এক অদ্ভুত রাত্রি
এক অদ্ভুত রাত্রি
সুব্রত রাতের খাওয়া শেষ করে প্রতিদিনের মতো সেদিনও এক গ্লাস জল খেয়ে পুনরায় জলের গ্লাসটা ভরতি করে বিছানার পাশে রেখে শুয়ে পড়ে। শোয়ার সাথে সাথেই তার ঘুম এসে যায়। বেশ অনেক্ষন পড়ে কিছু একটা শব্দে তার ঘুম ভেঙে যায়, হটাৎ সে খুব ঠান্ডা অনুভাব করতে শুরু করে। এইবার একটু সাহস করে সুব্রত বিছানা ছেড়ে নেমে অন্ধকারের মধ্যে সুইচ হাতরে নাইটল্যাম্পটা জ্বালায় ঘড়িতে দেখে রাত্রি ১-টা বাজছে, চারিদিকে একবার তাকিয়ে দেখে সব কিছু ঠিকই আছে। হটাৎ তার চোখ যায় বিছানার পাশে রাখা জলের গ্লাসটার দিকে, সে হতবাক হয়ে যায় জলের গ্লাসটা অর্ধেকটা খালি, তার ভালো মনে আছে শুতে যাওয়ার আগে সে জলের গ্লাসটা পুরো ভরতি করে রেখেছিলো। মনে মনে একটু ভীত হয়ে বলে "এটা কী ভাবে সম্ভব অর্ধেকটা খালি, কে খেলো অর্ধেক জলটা?" সে কোন কিছু ভেবে না পেয়ে আবার আগের মতো লাইট নিভিয়ে বিছানায় এসে শুয়ে পড়ে কিন্তু আর তার ঘুম আসতে চায় না এপাশ-ওপাশ করতে থাকে। বেশ কিছুক্ষণ পর আবার হঠাৎ তার ড্রয়িং রুম থেকে খুব জোরে কোনো কিছু পড়ার আওয়াজ হয়। সুব্রত এইবার খুব ভয় পেয়ে ধড়ফড় করে উঠে বসে পড়ে, লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে হেঁটে যায় ড্রয়িং রুমের দিকে। ড্রয়িং রুমে প্রবেশ করে আলো জ্বালাতে সে অবাক হয়ে যায়, দেখে সেখানে থালা বাটি চামচ এবং কিছুটা মাছের আঁশ এবং আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে মেঝেতে পড়ে আছে। এইসব ঘটনা সে সহ্য করতে না পেরে ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে ড্রয়িং রুম থেকে দৌড়ে তার ঘরে প্রবেশ করে এবং জোরে দরজাটা বন্ধ করে বিছানায় এসে সে তার পুরো শরীরটাকে চাদরে মুড়ে শুয়ে পড়ে।
পরের দিন অনেক বেলায় তার ঘুম ভাঙ্গে, ঘুম থেকে উঠে সে ভয়ে ভয়ে ঘরের মেঝেতে পা রাখে, জলের গ্লাসটার দিকে তাকিয়ে সে অবাক হয়ে যায়, গ্লাস টা পুরোটা ভরতি! প্রশ্নচ্ছন্ন মন নিয়ে ঘরের দরজা খুলে সোজা তার ড্রয়িংরুমে প্রবেশ করে এবং দেখে সেখানকার মেঝেও পুরো খালি এবং পরিষ্কার, থালা বাটিও যে যার নিজের জায়গায় সাজানো রয়েছে। এইসব দেখে সুব্রত মাথায় হাত দিয়ে ধপ করে মেঝেতে বসে পড়ে, তার মনে নানান প্রশ্নের উদয় হতে থাকে।
সে আগের রাতে ঘটা ঘটনার সাথে বর্তমান সময় যেন কিছুতেই মেলাতে পারছে না, শত শত প্রশ্নের ভিড়ে তার নিজেকে কেমন যেন আচ্ছন্ন লাগছে!
সেইদিন রাতে ঘটা অদ্ভুতুড়ে ঘটনাগুলো সুব্রত-র কাছে অমীমাংসিতই রয়ে গেল।।