স্বপ্নে
স্বপ্নে
দূর থেকে নিজের বাড়ীর দরজাটা দেখতে পেয়েই মনটা আনন্দে নেচে উঠলো পল্লবের। চলার গতি নিজের থেকেই দ্বিগুণ হয়ে গেল।
কড়া নাড়তেই বাসন্তী এসে দরজা খুলে দিল। ও হাত বাড়িয়ে বাসন্তীকে ধরতে গেল কিন্তু মুচকি হেসে ছুটে বাড়ীর ভিতর চলে গেলো বাসন্তী। পল্লবও ছুটল ওর পিছনে। ওর আর তর সইছে না। ঘরের মধ্যে তক্তপোষের ওপর শুয়ে আছে মেয়ে।
কি সুন্দর দেখতে হয়েছে । ফর্সা রঙ, এক মাথা কোঁকড়া কালো চুল। বড় বড় চোখ। বাসন্তী ওর কোলে শুইয়ে দিল মেয়েকে। ওর হাতের আঙ্গুলটা খপ করে চেপে ধরল মেয়ে। কি সুন্দর নরম ছোট্ট ছোট্ট আঙুল।
এই যাহ, জামাটা কেমন ভিজে ভিজে লাগছে না! ওর দিকে তাকিয়ে বাসন্তী খিলখিল করে হেসে উঠলো...... আর ব্যাস ঘুমটা ভেঙ্গে গেল পল্লবের।
ধড়মড়িয়ে উঠে বসলো পল্লব। ওর সামনে একটা জলের গ্লাস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কোয়ারন্টাইন সেন্টারের কর্মী, “ কবসে বুলা রাহে, উঠনেকা নাম নহি, ফির পানি ডালা। নাস্তা করলো।“
লকডাউনের মধ্যে এসেছিল খবরটা, সঙ্গে ছবি । দেশে মেয়ে হয়েছে ওর। মনটা ছটফট করছিল। শেষে একটা সব্জির ট্রাকে করে দেশে যাবার জন্য রওনা হয়েছিল ও কিন্তু হাইওয়েতে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় কাল রাতে। এখন চোদ্দ দিন এখানেই।
নিজের আঙ্গুলে মেয়ের আঙ্গুলের নরম স্পর্শ এখনও অনুভব করছে পল্লব। আঙ্গুলটা বুকের কাছে নিয়ে পাশ ফিরে পল্লব আবার হারিয়ে গেল স্বপ্নে।