রাজনীতি ও প্রেম তৃতীয় কিস্তি
রাজনীতি ও প্রেম তৃতীয় কিস্তি
রাতুল
রাজনীতির অদ্ভুত খেলা কে অনুভব করতে শুরু করলো রাতুল । সব দিকে যেন একটাই গল্প কিছু দিচ্ছি কিছু ছাড়ো ।সত্যি সুজয়দা এই কারখানায় না পাঠালে অনেক কিছুই অজানা থেকে যেত তার । আজ সকালে যখন কারখানার মালিক এর সাথে দেখা করতে গেলো রাতুল , কিছুতেই দেখা করতে দিতে চাইছিলো না । একটু জোর করতে নিমরাজি হলো তারা । রাতুল ভাবলো একবার সুজয়দা কে ফোন করে বলবে ঘটনাটা । কিন্ত সেই মুহূর্তে ইউনিয়ন লিডার তনয় এসে জানালো মালিক দেখা করতে চেয়েছে ।অপেক্ষা না করে সুবীর কে নিচে শ্রমিক দের কাছে দাঁড় করিয়ে,একাই উপরে গেলো রাতুল । দরজা ঢেলে ঢুকতে গিয়েএ প্রথম এ সেই মেয়েটিকে দেখতে পেলো রাতুল । কি রকম যেন ফ্যাকাশে চোখ মুখ, ভীষণ ভয় পেয়ে গেছে সে কোনো কারণ এ । কিছু যে একটা ঘটেছে সেটা বুঝতে খুব একটা সময় লাগলো না রাতুল এর । সামনে দাঁড়ানো তনয়কে জিজ্ঞেস করলো , কি ব্যাপার তনয় সব ঠিক ঠাক আছে তো ? কোনো উত্তর আসার আগেই মেয়েটি দেখলাম ভোম্বল দা কে বলে বেরিয়ে গেলো । অনেক টা ভয় পেয়ে পালিয়ে গেলো । ব্যাপার টা অদ্ভুত লাগলে ও মুখে কিছু বুঝতে দিলো না রাতুল । নিজের মনের ভাব কে লুকোনোর অদ্ভুত কৌশল বেশ কিছুদিন ধরে রপ্ত করেছে রাতুল । তাই মেয়েটি বেরিয়ে যাবার পর একটু হালকা করে হেঁসে তনয়কে বললো , কি তনয়দা দেখা করা যাবে নাকি আপনাদের মালিক এর সাথে । এবার তনয়এর বদলে ভোম্বল দা এ উত্তর দিলো নিশ্চই এই ঘরে আসুন বসুন , বলে একটি সোফার দিকে ইঙ্গিত দিলো ভোম্বল দা । কিছু পানীয় চলবে নাকি দাদা ? কথাটি এলো বাথরুম থেকে বেরোনো এক ভদ্রলোক এর কাছ থেকে । লোকটির চেহারা আর কথাবার্তা বলার পদ্ধতি দেখে বেশ বোঝা যাচ্ছিলো এনি এ মালিক । ভোম্বল দা পরিচয় করিয়ে দিলো স্যার ইনি হলে রাতুল প্রামানিক , সুজয় ঘোষ এনাকে পাঠিয়েছেন ।আর রাতুল বাবু ইনি আমাদের মালিক দীনেশ আলুওয়াহালিয়া । নমস্কার করলো রাতুল । বললো স্যার শ্রমিক দের সব কথা তো শুনেছেন । ওদের কে নিয়ে আপনার ভাবনা টা যদি একটু পরিষ্কার করতেন, তাহলে সেই মতো আমরা শ্রমিক দের বোঝাতে পারি । একটু ঘোরালো উত্তর এলো , শ্রমিক দের কি করবো জেনে আপনার কি লাভ হবে ? হালকা একটু চাপ দেবার জন্য এ বলে দিলাম , পার্টি র উপর মহল থেকে নির্দেশ আছে এই মুহূর্তে যেন কোনো আন্দোলন না হয় । যে ভাবেই হোক ব্যাপার টা যেন শ্রমিক দের পক্ষেই থাকে । চাপ টা মনে হয় কাজে এলো । ভদ্রলোক সোফায় বসলো, আর কানের কাছে মুখ এনে বললো , তা শুধু পার্টি এর কথা ভাবছেন রাতুল বাবু , একটু নিজের কথা ও ভাবুন । কথাটার মানে বুঝতে পারলে ও , একটু অবাক হবার ভান করে বললাম মানে কি বলতে চাইছেন ? কত টাকা দিলে ব্যাপার মেটানো যাবে পরিষ্কার করে বলুন তো আপনারা ? রাতুল কিছু বলার আগে তনয় বলে উঠলো , কত টাকা আপনি দিতে পারবেন স্যার ? লোকটি জানালো , আপনাদের ২ জন কে ২ লক্ষ করে দিয়ে দেব । কি রে ভোম্বল ঠিক বলছি তো ? তনয় বললো, কি বলছেন স্যার , তাহলে তো আমার আন্দোলন করে ভালো । কন্ট্রাক্ট মতো আপনাকে শ্রমিক দের কাজ থেকে মুক্তি দিতে গেলে ১০০ শ্রমিক এর পিছনে ৫০ লক্ষ টাকা খরচ করতে হবে । আমাদের অন্তত ৫ লক্ষ করে টাকা চাই স্যার । রাতুল তনয় এর এরকম কথাবার্তায় অতিশয় বিরক্ত হলে ও ব্যাপার টার শেষ বোঝার জন্য চুপ করে রইলো । দীনেশ আলুওয়াহালিয়া যথেষ্ট ধুরন্ধর লোক । সাথে সাথে বললেন ঠিক আছে ৩ লক্ষ তে রফা হোক । এবার আর তনয়এর দিকে না তাকিয়ে সরাসরি রাতুল কে বললো কথা টা । রাতুল একটু ভাবার ভান করে বললো , টাকার ব্যাপার টা তো আমি একা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো না স্যার , পার্টির উপরের লোকদের সাথে ও যে কথা বলতে হবে । আর তাছাড়া এখন শ্রমিক দের কি বোঝানো যাই বলুন তো ? ভদ্রলোক সাথে সাথে বলে উঠলেন সেটা আমার কাজ নয় ,আপনাদের টাকা দিয়ে দিচ্ছি এবার আপনারা বুঝে নিন । রাতুল ভালো করেই বুঝতে পারছিলো এখানে সময় নষ্ট করে বিশেষ কোনো লাভ হবেনা । ঠিক আছে স্যার এখন তাহলে আসি , টাকার ব্যাপার টা পার্টি র উপর মহলে জানাই , তারপর আবার কথা হবে আপনার সাথে । হঠাৎ ভোম্বলদা কে দেখলাম আলুওয়াহালিয়ার কানে কানে কিছু বলতে । তারপর ভোম্বল বলে লোক টা বলতে লাগলো , টাকার ব্যাপার যদি ছেড়েএ দেয়া হয়,শ্রমিক দের কে সামলানো কি উপায় আছে রাতুল বাবু ? বুঝলো রাতুল লাইন আনা গেছে লোকগুলো কে । রাতুল বলতে শুরু করলো , আপনারা একটা কাজ করুন , আপনারা এই ফ্যাক্টরি তে কিরকম ধরণের কাজ করতে চান , সেটা পরিষ্কার করে বলুন । আর সেই কাজের জন্য কিরকম শ্রমিক দরকার , তাদের কি ধরণের জিনিস জানা দরকার সেটা ও পরিষ্কার করে বলুন । তাতে সবার কাছেই এটা পরিষ্কার হবে , যে সেই কাজ গুলো তারা করতে পারবে কিনা । দেখবেন আপনাদের এই নোটিশ এই অনেকেই চাইবে স্বেচ্ছায় অবসর নিতে । তারপর যারা উৎসাহিত তাদের সবার একটা ট্রেনিং এর বন্দোবস্ত করুন । পারলে ভালো , না পারলে হাতে কিছু টাকা দিয়ে ছুটি করে দেবেন । এতে সব কিছুই খুব পরিষ্কার থাকবে , আর কারোর মনে কোনো সন্দেহ থাকবে না । কথা টা বলার পর রাতুল ইচ্ছা করে তনয়এর দিকে চেয়েবলে উঠলো , কি বলো তনয় ঠিক বলিনি ? তনয় একটু অপছন্দের কথা হলে ও ঘাড় নাড়ালো পুরো ব্যাপার টাতে ।ভোম্বল দা বললো ঠিক আছেই রাতুল বাবু আমরা একটু কথা বলে নিয়ে আপনাকে জানাবো । আমাদের আর ২তো দিন দেবেন , কিন্ত এটা দেখবেন এর মধ্যে যেন কোনো আন্দোলন না হয় ।রাতুল বললো নিশ্চিন্ত থাকুন কোনো আন্দোলন যাতে না হয় সেটা আমি দেখবো । আমি তাহলে এখন উঠলাম , বলে নমস্কার করে বেরিয়ে আসার সময় তনয়কে বললাম যাবে আমার সাথে ? তনয়ও নমস্কার জানিয়ে বেরিয়ে এলো । বেরিয়ে আসার পর বললো , রাতুল বাবু টাকার ব্যাপার টা মেনে নিলেই ভালো করতেন । আপনি যা বললেন এরা কখনোই মানবে না , আন্দোলন করা ছাড়া কিছুই উপায় থাকবে না । রাতুল একটু হেঁসে বললো , দেখি না কি হয় ।তনয় বেটা যে আদৌ শ্রমিক দের ভালোর জন্য কিছু করে না , সেটা রাতুল আগেই বুঝতে পেরেছিলো । মালিক এর সাথে ভালোই ব্যবস্থা করে ফেলেছিলো , রাতুল এসে সব গুলিয়ে দিলো । তাই তনয়এর চোখ মুখে যে রাগ ফুটে উঠছে বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছিলো রাতুল । কিন্ত সেটা কে গুরুত্ব না দিয়ে , দ্রুত নিচে চলে এলো সে । সুবীর কে নিয়ে চা এর দোকানে চলে এলো । একটু চা বিস্কুট খেতে খেতে সুবীরকে বললো ঘটনা গুলো । সব শুনে সুবীর বললো ব্যাপার তা গুছিয়েএক বার সুজয়দা কে জানা , কারণ সবাই তোর উপর রেগে যাচ্ছে রাতুল । সুবীর এর কথা টা শুনে ও না শোন
ার ভান করে , রাতুল বললো , একটা কাজ করতে হবে তোকে সুবীর । যে মেয়েটি সে দিন নিচে নেমে এলো আর বান্টি এর দল তাকে চিনিয়ে দিলো তোর মনে পড়ছে । সুবীর বললো , মনে থাকবে না আবার কি সাহস মেয়ে তার । রাতুল বললো , ওর ফোন নম্বর বা কোথায় থাকে একটু তোকে জোগাড় করতে হবে । সেটা ও আজ কের মধ্যে । সুবীর এর চটুল মন , কি ব্যাপার রাতুল একটি মেয়ের নম্বর জানতে এতো উৎসাহ কিসের ? হেঁসে ফেললো রাতুল , বললো বিয়ে করবো বলে । সুবীর এর হাঁ মুখ টা কে দেখে বেশ আনন্দ পাওয়া গেলো । না রে মেয়ে টা বড়সড় কোনো বিপদ এ পড়েছে আমার মন বলছে , জানার দরকার কি রকম বিপদ সেটা , আর এই পুরো ঘটনাটাই ও কি ভাবে সাহায্য করতে পারে । সুবীর বললো , ঠিক আছে স্যার , হয়ে যাবে । বলে বেরিয়ে গেলো সে । মন দিয়ে চা খেতে খেতে অনেক কথাই ভাবতে লাগলো রাতুল , সব কিছুই যে খুব ঠান্ডা মাথায় চুপ চাপ সামলাতে হবে বেশ বুঝতে পারছিলো সে । এমন কি তার পরম গুরু সুজয়দা কে ও বুঝে কথা বলতে হবে । সুজয়দা একটা কথা খুব বলে , রাজনীতিতে বন্ধু বা শত্র্রু বলে কিছু হয়না । আজ যে বন্ধু যে কোনো সময় সে শত্র্রু হতে পারে , আবার আজ যে শত্র্রু যে কোনো সময় সে বন্ধু হতে পারে । তাই সাবধানে ভেবে চিনতে পা ফেলাটাই একদম ঠিক হবে বেশ বুঝতে পারছিলো রাতুল । নানা চিন্তার মধ্যে হঠাৎ মা এর ফোন এলো , বাবার শরীর টা একটু খারাপ করেছে , গাড়িটা নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হলো সে , তনয় আর সুবীর কে ফোন করে বলে দিলো , সে আবার বিকাল এর দিকে এখানে আসছে ।
সুনেত্রা
কোনো কিছুই ভালো লাগছে না সুনেত্রার । এখুনি সব কিছু ছেড়ে চলে যাবার ইচ্ছা করছে । গরিব মানুষ গরিব এ থাকা ভালো । টাকার লোভ এ এতদূর আসা কোনোমতেই উচিত হয়নি ।কিন্তু এতো বাজে ইঙ্গিত দেবার পর ও ওই মালিক লোকটাকে কিছুই করতে পারলাম না , এই রাগ টাই যেন মনের মধ্যে জ্বলতে থাকলো সুনেত্রার । লোক টাকে খুন করতে ইচ্ছা করছে তার। এক বার ভাবলো কোনো ভাবে যদি ওই রাতুল ছেলেটার সাথে কথা বলা যেত , হয়তোও কিছু বলতে পারতো কি করা যাই । এ ভাবে একা একা লড়াই করা কোনো মোটেই সম্ভব নয় সেটা বেশ বুঝতে পারছিলো সে । এক বার ভাবলো শ্রমিক দের সাথে দেখা করে মালিক লোক টা যে কতটা খারাপ সেটা জানিয়ে আসা । কিন্ত তাতে কতটা লাভ হবে কিছুই বুঝতে পারছিলো না সুনেত্রা । বাড়িতে ফিরে স্নান করতে ঢুকলো সে , মনের মধ্যে থেকে সব কাদা দূর করার জন্য । ওই বদমাস লোকটা তার গায়ে যেখানে যেখানে হাত দিয়েছিলো সাবান দিয়ে বেশি করে ঘষতে লাগলো সে । আর মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলো কোনো ভাবেই ছাড়বে না সে লোকটাকে । যে কোনো ভাবেই হোক লোকটাকে শাস্তি দিতেই হবে । কিছুতেই ঘুম আসতে চাইছিলো না সুনেত্রার । এক বার সোমা দি কে ফোন করলো , ছুটির দিন সোমা দি ফোন টা ধরলো না । ভোম্বল দা কে ফোন করে কোনো লাভ নেই , মালিক এর ঘরের লোক ও , কোনো ভাবেই তাকে সাহায্য করবে না । যখন সত্যি কোনো উপায় বের করতে পারছে না সুনেত্রা , হঠাৎ এ ফোন টা বাজে উঠলো , অজানা নম্বর দেখে ফোন ধরতে ইচ্ছা করলো না তার । অনেক ক্ষণ বাজার পর থেমে গেলো ফোন টা । সুনেত্রা ভাবলো একবার রমেশ কে ফোন করা যাক । ও হয়তো কোনো সাহায্য করতে পারে । রমেশ কে ফোন করলো সুনেত্রা । ফোন টা ধরেই রমেশ বললো , আরে ম্যাডাম আপনাকেই তো খুঁজছিলাম । তুমি অফিস এসেছিলে চলে গেলে কেন ? সুনেত্রা কি জবাব দেব ঠিক বুঝতে পারছিলো না , বললো ভোম্বল দা বললো চলে যেতে তাই । রমেশ বলে চললো , তোমার কি ওই পার্টি লোক গুলোর সাথে কিছু হয়েছে ?ওই রাতুল ছেলেটির সাথে যে ছেলে টা সবসময় ঘোরে ও তোমার নম্বর চাইছিলো । আমি দিই নি । কিন্তু ওরা ঠিক জোগাড় করে নেবে । কিছু অসুবিধাই পর নি তো তুমি ? আমাকে বলতে পারো সুনেত্রা । সুনেত্রা একবার ভাবলো সব কিছু বলবে রমেশ কে , কিন্ত কোথাও যেন কিন্ত ঠেকলো । বললো না এখন সেরকম কোনো অসুবিধা হয়নি ,তবে তোমার সাহায্য আমার লাগতে পারে , পরে জানাবো । ফোন টা রেখে দেবার পর , মনে অন্য এক উদ্বেগ হলো , তাহলে ওই অজানা নম্বর টা কি রাতুল এর । নম্বর তাতে নিজেই ফোনে লাগালো সুনেত্রা । নম্বর টা ব্যস্ত । ফোন রেখে দেবার কিছুক্ষনের মধ্যেই আবার ফোন এলো । ফোনে টা রিসিভ করে হ্যালো বললো সুনেত্রা । ওপাশ থেকে যে পুরুষ কণ্ঠ ভেসে এলো সেটা যে রাতুল বলে ছেলে টার তা শান্ত ভাবে কথা বলার ধরন দেখে বেশ বুঝতে পারলো সুনেত্রা । রাতুল নিজের পরিচয় দেবার পর জানতে চাইলো , এক বার কি আপনার সাথে দেখা করা যেতে পারে ? আসলে আমার কিছু প্রশ্ন ছিল সে গুলো আপনার সাথে দেখা করেই জানা বেশি জরুরি , ফোনে এ সম্ভব নয় । যেন হঠাৎ করেই আকাশ এর চাঁদ পেলো সুনেত্রা , এক কথাই রাজি হয়ে গেলো সে । বিকাল ৫ টা র সময় কারখানার পিছনে একটা পার্ক এ আসতে বললো তাকে রাতুল । ফোন টা রাখার পর মনের মধ্যে এক অদ্ভুত আনন্দের বিহ্বলতা যেন জড়িয়ে ধরলো সুনেত্রা কে । সকাল এর সমস্ত রাগ , ঘৃণা , আর হেরে যাবার গ্লানি এক নিমেষে হারিয়ে গেলো তার । হয়তো কোনো ভালো লাগার মানুষ কে হঠাৎ পাবার আনন্দ এরকম এ । যাকে ভাষায় প্রকাশ করা কোনো মতেই সম্ভব নয় ।ঘড়িরদিকে তাকিয়ে দেখলো সুনেত্রা দুপুর ৩ টা । মানে হাতে এখনো ২ ঘন্টা । ১:৩০ ঘন্টা একটু ঘুমিয়ে নেয়া যেতেই পারে , ভেবে শুয়ে পড়লো সে । জীবন এ কখনো কোনো ছেলের সাথে এ ভাবে দেখা করতে যায়নি সে । প্রেম তো দূরের কথা । গরিবের ঘরে এসব একেবাৰে মানায় না । সুনেত্রা ভাবতে লাগলো কি পড়ে যাবে সে , ভালো জামা বলতে তো মাত্র দুটো , সেটা ও কারখানায় পড়ে গেছিলো যা রাতুল দেখেছে । ভাবলো মা এর জন্য কেনা নতুন শাড়িতাই পরে যাবে সে । কিন্তু তারপর এ নিজের মনের মধ্যে জেগে ওঠা এই অকারণ আনন্দ কে মারতে উদ্দত হলো সে । কি জামা পরে যাবে সেটা এখানে উদ্দেশ্য নয় ,তার থেকে এটা ভাবা দরকার ছেলে টা কেন ডেকেছে । প্রেম করার জন্য ডাকার ছেলে রাতুল যে নয় ,সেটা সুনেত্রা ভালোই বুঝতে পারছে । তাই সকাল এর ঘটনা টা ভালো করে জানার জন্য যে রাতুল তার সাথে দেখা করতে চাইছে সেটা নিশ্চিত সুনেত্রা । কিন্তু কি বলবে সে রাতুল কে , সব সত্যি কথা , সে কি আর্জি জানাবে রাতুল এর কাছে ওই শয়তান টাকে শাস্তি দেবার । রাতুল এর বা ক্ষমতা কতটা ? এসব ভাবতে ভাবতে কখন যেন চোখ বুজিয়ে এলো সুনেত্রার , ভাবতে লাগলো শয়তান টার মাথায়একটা পাথর দিয়ে বার বার আঘাত করছে সে । রক্তে ভর্তি হয়ে গেছে ঘর টা । হয়তো এই কাজ টাই ফেলে রেখে বেরিয়ে এসেছে সে আজ সকাল বেলায় ।