Sutanu Sinha

Drama

3  

Sutanu Sinha

Drama

রাজনীতি ও প্রেম পঞ্চম কিস্তি

রাজনীতি ও প্রেম পঞ্চম কিস্তি

12 mins
2.9K


রাতুল

সকালে ঘুম থেকে উঠতেই সুবীর এর ফোন । রাতুল তাড়াতাড়ি কারখানায় আই । সুবীর বললো কিছু হয়েছে ,শ্রমিক রা খুব খুশি হয়েছে মনে হচ্ছে, মনে হচ্ছে ওই সালা মালিক পক্ষ কিছু করেছে , আমি ঠিক পারছি না , তুই তাড়াতাড়ি চলে আই । বলে ফোন টা রেখে দিলো সুবীর । সুবীর কে নিয়ে এটা এক জ্বালা , কোনো কিছুর ভিতর অব্দি দেখে না সে , শুধু উপর এর টুকু দেখে নিয়ে ই ছটফট করে । কিন্ত কারখানার শ্রমিক হঠাৎ খুশি কেন হলো ? মালিক পক্ষ কি কিছু চাল দিলো নাকি ? রাতুল এক ভাবলো সুজয়দা কে ফোন করি , কিন্ত পরক্ষনেই ভাবলো আগে ওখানে গিয়ে বোঝা দরকার কি হয়েছে ,তারপর নোই সুজয়দার সাথে কথা বলা যাবে । আর তাছাড়া কালকের অরিজিৎ এর কাছ থেকে যা শুনলো , তারপর সুজয়দা কে কতটা বিশ্বাস করবে সেটা নিয়েও প্রশ্ন চিহ্ন আছে । অরিজিৎ রাতুল এর খুব প্রিয় বন্ধু , ঘটনাক্রমে সে এ এখন কারখানার ওই এলাকার ইন্সপেক্টর । কাল সুনেত্রা সুরক্ষার জন্য থানায় যখন কথা বলতে গেছিলাম , হঠাৎ এ দেখি ইন্সপেক্টর এর সিট এ অরিজিৎ বসে আছে । বন্ধু হোয়াই কাজের আরো সুবিধা হয়ে গেলো , কারণ এ ধরণের কাজে পুলিশ এর সাহায্য যথেষ্ট লাগবে । তবে স্কুল এর অনেক পুরোনো গল্পের সাথে এমন কিছু কথা শোনালো সে রাতুল কে , সেটা নিয়ে রাতুল যথেষ্ট চিন্তিত । অরিজিৎ কথা বলতে বলতে বললো , রাতুল তুই আমার খুব ভালো বন্ধু , তাই তোকে কিছু কথা জানাচ্ছি । তোর গডফাদার সুজয় লোক টা কিন্ত মোটেই সুবিধার নোই । তুই কতদিন চিনিস লোক টা কে ? বললাম ২-৩ বছর মতো । অরিজিৎ বললো তাহলে তুই কিছুই জানিস না । যা বলবো কখনো কাউকে বলিস না , লোকটা ভীষণ ক্ষমতা লোভী একটা মানুষ । অনেক লোকের সর্বনাশ করে এই জায়গায় এসেছে । তবে শিক্ষিত , তাই কথাবার্তা খুব গুছিয়ে বলতে পারে, ও কিন্ত সাপের মুখে ও চুম খাই , আবার ব্যাঙ এর মুখে ও চুম খাই । তাই খুব সাবধান । তুই বুদ্ধিমান ছেলে যা করার ভেবে চিনতে করিস । রাতুল প্রথমে কিছুতেই মানতে চাইনি কথাগুলো মন থেকে । কিন্ত ভাবতে ভাবতে হঠাৎ এ রাতুল এর মাথায় এলো আজ ২ দিন হলো সুজয়দার কোনো ফোন তো আসেনি । আর রাতুল ও তো ২ দিন ফোন করেনি । এটা কিছু টা হলে ও একটু অদ্ভুত লাগছে রাতুল এর । কিন্ত হতে পারে হয়তো খুব দরকারি কোনো কাজে ব্যস্ত সুজয়দা । তবে একটা কথা সুজয়দার ই শেখানো , রাজনীতিতে কেউ বন্ধু বা শত্র্রু হয়না । তাই সবার সাথে ভালো ব্যবহার রাখা অতীব প্রয়োজন । যাই হোক এসব ভেবে দেরি না করে মা এর দেয়া জলখাবার যাহোক করে খেয়ে বেরিয়ে পড়লো সে । এক বার ভাবলো সুনেত্রা কে ফোন করবে , কিন্ত ভাবনা টা সেখানে স্তব্ধ করে নিলো । প্রথম কথা সুনেত্রা হয়তো অন্য রকম কিছু ভেবে ফেলতে পারে , যেটা রাতুল কিছুতেই চাইনা , আর তাছাড়া আগে তার সেখানে যাওয়া উচিৎ, বোঝা দরকার আসল কারণ টা কি । একটু তাড়াতাড়ি গাড়ি চালাতে লাগলো সে । কারখানায় যখন গিয়ে পৌঁছলো, সামনে সুবীর কে দেখতে পেয়ে তার কাছে গিয়ে গাড়ি দাঁড় করালো । সুবীর বললো তুই ভেতরে যা রাতুল , আমি গাড়িটা পার্ক করে আসছি । ভিতরে যেতে সামনেই দেখতে পেলো তনয় দাঁড়িয়ে আছে, আরে আসুন দাদা আপনার জন্য এ তো সব হলো , এস তোমাদের হিরো এসে গেছে । বলে সব শ্রমিক কে আহ্বান করলো সে । রাতুল কিছু বুঝে ওঠার আগেই সবাই রাতুল কে মাথার উপর চাগিয়ে নিলো, তনয় জোর করে গলায় মালা পরিয়ে দিলো ,আর মুখে মিষ্টি দিয়ে দিলো ।রাতুল এর ক্ষীণ গলা তখন কেউ শুনতেই পাচ্ছে না , কারণ পুরো ব্যাপার টা বোঝা এখনো হয়নি রাতুল এর । কারখানার ঘরে ঢোকার দরজার সামনে এসে রাতুল কে নামালো তারা , এবার রাতুল বলার সুযোগ পেলো , বললো শান্ত হন আপনারা । আগে পুরো ব্যাপার টা বোঝার ভীষণ দরকার । তখন তনয় এগিয়ে এলো, আরে রাতুল দা মালিকপক্ষ থেকে আপনার দেয়া প্রস্তাব মেনে নিয়েছে ।এই কারখানায় কি ধরণের কাজ হবে তার বিবরণ দিয়েএকটা নোটিশ দিয়েছে । আর কারখানার সমস্ত উৎসাহী শ্রমিক দের যারা যারা প্রশিক্ষণ নিতে চাই একটা ফর্ম ভোরে জমা করতে বলেছে । রাতুল জিজ্ঞেস করলো , আর যারা প্রশিক্ষণ নিতে উৎসাহী নয় ,তাদের কি হবে ? তনয় জানালো, তাদের কে কোম্পানি একটা টাকা দিয়ে ছেড়ে দেবে । এবার ব্যাপার টা কিছুটা পরিষ্কার হলো রাতুল এর , তার দেয়া পরামর্শ কে পুরোপুরি মেনে নিয়েছে মালিকপক্ষ । কিন্ত ব্যাপার টা এতো সহজে হলো কি করে ? রাতুল এর ভাবনার মধ্যেই নোটিশ টা নিয়ে হাজির হয়ে গেলো তনয় ।নোটিশ টা খুব ভালো করে ২ বার পড়লো রাতুল । তনয়যা বলছে সেটাই লেখা আছে । গাড়ির যন্ত্রপাতি তৈরি করতে চাই তারা এই কারখানাতে , তাই সব শ্রমিক দের প্রশিক্ষণ ছাড়া নেয়া সম্ভব নয় ।এর মধ্যেই হঠাৎ ফোন বাজে উঠলো রাতুল এর , দেখলো সুজয়দা । শুরু এ করলো , অনেক অনেক অভিনন্দন রাতুল , তুমি তো কাঁপিয়ে দিলে বস , আমার কোনো সাহায্য ছাড়াই পুরো ব্যাপার টা ম্যানেজ করে দিলে । রাজনীতির প্রথম ধাপে তুমি তো উত্তীর্ণ । খবর টা পাবার পর আনন্দ চেপে রাখতে পারছিলাম না তাই ফোন করলাম । যাই হোক সব কিছু সামলে তুই আজ বিকাল বেলায় একবার আমার বাড়িতে আসিস , পার্টির উপর মহলের এক জন নেতা তোর সাথে দেখা করতে চাই । তাকে দেখলে তুই চমকে যাবি এটুকু বলতে পারি । রাতুল, যাবো সুজয়দা বলে রেখে দিলো । এর এ মধ্যে তনয়দা র সাথে দু জন সাংবাদিক হাজির । বেশ বিরক্ত লাগছিলো রাতুল এর , কারণ রাজনীতির শিক্ষা সুজয়দা তাকে দিলে ও , প্রচার আর অপপ্রচার এর আসল ম্যানেজমেন্ট শিক্ষা তখন ও সে পাইনি । এই সময় কথা থেকে সুবীর এসে হাজির হলো । অন্য কিছু বুঝতে না পারলে ও , আমার মনের কথা সুবীর যেন কিরকম ভাবে বুঝতে পেরে গেলো । সাংবাদিক দু টা কে সুবীর হালকা করে কাটিয়ে দিলো, এখন সময় নেই বলে ।

পরে যোগাযোগ করে আসবেন । রাতুল কে নিয়ে একটু পিছন এর দিকে চলে এলো সুবীর । বললো আমার ব্যাপার টা খুব একটা সুবিধার লাগছে না রাতুল, সুনেত্রা ম্যাডাম কে ফলো করার জন্য সকাল বেলায়যখন আমি এলাকায় ঘুরছিলাম , এই তনয়কে কার সাথে ফোন এ খুব কথা বলতে দেখছিলাম, বেশ টেনশন নিয়ে ।আর এখন তো দেখছি তোকে নিয়ে লাফালাফি করছে , কিছু একটা সমস্যা আছে রাতুল । রাতুল বললো , সুনেত্রা ঠিক আছে? সুবীর বললো , এই সবে উপরে গিয়ে দেখে এলাম মন দিয়ে কাজ করছে । হঠাৎ তনয় এসে বললো রাতুল দা তোমাকে ভোম্বল দা ডাকছে । রাতুল বললো আসছি । যেতে গিয়ে একটু থমকে দাঁড়ালো রাতুল, সুবীর একটা ভুল কাজ হয়ে গেছে, সুনেত্রা কে জানানো হয়নিযে আমাকে না চেনার ভান করতে । মানে কোনো ভাবেই যেন বুঝতে না পারে কেউ , যে আমার সাথে ওর দেখা বা কথা হয়েছে ।সুবীর জানালো টেক্সট করে দিয়েছি ভাই, চিন্তা করিস না । মাঝে মাঝে রাতুল খুব অবাক হয়েযাই সুবীর কে দেখে , এমনিতে খুব সহজ সরল ধরণের ছেলে হলে ও , কেমন যেন রাতুল এর খুব দরকারে ওর থেকে সাহায্য পেয়ে যাই । তাই রাতুল কখনো কখনো চাইলে ও তাকে নিজের সাথে রাখা কে কখনো উপেক্ষা করতে পারেনা । রাতুল ধীরে ধীরে সিঁড়ি দিয়ে ম্যানেজমেন্ট এর ঘরের সামনে এসে দাঁড়ালো ।ভোম্বল দা দেখতে পেয়ে বললো আসুন রাতুল বাবু । রাতুল এর চোখ মুহূর্তের জন্য হলে ও সুনেত্রা কে খুঁজলো , দূরে একটা বেঞ্চ থেকে একটু উঁকি মারলো সে । মুখে সেই অনাবিল হাঁসি টা যেন এখনো লেগে আছে । ভোম্বল দা বলে চললো , মালিক আপনার কোথায় মেনে নিলো । শ্রমিক দের সব সম্যসার সমাধান করে দিলেন তিনি । আর নিশ্চয় আপনার কিছু চাহিদা নেই । রাতুল বললো চাহিদার কি কিছু শেষ থাকে ভোম্বল বাবু । যা কথা দিয়েছেন সে গুলো ঠিক পাবে ফলিত না হওয়া অব্দি কি ভাবে নিশ্চিন্ত হয় বলুন তো । তবে আপনাদের কে ধন্যবাদ এখনকার মতো শ্রমিক দুঃখ কে প্রাধান্য দেবার জন্য । আমি এখন আসছি তাহলে । নিচে নামার পর কিছু অসহায় শ্রমিক রাতুল এর দিকে এগিয়ে এলো, বললো দাদা আপনি এ আমাদের মাই আর বাপ । আমরা কি করবো বলে দিন । রাতুল একটু অবাক হচ্ছিলো এই সব শ্রমিক রা সত্যি কি পারবে এই ট্রেনিং নিতে ? রাতুল বললো , কোম্পানি যখন আপনাদের সুবিধা দিছে আপনারা যারা বয়স অল্প ট্রেনিং এর জন্য যান , আর যারা বয়স্ক স্বেচ্ছায় অবসর এর ফর্ম টা ভোরে দিন । রাতুল এটা বললো বটে , কিন্ত সে ভালো করেই জানে সবাই ট্রেনিং করার ফর্ম ভরবে , কারণ এতটাই গরিব স্বেচ্ছায় অবসর নেবার মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না । রাতুল তাও চেষ্টা করলো , কিন্ত ওরা যুক্তি দেখালো ট্রেনিং টা তে তো যাই বাবু । না পারলে ওখান থেকে ফিরে অবসর নেবো । কিন্ত ওখান থেকে ফিরে অবসর নিলে টাকা পাবার যে কোনো গেরেন্টি কোম্পানি দেয়নি , সেটা বলে ও বোঝাতে পারলো না সে । সমস্ত ফর্ম বিলি করে , শ্রমিক দের সবার ফর্ম ভর্তি করে দেবার পর , যখন সময় পেলো তখন প্রায় বিকাল ৫ টা । পাশ থেকে সুনেত্রা কে বেরিয়েযেতে দেখলো সে । ওর মুখ দেখে মনে হলো কিছু যেন বলতে চাই । তখন কারখানা প্রায় ফাঁকা হয়ে এসেছে , সুবীর কে বলে দিলাম সিগন্যাল দিস কখন ফোন করা যাই । সুবীর চলে এলো সুনেত্রার পিছনে । এই ব্যাপার টাই সুবীর বেশ পাকা । সুবীর একটা মিস কল পেতেই কল করলো রাতুল সুনেত্রা কে । রাতুল কিছু বলার আগেই , সুনেত্রা বলে উঠলো , কিছু একটা সম্যসা আছেই রাতুল দা । ভোম্বল দা কে আজ অনেক ক্ষণ দেখলাম মালিক তাকে ফোন করে কথা বলছিলো । এদের অন্য কিছু মতলব আছেই গো । রাতুল বললো , চোখ কান খুলে রেখো সুনেত্রা , আর তুমি কি অরিজিৎ কে ফোন করেছিলে ? সুনেত্রা বললো , না আজ কের করবো । রাতুল জানালো , তাড়াতাড়ি করে নাও আমার মনে হচ্ছে কিছু একটা বড়ো সম্যসা আসতে চলেছে । হঠাৎ সবাই মিলে আমাকে কেন হিরো বানাতে চাইছে । সুনেত্রা বললো , দেখো রাতুল দা , কেউ এক জন কে ৩টি কারণ এ হিরো বানাতে পারে , হয় তাঁর কাছ থেকে কিছু সুবিধা চাই , না হলে রাস্তা থেকে সরাতে চাই , আর না হলে সত্যি করে এমন কিছু সে করেছে যার জন্য এই সম্মান প্রাপ্য । তুমি ভেবে দেখো কোন কারণ টা হতে পারে । আমি এখন রাখলাম । আমাকে রাতে ফোন করো । সুনেত্রা ফোন টা রাখার পর রাতুল এর মনে হলো সত্যি তো মেয়েটা ভীষণ বুদ্ধিমান । একদম ঠিক ৩ টি প্রশ্ন বলে গেলো রাতুল কে । এমন সময় সুজয়দার ফোন এলো । কিরে রাতুল কখন আসবি ? রাতুল বললো আর ১ ঘন্টার মধ্যে আসছি সুজয়দা । সব কাজ মিটিয়ে সুবীর কে নিয়ে স্কুটার এ করে রওনা হয়ে গেলো রাতুল ।

সুনেত্রা

আজ কের দিন টা ভারী অদ্ভত কাটলো সুনেত্রার । ওই ঘটনার পর অফিস যেতে যে কিন্ত তার মধ্যে কাজ করছিলো , সেটা অফিস এ গিয়ে কিছুই বোঝা যাই নি । আজ অফিস এ এক রকম যেন ভীষণ আনন্দের বাতাবরণ ছিল । যদিও সুনেত্রা র বার বার মনে হয়েছে এটা যেন একটা সাজানো আনন্দ । সবাই মিলে দেখলাম রাতুল দা কে হিরো করতেই ব্যস্ত । প্রথম সুনেত্রার মনে দা ও ঘটনাটাই বেশ খুশি , কিন্ত রাতুল দার সাথে কথা বলে বুঝতে পারলো রাতুল দা ও পুরো ব্যাপার টা নিয়ে বেশ দোটানায় ।বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে আর কেনই বা । আজ রাতুল দার সাথে কথা বলার সময় ,সুনেত্রা হঠাৎ বলে ফেলেছে তুমি রাতে কল করো । কথা টা বলে একটু লজ্জা লেগেছে সুনেত্রার । এরকম ভাবে সরাসরি রাতুল দা কে ফোন করতে বলা হয়তো উচিৎ হয়নি ।রাতুল দা যদি খারাপ ভাবে । যদি ও রাতুল দার কথায় এক বার ও মনে হয়নি যে সে খারাপ ভাবছে । এসে তাড়াতাড়ি খাওয়া সেরে নিলো সুনেত্রা । তারপর উঠে এলো এই বাড়ির ছাদে , এই ছাদ টা খুব প্রিয় সুনেত্রার, সময় পেলেই এই ছাদে চলে আসে সে । অনেকক্ষণ নিজের মতো সময় কাটিয়ে তারপর নিচে নেমে যাই । যদিও আজ কের অন্য একটা মনের বাসনা নিয়ে ই ছাদে এসেছে সে । কেন জানিনা সুনেত্রার খুব মনে হচ্ছে রাতুল ফোন করতে পারে । অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর যখন সবে নিচে যাবার জন্য উঠতে যাবে , ফোন বেজে উঠলো সুনেত্রার । রাতুল এর ফোন । ফোন ধরে হ্যালো বলতেই মনের মধ্যে কেমন যেন আনন্দ ঝিলমিল করে উঠলো সুনেত্রা র । রাতুল জিজ্ঞেস করলো , কি করছিলে তুমি সুনেত্রা ? সুনেত্রা জানালো এই খাওয়া শেষ করে ছাদে এসে বসে আছি । রাতুল বলে চললো , সুনেত্রা তুমি যথেষ্ট বুদ্ধিমান মেয়ে ,আমাকে তুমি যে ৩ টি প্রশ্ন করেছো , তার উত্তর আমি এখনো খুঁজে বেড়াচ্ছি । আমার সাথে যা যা হয়েছে আমি বলছি । সেটা শুনে, তুমি শুধু বলে দাউ তোমার প্রশ্নের উত্তর টা । সুনেত্রা র মন টা খুশিতে ভোরে উঠলো , এতটা গুরুত্ব দেয় রাতুল তাকে । সুনেত্রা বললো , বলো তুমি রাতুল , আমার দিক দিয়ে যতটা সম্ভব আমি নিশ্চই তোমাকে সাহায্য করবো । রাতুল বলে চললো , কারখানার সব ঘটনা তো তুমি যেন , কি ভাবে হঠাৎ এ আমাকে হিরো বানানো হলো , যার কৃতিত্বের ভাগিদার হিসাবে এটুকু শুধু বলতে পারি , এই প্রস্তাব টা আমি ওই কারখানার মালিক কে দিয়ে এসেছিলাম । আজ আমাকে সুজয়দা ডেকেছিল । সুজয়দা কে হয়তো তুমি চিনবে না, পার্টি এর এক জন বড় লিডার, আমি তার সাথেই কাজ করি । সুজয়দা আমাকে পার্টি র এক বড়ো কর্মকর্তার সাথে দেখা করালো । ভদ্রলোক দেখলাম আমার খুব সুখ্যাতি করলেন , বললো এরকম এক জন যুব নেতা কে এ তো আমরা চাই । সুজয়দা কে বকাবকি করলো , বললো এরকম একটি ছেলে কে এসব কি উল্টোপাল্টা কাজে লাগিয়ে রেখেছো । পার্টি র ভালো কোনো জুনিয়র পোস্ট ওকে পাঠিয়ে দাউ, এসব কাজ অন্য কেউ করুক । সুজয়দা ও দেখলাম বাধ্য ছেলের মতো বললো , কাল থেকে তোকে আর ঐঐ কারখানায় যেতে হবে না, এমনিতেই ব্যাপার টা মিটে গেছে । বাকিটা তনয় সামলে নেবে । কাল সকালে আমার এখানে চলে আসিস তোকে যুব দলের এক নেতার সাথে দেখা করিয়ে দেব । আজ কের মতো ঘরে চলে যা , কাল আবার দেখা হবে । এই পর্যন্ত বলে একটু দম নিলো রাতুল । তারপর আবার বলে চললো এবার বলো সুনেত্রা তোমার প্রশ্নের কি উত্তর হতে পারে । সুনেত্রা বলে উঠলো , রাতুল দা তোমার কথা শুনে আমি যা বুঝলাম আমার দ্বিতীয় প্রশ্ন টা ই ঠিক । তোমাকে ওরা এই কারখানার ব্যাপার টা থেকে হঠাতে চাইছে । ওরা কোনো মতেই চাইনা, তুমি এই ব্যাপারটাই আর যুক্ত থাকো । রাতুল বলে উঠলো , একদম ঠিক বলেছো সুনেত্রা , তুমি খুব সুন্দর আমার মনের কথা বুঝতে পারো । সত্যি কথা বলতে তোমার সাথে কথা বলে খুব শান্তি হয় সুনেত্রা । খুব লজ্জা পেয়ে গেলো সুনেত্রা ।

এরপর শুরু হলো সেই চিরাচরিত প্রেমের গল্প যা হয়তো গল্পের মধ্যে মধ্যে লেখা বা বলা কোনো টাই সম্ভব নয় ।এই গল্পের শেষে দু জন এ কোনো জগতে বসবাস করবে , বা কত রাত্রি অব্দি গল্প করবে , তা শুধু তারা দু জন ই জানে । দুই প্রেমিক মানুষের গল্পের কথা আমরা না ই বা শুনলাম । তার থেকে এটাই ভালো অপেক্ষা করে থাকা এর পর কি হয় ।রাতুল কি পারবে সুজয়দা এর সমস্ত পরিকল্পনা বানচাল করে দিতে , সুনেত্রা কি পারবে ওই বদমাস লোভী মালিক টার উপর প্রতিশোধ নিতে । আর সর্বোপরি সত্যি কি সফল হবে আমাদের রাতুল আর সুনেত্রা র প্রেমের এই মিষ্টি সফর ।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama