওলিকে দেখেই বলে , " কি ব্যাপার শাঁওলি , কি এমন হয়েছে পার্টিতে যে গিনি কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে এসে সেই যে নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করেছে এখনো খুলছে না । আমি অনেকবার বলেও দরজা খোলাতে পারিনি , এখন দ্যাখ তুই যদি কিছু করতে পারিস । " 


শাঁওলি গিনির মাকে বলে , " চিন্তা কোরো না কাকিমা , আমি দেখছি কি হয়েছে । তবে এইটুকু বলতে পারি যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব গিনির বিয়ের আয়োজন শুরু করে 

দাও । হাতে খুব বেশি সময় নেই । "


গিনির মা বলে , " কি ? গিনির বিয়ে ? এর মানেটা কী ? গিনি কি কারো সাথে প্রেম করছে নাকি ? "


শাঁওলি বলে, " উফ্ ! কাকিমা , একবারে কতোগুলো প্রশ্ন । শোনো ছোট্ট করে বলছি , রাজদীপকে মনে আছে তোমার ? "


গিনির মা বলে , " হ্যাঁ, কেনো মনে থাকবে

 না । গিনির যে কোনো সমস্যায় সবার আগে ওইতো ছুটে ছুটে আসতো । একদিন তো কি একটা কথায় আমাকে দুম করে বলে বসলো গিনিকে নিয়ে তোমরা চিন্তা কোরো না , ওর চিন্তা করার জন্য আমি সারাজীবন আছি । তখন ওরা ক্লাস টুয়েলভে পড়তো , যথেষ্ট ছোটো তাই আমিও ওর কথা হাসির ছলে উড়িয়ে দেই । যাইহোক তুই বল এবার । "


গিনির মা থামলে শাঁওলি আবার বলতে শুরু করে , " রাজদীপ লন্ডন যাবার আগে গিনিকে propose করেছিল কিন্তু গিনি রাজি হয়নি, in fact রাজ চলে যাবার আগ পর্যন্তও রাজের সাথে কোনো যোগাযোগ রাখে নি । রাজও খুব কষ্ট পায় তাই যাবার আগে ফোন নাম্বার বদলে নেয় । চলে যাবার আগে শুধু আমার সাথে দেখা করে নতুন নাম্বার দিয়ে যায় , রোজ গিনির খবর জানার জন্য । এই আট বছরে এমন কোনো দিন নেই যে দিন রাজ ফোন করে গিনির খবর নেয় নি , কিন্তু আমি সেই কথা কোনোদিনও গিনিকে বলতে পারি নি । রাজদীপ বলেছিল আমি যেন কোনোদিনও ওর কথা বা ফোন নাম্বার গিনিকে না জানাই । যাইহোক রাজদীপ চলে যাবার মাসখানেক পর থেকেই গিনি রাজদীপের প্রতি একটা টান অনুভব করতে থাকে আর এই আট বছরের মধ্যে রাজদীপ ছাড়া অন্য কারোর কথা ভাবতেই পারে না গিনি । আমি প্রথম থেকেই গিনির মনের কথা সব জানি এবং প্রতিনিয়ত রাজদীপকে সব জানাতে থাকি । কাকিমা রাজদীপ এখন একজন জেনারেল ফিজিসিয়ান । কলকাতায় দুটো বড়ো নার্সিংহোমের সাথে যুক্ত হয়ে পাকাপাকিভাবে কলকাতায় থাকতে এসেছে । মাঝে একদিন গিনির Marriage arrangement অফিসে গিয়ে গিনিকে বলেছে জানুয়ারি মাসে ওর বিয়ে তাই সবকিছুর দায়িত্ব গিনির । রাজ গিনিকে বলেছে গিনির পছন্দ মতো সবকিছুর আয়োজন করতে কারণ রাজদীপের হবু স্ত্রী খুব ব্যস্ত । গিনিও নিজের পছন্দ মতো রাজদীপের হবু স্ত্রীর জন্য সব আয়োজন করছে । কিন্তু কাকিমা গিনি এখনো জানেনা যে রাজদীপের হবু স্ত্রী অন্য কেউই না, গিনি নিজেই । রাজদীপ আগামীকাল বিকালে নিজের বাবা - মাকে নিয়ে আসবে তোমাদের সাথে গিনিকে বিয়ে করার জন্য কথা বলতে । শুধুমাত্র তোমাদের সাথে কথা বলার অপেক্ষায় রয়েছে

 রাজদীপ , আর বাকি সমস্ত আয়োজন প্রায় হয়ে গেছে । গিনি এই ব্যাপারে কিছুই জানেনা তাই গিনির মনের অবস্থা তুমি বুঝতেই পারছো কাকিমা । শোনো আমি গিনিকে শান্ত করার কিছুক্ষণ পর তুমি ওর ঘরে আসবে , তারপর বলবে আগামীকাল বিকালে ওকে দেখতে পাত্রপক্ষ আসবে । তারপর যা হবে আমি সামলে নেবো । কালকে বিকালে রাজদীপরা না চলে যাওয়া পর্যন্ত আমি এখানেই থাকবো । ঠিক আছে আমি এখন গিনির কাছে যাচ্ছি । "


গিনির মাকে প্ল্যানটা বলে শাঁওলি গিনির ঘরের দরজায় কয়েকবার টোকা দিতেই গিনি রেগে চীৎকার করে বলে , " কি হোলোটা কি, কেনো বিরক্ত করছো আমাকে ? মা তুমি যাও তো এখন, আমি দরজা খুলবো না " । তখনই শাঁওলি বলে , " Miss Areena Would you please open the door ? " গিনি দরজা খুলেই বলে , " তুই ! কি চাই আমার কাছে ? আমাকে এতো চমক দিয়ে দিয়ে আমার মাথা খারাপ করে এখন এসেছিস মলম লাগাতে ? চলে যা, আমার কিন্তু মাথা গরম আছে । " শাঁওলি দরজা ঠেলে ঢুকতে ঢুকতে গিনির ভাইকে বলে, " এই যে অরিত্র বাবু ফ্রিজ থেকে কিছু বরফ দিয়ে যা , তোর দিদিভাইয়ের মাথায় ঢালবো । " এই বলে গিনিকে জড়িয়ে ধরে হা - হা করে হেসে উঠলো ।শাঁওলি গিনির গাল টিপে, কাতুকুতু দিয়ে, মজা করতে করতে নিমেষের মধ্যেই গিনির রাগ উধাও হয়ে গেল । এভাবে মিনিট কুড়ি দুজনে গল্প করছিল হঠাৎ শাঁওলির প্ল্যান মতো গিনির মা গিনির ঘরে ঢুকে বলে, " শাঁওলি মা তুই কালকে দুপুরে একবার আসতে পারবি আমাদের বাড়িতে ? আসলে কালকে বিকালে কয়েকজন আসবেন গিনিকে দেখতে , তুই থাকলে ওকে একটু সাজিয়ে - গুছিয়ে দিতে পারতি । " গিনি এই কথা শুনে মায়ের উপর রেগে গিয়ে বলে, " ও বুঝতে পেরেছি , আমি তোমাদের উপর এখন বোঝা হয়ে গেছি তাই আমাকে বিদায় করতে পারলে তোমরা, বিশেষ করে তুমি বেঁচে যাও তাই না ? আমি অনেক বার বলেছি যে, আমি কোনোদিন বিয়ে করবো না । তুমি কি আমার কোনো কথাই শুনবে না মা । আমি বিয়ে করতে পারবো না, পারবো না আমি বিয়ে করতে । " এই বলে গিনি হাউহাউ করে কাঁদতে শুরু করে । গিনিকে কাঁদতে দেখে গিনির মা ও শাঁওলির খারাপ লাগলেও নিজেদের সামলে নেয় । গিনির মা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বলে , " ওরে পাগলী মেয়ে আমার , সন্তান কি কখনো বাবা - মায়ের কাছে বোঝা হয় ? তুই আমার প্রথম সন্তান , কতো আদরের বল তো । আর তোকে দেখতে আসতে চাইছে তো আসুক না , আমাদের পাত্র পছন্দ না হলে সাথে সাথেই না করে দেবো । আমরা তো সবসময় তোর পাশেই আছি আর ভবিষ্যতেও থাকবো । " 


 শাঁওলি বলে , " কাকিমা তোমার কোনো চিন্তা নেই , আমি আজকে এখানেই থাকবো । কালকে পাত্রপক্ষ গিনিকে দেখে চলে গেলে তারপর আমি যাবো , আর হ্যাঁ গিনিকে একটু সাহস দেওয়ার জন্য আমার হবু স্বামীকেও আসতে বলবো কালকে বিকালে । " গিনির মা চমকে উঠে বলে , " মানে ? তোর হবু স্বামী কি গিনিকে চেনে ? আর আমাদের বাড়ি চিনে আসতে পারবে তো ? " গিনির মায়ের কথা শুনে গিনি আর শাঁওলি দুজনেই একসাথে হেসে ওঠে । গিনি বলে , " মা আমাদের বন্ধু প্রিয়মকে তোমার মনে আছে ? " গিনির মা বলে , " ওমা ! কেনো মনে থাকবে না , কতোবার বাড়িতে এসেছে তোদের সব বন্ধুরা । আর তোরা সাতজন মিলে আমাকে তো কম জ্বালাস নি ? " গিনি বলে , " মা, প্রিয়ম হোলো আমাদের শাঁওলি ম্যাডামের হবু স্বামী । " গিনির মা অবাক হয়ে বলে , " তাই নাকি ? ওতো বাইরে চলে গিয়েছিল , ওহ্ বিয়ে করার জন্য ফিরে এসেছে তাহলে ! ভালো কথা রাজদীপ ফিরবে কবে ? " শাঁওলি বলে, " রাজ তো ফিরে এসেছে , তুমি জানো না ? সামনের মাসে মানে জানুয়ারি তে ওর বিয়ে , যদিও তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি । বিয়ের সব দায়িত্ব তো গিনির , গিনি তোমাকে কিছু বলে নি ? কিরে গিনি তুই কাকিমাকে কিছু বলিস নি ? " গিনি কোনো উত্তর না দিয়ে মাথাটা দুই হাঁটুর ওপর রেখে চুপ করে বসে থাকে । গিনির মা বলে , " রাজদীপকে একদিন আসতে বলিস আমাদের বাড়িতে । " 

শাঁওলি বলে , " আমি আজকে বলেছিলাম তোমাদের বাড়িতে আসার জন্য কিন্তু রাজ বললো, বিয়ে করে একেবারে নতুন বৌকে নিয়ে এসে তোমাদের সাথে দেখা করে 

যাবে । " শাঁওলির এই কথাটা শুনে গিনি একবার মাথাটা তুলে শাঁওলির মুখের দিকে তাকিয়েই আবার মাথা নিচু করে নেয় । গিনির মা আর শাঁওলি গিনির মনের অবস্থা বুঝতে পেরে একে অপরের দিকে তাকিয়ে মুখ টিপে হাসে । গিনির মনের অবস্থা সত্যিই খুব খারাপ বুঝতে পেরেও শাঁওলি চুপ করে থাকে । আসলে রাজদীপ কিছুটা ইচ্ছে করেই বাবা - মাকে নিয়ে গিনির বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব দিতে আসার কথা জানাতে চায় না । রাজ শাঁওলিকে বলে , " গিনিকে দেখে তোর যতো কষ্টই হোক তবুও তুই কিছু বলবি না । আমি আট বছর শুধু একটাবার গিনির গলার স্বর শোনার জন্য পাগলপারা হয়ে ছিলাম । আমি চলে যাবার আগে একবার যদি বলতো, আমাকে একটু ভাবার সময় দে তাহলে আমি গিনিকে আমার ফোন নম্বর দিয়ে যেতাম । কিন্তু ওতো আমার সাথে কোনো যোগাযোগই করে নি । তাই এটা ওর শাস্তি , আরতো মাত্র একটা দিন । তারপর গিনি সারা জীবনের মতো আমার হয়ে যাবে । " রাজদীপের কথাগুলো শুনে শাঁওলি কথা দিয়েছে গিনিকে প্ল্যানের ব্যাপারে কিছু টের পেতে দেবে না । 


সকাল থেকেই বাড়িতে চলছে ঘর গোছানোর কাজ । বিকাল হলেই পাত্রপক্ষ আসবে গিনিকে দেখতে । শাঁওলি আর গিনির মা ছাড়া আর কেউই জানেনা পাত্র কে ? শাঁওলিকে ফোন করে রাজদীপ জানায় বিকাল পাঁচটা নাগাদ ওরা আসবে । সেই অনুযায়ী শাঁওলি গিনিকে পৌনে পাঁচটার মধ্যে সাজিয়ে তৈরী করে দেয় । পাত্রীর সাজগোজ , ঘরের সাজগোজ , পাত্রীর বাবা - মা - ভাইয়ের সাজগোজ এমনকি খাবার - দাবারের সাজগোজও একেবারে পরিপূর্ণ এবার শুধুমাত্র পাত্রপক্ষ আসার অপেক্ষা । গিনি মুখ ভার করে বসে আছে , রাগে কারো সাথে কথা বলছে না । শুধু একবার মাকে শুনিয়ে শাঁওলিকে বললো , " শোন শাঁওলি আমি একবার শুধু সামনে যাবো আর সাথে সাথেই আমার ঘরে চলে আসবো , ঐ হাত দেখি - পা দেখি - চুল দেখি - রান্না পারি কিনা এতোসব কথা শোনার সময় আমার নেই । তাতে যদি তারা অসন্তুষ্ট হয় সেখানে আমার কিছু করার নেই । " শাঁওলি বলে , " হ্যাঁ, হ্যাঁ ঠিক

 আছে । "


 ঘড়িতে তখন পুরোপুরি পাঁচটা , 

 হঠাৎ কলিংবেল বেজে উঠলো । গিনির বাবা দরজা খুলে ওনাদের অভ্যর্থনা জানিয়ে বললো , " আসুন আসুন । " তারপর গিনির মাকে বললো , " ওগো শুনছো , ওনারা এসে গেছেন । " রাজদীপের বাবা - মা - রাজদীপ আর সাথে এসেছে প্রিয়ম । রাজদীপদের সবাইকে বসতে বলে গিনির মা প্রিয়মকে বলে , " আরে তুমি তো প্রিয়ম ? যাও ঐ ঘরে , ওরা দুজন তোমার জন্য অপেক্ষা করে বসে আছে । " প্রিয়ম " Ok Auntie " বলে সোজা গিনির ঘরে চলে যায় । ওদিকে গিনি যেমনি রেগে আছে তেমনি ভয়ে শুকিয়ে কাঠ । গিনির অবস্থা দেখে প্রিয়ম আর শাঁওলি একটু হাসে , তারপর প্রিয়ম বলে ," এই গিনি এতো ভয় পাওয়ার কি আছে ? Just chill dear . " গিনি রাগ করে বলে , " হ্যাঁ, তাতো বলবি তোরা । নিজেরা দুজন দুজনকে পেয়ে যাচ্ছিস তো তাই অন্যকে খোঁচা মারতে ভালো লাগছে তাই না ? " প্রিয়ম বলে , " আচ্ছা, আচ্ছা, রাগ করিস না । তোর ভয় নেই আমরা তো আছি । " শাঁওলি, গিনি আর প্রিয়ম কথা বলছে এমন সময় গিনির ভাই এসে বললো , " শাঁওলি দি , মা দিদিভাইকে ওখানে নিয়ে যেতে বললো । " 

একথা শুনে গিনি ঠকঠক করে কাঁপতে শুরু করলো , তাই গিনির ডান দিকে প্রিয়ম আর বাঁদিকে শাঁওলি দুজন মিলে গিনিকে নিয়ে চললো পাত্রপক্ষের সামনে । 


ঘরের পর্দা সরিয়ে গিনি ঘর থেকে বেরোলো কিন্তু মাথাটা নীচের দিকে নোয়ানো তাই দেখতেও পেলো না যে তার মনের মানুষটি কিভাবে মুগ্ধ দৃষ্টিতে ওরই পানে চেয়ে আছে । সত্যিই চোখ ফেরানো যাচ্ছে না গিনির দিক থেকে , গিনি এমনিতেই সুন্দরী কিন্তু সেদিন যেন স্বর্গলোক থেকে নেমে আসা কোনো অপ্সরার মতো লাগছে । হলুদের মধ্যে লাল জড়িপাড়ের শাড়ি , চুলটা ঘাড়ের কাছে হাতখোঁপা করা , ছোট্ট টিপ - হালকা লিপস্টিক আর কানে - গলায় হালকা গয়না পরিহিতা গিনির দিক থেকে চোখ সরছে না রাজদীপের । তাই দেখে শাঁওলি একটু মজা করে বলে , " এই যে, আপনি পাত্র তো ? ওরকম হাঁ করে কি দেখছেন আমাদের মেয়ের দিকে ? আমাদের মেয়ের মতো সুন্দরী আপনি হ্যাজাক নিয়ে খুঁজলেও খুঁজে পাবেন না । " শাঁওলির কথা শুনে সবাই হেসে ওঠে শুধু চুপ করে থাকে পাত্র - পাত্রী দুজন । শাঁওলি গিনিকে নিয়ে গিয়ে ওনাদের সামনে একটা চেয়ারের উপর বসায় , কিন্তু গিনির মাথা তখনও নীচের দিকে । হঠাৎ করে পাত্রের মা মানে রাজদীপের মা বলে ওঠে , " গিনি আমার ছেলেকে আট বছর ধরে বুকের ভিতর আটকে রেখে দিলে হবে কেমন করে , বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হবে তো এবার । " এধরনের কথায় অবাক হয়ে গিনি সটান মুখ তুলে তাকায় পাত্রের দিকে , তারপর লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলে, " রাজ তুই ? " এইসময় বাড়ির সকলেই সমস্বরে হেসে ওঠে আর গিনি লজ্জায় মাথা নীচু করে নিজের ঘরের দিকে দৌড়ে পালিয়ে যায় । 

গিনি লজ্জা পেয়ে পালিয়ে যাবার পর রাজদীপের মা বলে , " এই তোমরা হাসি বন্ধ করো ,দেখলে না আমার বৌমা কেমন লজ্জা পেয়ে পালিয়ে গেল । " তখন শাঁওলি বলে , " আজ্ঞে না কাকিমা , তোমার বৌমা লজ্জা পেয়ে পালিয়ে যায় নি , she got severe shock . " রাজদীপের মা বলে , " Shock পেয়েছে মানে ? " রাজদীপের মায়ের প্রশ্ন শুনে প্রিয়ম , রাজদীপ আর শাঁওলি আট বছরের থেকে সেদিন পর্যন্ত সব ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিলো । বেচারি গিনির এই রকম বেহাল অবস্থা জেনেও কিন্তু কেউই হাসি চাপতে পারলো না এমনকি গিনি ও রাজদীপের বাবাও হেসে উঠলো । যাইহোক রাজদীপের মা কোনোরকমে হাসি থামিয়ে গিনির বাবা - মাকে উদ্দেশ্য করে বললো , " বেয়াই - বেয়ান বলছি যদি কিছু মনে না করেন তাহলে পাত্র - পাত্রী দুজন একটু আলাদা করে কথা বলুক । আসলে এখন গিনির মনের যা অবস্থা সেখানে আমরা কেউই কিছু করতে পারবো না , সেটা একমাত্র রাজ পারবে । তাই বলছিলাম রাজ গিয়ে গিনির সাথে কথা বলে এতোদিনের মনোমালিন্য - ভুল বোঝাবুঝি সব মিটিয়ে নিক আর আমরা বরং বসে জানুয়ারি মাসের একটা শুভদিন দেখে বিয়ের দিনটি ঠিক 

করি । " গিনির বাবা বলে , " হ্যাঁ, হ্যাঁ সেটাই ভালো । রাজদীপ তুমি যাও গিয়ে আমার রাজকুমারীর মানভঞ্জন করো । " গিনির বাবার কথায় রাজদীপ লজ্জা পেয়ে মাথা নীচু করতেই শাঁওলি ওর হাত ধরে টেনে নিয়ে যায় গিনির ঘরে । তারপর গিনির ঘরের ভেতর রাজকে ঠেলা দিয়ে ঢুকিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয় তারপর বলে , " এই রাজ এই আট বছর ধরে তোর বৌকে অনেক সামলে রেখেছি এবার তোর পালা । Best of luck bro ."  



জানলার কাছে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে গিনি , হাতে মন্দারমণি ঘুরতে গিয়ে তোলা ওর আর রাজদীপের একটা ছবি । ছবিটায় রাজদীপ গিনির বিনুনি ধরে টানছে আর গিনি হাত মুঠো করে ঘুষি মারতে যাচ্ছে রাজকে , মানে কৈশোর অবস্থায় একটা দুষ্টু - মিষ্টি খুনসুটির ক্যামেরা বন্দী মূহুর্ত । গুটি গুটি পায়ে রাজদীপ এসে গিনির পিছনে দাঁড়িয়ে বলে, " আমাকে ভালোবাসিস ? " আচমকা এই প্রশ্ন শুনেই গিনি পিছনে ঘুরে গিয়ে রাজের সাথে ধাক্কা লাগে, সাথে সাথেই গিনি " Sorry Sorry " বলে ছিটকে এক পা পিছনে সরে যায় । রাজ আবার বলে , " কিরে, আমাকে ভালোবাসিস ? " রাজের সরাসরি এই প্রশ্ন শুনে গিনি লজ্জা পেয়ে মাথা নীচু করে বলে , " না, আমি তোকে ভালোবাসি না । তোকে ভালোবাসতে যাবো কেনো ? " এই বলে গিনি ঘুরে জানলা ধরে দাঁড়িয়ে থাকে , এদিকে গিনির বুকের বাঁদিকের ধুকপুকুনি ক্রমশ বেড়েই চলেছে । হঠাৎ ঘাড়ের দুপাশে রাজের হাতের ছোঁয়ায় গিনির শরীরে যেন বিদ্যুৎ বয়ে যায় । রাজ গিনির দুপাশের কাঁধ ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়েই বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরতেই গিনি রাগে - অভিমানে কান্নায় ভেঙে পড়ে । রাজ গিনিকে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে , " আমি প্রথম থেকেই জানতাম তুই আমাকে ভালোবাসিস আর সাগ্নিক ছিল তোর মনের একটা ভালোলাগা , যাকে বলে obsession . সেটা ভালোবাসা নয় , তোর অবচেতন মনে, তোর হৃদয়ের অনেক গভীরে আগে থেকেই আমি জায়গা কিনে ঘর বেঁধে বাস করছিলাম । কিন্তু তুই বুঝতেই পারিস নি , আর যখন আমি তোর দৃষ্টির সম্পূর্ণ আড়ালে চলে গেলাম তখন তোর অবচেতন মনে - হৃদয়ের গভীরে আমার ফাঁকা ঘরটাই তোকে আমার অনুপস্থিতি বুঝিয়ে দেয় ।



 ❤ ********** To Be Continued


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance