STORYMIRROR

কবিতা মালা

Romance Others

3  

কবিতা মালা

Romance Others

সকালবেলার ফুল ( সপ্তম পর্ব)

সকালবেলার ফুল ( সপ্তম পর্ব)

3 mins
330


কুমারেশ দেখা করতে আসার দুতিনদিন পর ভোরবেলায় আয়া সুদীপ্তর দরজায় কড়া নাড়ে। 

" দাদা, তাড়াতাড়ি আসুন । মাসিমা কেমন যেন করছেন।"


সুদীপ্ত সরলাদেবীর পালস্ রেট দেখে খুব একটা ভালো বুঝলো না। তাকে নার্সিংহোমে ভর্তি করলো।

দুদিন পর তিনি মারা গেলেন।


এরই মধ্যে সোহম তিথিকে ফোন করলো। তিথি ঘরে ছিলো না তাই সুদীপ্তই ফোনটা রিসিভ করলো। সোহম সুদীপ্তর গলা শুনে ফোনটা কেটে দিল। সে ভাবলো তার বাবা মায়ের মতো তিথির বাবাও হয়তো তাদের সম্পর্কের বিরোধী। সোহমের নামটা সেভ করা ছিল তাই সুদীপ্ত তিথিকে বলল


"সোহম ফোন করেছিল।আমার গলা শুনে আর কথা বললো না। তুই একবার ওকে ফোন করে দেখ।"


সুদীপ্তর কথামতো তিথি সোহমকে ফোন করলো। তিথির বাবা হয়তো রিং ব্যাক করছে । এই আশংকায় সে ফোনটা ধরলো না।


সরলাদেবীর শ্রাদ্ধশান্তি অনুষ্ঠান না মেটানো পর্যন্ত সুদীপ্ত নার্সিংহোমে বেরলো না।আর তিথিও কলেজ গেল না। সোহমের ফোনটা না ধরার কারণ 

বুঝতে পেরে তিথি ম্যাসেজ পাঠায়। তার বাবা তাদের ভালোবাসার বিরোধী নয়। বাবাই তাকে ফোন করতে বলেছে। ম্যাসেজটা পেয়ে সোহম আশ্বস্হ হলো। তারপর সে তিথিকে ফোন করলো। তখনই সে তার ঠাকুমার মৃত্যুসংবাদ জানতে পারে। সোহম বলল


" কলেজ যেদিন আসবে সেইদিন দেখা করবো। ডেট আর টাইম পরে জানিয়ে দিও।"


"ঠিক আছে।" পরে সে জানিয়ে দিল।

******************


সোহম আর শ্রেয়ার মধ্যে দরকার ছাড়া এখন বিশেষ কথাবার্তা হয় না। সোহম একদিন অফিস ফিরে রাতে খেতে বসে বলল


" আজ মোবাইলটা ছিনতাই হয়ে গেছে। "


"সেকি ! কিভাবে?"


"ছুটির পর বাস ধরবো বলে হাঁটছি, ফোনটা তখন মুঠোর মধ্যে ছিল। উল্টোদিক থেকে একটা ছেলে ছুটে এসে ছোঁ মেরে সেটা কেড়ে নিয়ে পালিয়ে গেল।"


" পুলিশে রিপোর্ট করেছিস?"


" হ্যাঁ বাবা।"


" সবসময় এমন অন্যমনস্ক হয়ে থাকলে আরো কতকিছু যে হবে।" শ্রেয়া বলল।


" সেটার জন্য দায়ী কারা?"


" এতোদিন বড়ো করার পর আমাদের দিকে আঙুল তুলচ্ছিস।

যে মানুষটা বিপদের দিনে পাশে দাঁড়িয়েছিল যার এতো বড়ো স্বার্থত্যাগ। তার বিরুদ্ধে যাওয়া পাপ। তাছাড়া তুই আর তিথি.... 

শ্রেয়া রাগের মাথায় এটুকুই বলল পুরো বলতে পারলো না।


" কার স্বার্থত্যাগ? কার বিরুদ্ধে যাওয়া ? আমার মাথায় কিছুই ঢুকছে না। একটু পরিষ্কার ভাবে বলবে?"


" আঃ শ্রেয়া। অনেক রাত হয়েছে। এসব কি হচ্ছে।"


" ভুলটা কোথায় বলেছি।? তোমার অপারেশনের কিছু টাকা দিয়েছে এটা সত্যি। সংসারটা কেমন করে চলছে কখনো ও জানতে চেয়েছে? কিভাবে চলছে শুধু আমি ই জানি। ফোনটা হারাল। আবার একটা কিনতে হবে। একটু সাবধানী হলে এই টাকাটা তো থাকত।"


সোহম খাবার ফেলে উঠে গেল। শ্রেয়া চেঁচিয়ে বলল


" যে খাবারটা নষ্ট করলি তারও একটা শ্রম আর মূল্য আছে যেদিন নিজে হাতে রান্না করে খেতে হবে সেদিন বুঝতে পারবি।"

************************


সরলাদেবীর শ্রাদ্ধ শান্তি অনুষ্ঠান মিটে যাওয়ার পর তিথি যেদিন প্রথম কলেজ গেল সেদিনই তাদের দেখা করার কথা ছিল। সোহমের ফোন থেকে তিথি একটা ম্যাসেজ পেল। তার বাইক অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে। ড্রিমল্যান্ড নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। তিথি কলেজ থেকে বেরিয়ে একটা অটো নিয়ে সেই নার্সিংহোমে পৌঁচ্ছে যায়। নার্সিংহোমের গেটের কাছে একটা ছেলে সোহমের বন্ধু বলে নিজের পরিচয় দেয়। আর বলল


" সোহমের অবস্হা এতোটাই খারাপ যে তাকে এখানে ভর্তি নেয় নি ।তাই অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেই খবরটা দেওয়ার জন্য এখানে আমি আপনার জন্য অপেক্ষা করছি। চলুন। আমার সাথে গাড়ি আছে।"


এসব কথা শুনে তিথি কেমন যেন হয়ে গেল। সে গাড়িতে উঠে বসল।


ক্রমশ.....


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance