সারপ্রাইজ
সারপ্রাইজ


প্রতিবছরই আজকের দিনটা পৃথার একদম ভালো লাগে না। সবাই কত আনন্দ করে আর ও একা একা মনমরা হয়ে বসে থাকে। ওর খালি মনে হয় ভগবান কেন যে ওকে একটা ভাই দিল না। অনেকবার ফোন বাজায় ও এবার ফোনটা হাতে নিয়ে দেখল সুমিতের নম্বর। অগত্যা ফোনটা ধরে বলল- হ্যালো।
-কী ব্যাপার বলো তো? আমি সকাল থেকে ফোন করছি ফোন ধরছ না, মেসেজের উত্তর দিচ্ছ না।
-আমার কিছু ভালো লাগছে না তাই।
-ওসব আমি কিছু জানি না। চটপট তৈরি হয়ে নাও আমরা একটা জায়গায় যাব। আমি এক্ষুনি আসছি।
-কোথায়?
-সেটা সারপ্রাইজ।
সুমিতকে ও খুব ভালোবাসে তাই আর না বলতে পারল না। চটপট তৈরি হয়ে নিল। তারপর দুজনে একসাথে বেরিয়ে গেল।
কয়েকঘন্টা পর...
-ওই তো ওরা এসে গেছে। বাবলু, মন্টি, রিন্টু, পলাশ তোরা সবাই চুপ করে বস। সুমিত দাদা তোদের জন্য আজকে একটা দারুণ উপহার নিয়ে এসেছে।
সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে কী এমন উপহার নিয়ে এসেছে
ওদের প্রিয় সুমিত দাদা।
পৃথাও বেশ অবাক সুমিত ওকে এই এন.জি.ও-তে কেন নিয়ে এসেছে। এতবার জিজ্ঞেস করল তাও কিছু বলল না। তবে এখানকার পরিবেশটা ওর বেশ ভালো লাগছে। খুব সুন্দর করে সাজানো এই এন.জি.ও-টা।
-পৃথা, এই এন.জি.ও-টা আমার মা চালায়। এখানে অনেক ছোট ছোট বাচ্চা আছে যাদের দিদি নেই। তাই ওরাও আজকের দিনটা মনমরা হয়েই থাকে। তুমি ওদেরকে রাখী পড়িয়ে দিলে ওরা খুব খুশি হবে। তোমারও ভালো লাগবে।
এইরকম সারপ্রাইজ ও একদম আশা করেনি। এতদিনের ইচ্ছেটা আজ পূরণ হবে। ওতো একটা ভাই চেয়েছিল কিন্তু আজ এতগুলো ভাইকে পেয়ে ভীষণ খুশি। ওর খুশি ভাষায় প্রকাশ করে বোঝাতে পারবে না। এক এক করে রাখী পরিয়ে মিষ্টি খাইয়ে দিল। ওরাও সবাই একসঙ্গে চিৎকার করে বলে উঠল- "থ্যাঙ্ক ইউ দিদি"। মনে মনেে বলে- ধন্যবাদ ভগবান সুমিতের মতো একজন মানুষকে আমার জীবনে পাঠানোর জন্য। সুমিতকেও মনে মনে ধন্যবাদ দেয় এরকম একটা সুন্দর সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য।