সকালবেলার ফুল (চতুর্থ পর্ব)
সকালবেলার ফুল (চতুর্থ পর্ব)
সুদীপ্ত মনে মনে ঠিক করে নেয় নার্সিংহোম থেকে ফিরে আজই সরলাদেবীর ( তার সৎ মা) কাছে জানতে চাইবে কেন সেদিন তিনি বলেছিলেন শ্রেয়া এ পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে।
সুদীপ্ত বাড়ি ফিরে তার মায়ের সাথে কথা বলার জন্য দোতলায় সিঁড়ি দিয়ে উঠতে যাবে। তাকে দেখতে পেয়ে আয়া নীচে নেমে এলো।
" ও আপনি এসে গেছেন। মাসিমার শ্বাসকষ্টটা খুব বেড়েছিল । আপনি আমাকে শ্বাসকষ্টের যে ঔষুধটা দেখিয়ে দিয়েছিলেন সেটা খাইয়ে দিয়েছি।
এখন ঘুমোচ্ছে। যে কথাগুলো বলেন কিছুই তো বোঝা যায় না। তবু আন্দাজ করে নিই।"
সুদীপ্তর কোন কথাই জানা হলো না। সে দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
"মা- বাবা তিথিদের বাড়ি থেকে ঘুরে এসেছেন চারদিন হয়ে গেল। কোন কথাই তারা বলছেন না। "
সোহমের ধৈয্যের বাঁধ যেন ভেঙে যাচ্ছে।
পরের রবিবার তার বাবা বাজারে গেলেন । শ্রেয়া টিফিন তৈরি করছে। সোহম রান্নাঘরে গেল।
"মা তোমাকে সাহায্য করতে হবে?"
" না। তুই ঘরে যা। খাবার হয়ে গেলে ডেকে নেব।"
অন্যদিন তার মা হেসে তার সাথে কতো কথা বলত । সোহমের আজ তার মাকে বড্ড অচেনা লাগছে। সোহম আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না।
" তোমাদের তিথিকে কি পছন্দ হয় নি? মা ওকে আমি খুব ভালোবাসি। ওকে ছাড়া অন্য কাউকে ভাবতে পারি না।"
শ্রেয়া সোহমের মুখের দিকে তাকাল। মনে মনে বলল
" ভগবান এ কোন সমস্যার মুখোমুখি দাঁড় করালে।
পাগল ছেলেটাকে কেমন করে বলব সুদীপ্ত তোর বাবা আর তিথি তোর বোন।"
শ্রেয়া তার চোখের জল আড়াল করতে চাইলো, কিন্তু পারলো না। সোহম ভাবচ্ছে সব সময় হাসি খুশি থাকা তার মায়ের এই আকস্মিক পরিবর্তনের
কি কারণ হতে পারে!
সে ঘরে এসে তিথিকে ফোন করলো।
"হ্যালো।"
"হ্যাঁ। বলো।"
" তুমি ঠিক আছো তিথি।"
"হ্যাঁ।"
"আচ্ছা সেদিন তোমাদের বাড়িতে ঠিক কি কি কথা হয়েছিল তার সবটা আমায় খুলে বলো।"
তিথি সব কথা সোহমকে বলল।
" তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে তোমার বাবা আর আমার মা- বাবা ওনাদের আগের থেকে পরিচয় আছে।"
" আমারও সেটাই মনে হয়েছে। আচ্ছা আমাদের স্বপ্ন, ভালোবাসা সব মিথ্যে হয়ে যাবে? আমি তোমাকে ছাড়া কিছুই ভাবতে পারি না।"
তিথি বলল।
" তুমি চিন্তা করো না। এতো সহজে আমরা হেরে যাবো না। I love you."
" I love you too."