রাতের নক্ষত্র
রাতের নক্ষত্র
সময়টা বসন্ত কাল বাতাসে হালকা আবির এবং পলাশ ফুলে গন্ধ সব মিলিয়ে | পরিবেশটা বেশ মনোরম, সকালে অবশ্য হালকা রোদ ছিল কিন্তু সন্ধে নামতেই একটা আলাদাই পরিবেশ তৈরী হলো। আকাশে এক ফালি চাঁদ আর তার চারপাশে অগুনতি নক্ষত্রের ভিড়। শুধুমাত্র খোলা ছাদের উপর আরামকেদারায় বসে একভাবে আকাশের দিকে তাকালেই মনে হয় কোটি কোটি নক্ষত্রের মধ্যে আবছা ভাবে নিজের প্রতিচ্ছবি আঁকা। সময় বাড়তে থাকে ঘড়িতে তখন রাত্রি ৮টা ১৫ হবে, কখন যে আকাশের নক্ষত্রের দিকে তাকিয়ে এত সময় পেরিয়ে গেছে সেটা খেয়ালই হয়নি। তখন হালকা হাওয়া দিচ্ছে হালকা ঠান্ডাও লাগছে, ২৩টা সিঁড়ি গুনে গুনে ছাদ থেকে নেমে নিচের ব্যালকোনিতে এসে বসা মানুষটি দেখতে থাকে বাড়ির সামনের রাস্তা, রাস্তাটা আজকে আজকে একটু ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। হালকা হাওয়া আর সাথে ইজি চেয়ার-ই গা হেলিয়ে বসে থাকা অনুভূতিটা একটু অন্যরকম। রাস্তার দিকে চেয়ে থাকা মানুষটির চোখ যায় রাস্তার শেষ প্রান্তে, দেখতে পায় সাদা উজ্জ্বল একটি বিন্দু যেটা | ক্রমশ সামনের দিকে এগিয়ে আসছে, নিজের মনেই বিড়বিড় করে বলে ওঠে "নক্ষত্র"! কিছুটা সামনে আসতে দৃষ্টি পরিষ্কার হয় দেখতে পায় সাদা রঙের পোশাক পরিহিত বছর ২৫-র একটি মেয়ে তার গা থেকে দুধের মতো সাদা রং বেরিয়ে আসছে। ব্যালকোনিতে বসে থাকা মানুষটি মুগ্ধ হয়ে চেয়ে থাকে তার দিকে, চোখ যায় মেয়েটির পায়ের দিকে,তার পায়ে রুপোর নুপুর চকচক করছে, রুমঝুম শব্দের সাথে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে মেয়েটি। সে যেন রাত্রের আকাশের নক্ষত্রের সাথে সেই মেয়েটির এক অদ্ভুত মিল খুজে পায়, যেন আকাশের নক্ষত্ররা তাকে সৃষ্টি করে পাঠিয়েছে। এসব ভাবতে ভাবতে দেখতে পায় মেয়েটি সামনের রাস্তা দিয়ে ক্রমশ মিলিয়ে যাচ্ছে ঠিক যেন উজ্জ্বল একটি নক্ষত্র গতিপথ অতিক্রম করে এগিয়ে চলছে। হটাৎ ঘন্টার শব্দে চোখটা খুলে যায় শুনতে পায় পাশের ঘড়ির টাওয়ারে রাত ১০টা বাজছে। নিজের অজান্তেই মুখ দিয়ে একটি শব্দ উচ্চারিত হয় "নক্ষত্র"!

