#রাগে_অনুরাগে_৬
#রাগে_অনুরাগে_৬
উজানের গেস্টরুম:;:
উজান:মিস মিত্র অাপনি আবার এসব বাজে কথা শুরু করেছেন!!আমি গান গাইব..কিন্তু আপনি এসব শেষ ইচ্ছ টিচ্ছের কথা কোনোদিনই বলবেন না।
হিয়া:সত্যি আপনি গান গাইবেন স্যার!!
উজান:হুম।তবে গানের পর আজ মিশকার জন্য একটা সারপ্রাইজ অাছে।
মিশকা:কি সারপ্রাইজ দাদাভাই বল না তাড়াতাড়ি!
উজান:এত কিছু বুঝিস..।কিন্তু এটা জানিস না সারপ্রাইজ বলে দিলে সেটা সারপ্রাইজ থাকে না☺।
হিয়া:মিশকা উজান স্যার তো ঠিক কথায় বলেছে!!এখন সারপ্রাইজের চিন্তা বাদ দিয়ে গানে মন দে।
মিশকা:আজ আমি গান গাইবো না!
উজান:কেন?
মিশকা:আজ তোমরা দুজন গান গাইবে...!আর আমি শ্রোতা হয়ে গান শুনবো
মিশকা:ওভাবে না তাকিয়ে গান টা শুরু করে দাও তো!
হিয়া:তুই চিটিং করলি মিশকা।গান তোর গাওয়ার কথা ছিলো।আমাদের না!!
মিশকা:আরে হিয়া দি আমরা তিনজনই যদি গান গাই!তাহলে গানটা শুনবে কে?তাই তোমরা গান গাও আর আমি শুনি।তোমার গান তো আগে শুনেছি।এখন না হয় তোমাদের দুজনের ডুয়েট গান শুনি!!যদি আর কোনো দিন শুনতে না পাই।
উজান:হুম
(উজান গিটারে সুর তুলতে আরম্ভ করে..আর হিয়া গান ধরে)
অামি তোমার সঙ্গে বেধেঁছি,আমার প্রাণ সুরের বাঁধনে
তুমি জানো না,আমি তোমারে পেয়েছি অজানা বাঁধনে
আমি তোমার সঙ্গে বেধেঁছি,আমার প্রাণ সুরের বাঁধনে
সে সাধনায় মিশিয়া যায় বকুল গন্ধ
সে সাধনায় মিলিয়া যায় কবির ছন্দ
তুমি জানো না ঢেকে, রেখেছি তোমার নাম
রঙিন ছায়ার আচ্ছাদনে
আমি তোমার সঙ্গে বেধেঁছি,আমার প্রাণ সুরের বাঁধনে
তোমার অরুপ মুর্তি খানি,ফাল্গুনের আলোতে বাসাই আনি
তোমার অরুপ মুর্তি খানি
বাশঁরি বাজাই ললিত-বসন্তে,সদূঁর দিগন্তে।।
সোনার আভাই কাঁপে তব উত্তরী
গানের তানের সে উন্মাদনে
তুমি জানো না,আমি তোমায় পেয়েছি অজানা সাধনে
আমি তোমার সঙ্গে বেধেঁছি,আমার প্রাণ সুরের বাঁধনে।।
মিশকা:(হাত তালি দিয়ে)কি সুন্দর গানটা গাইলে দাদাভাই।আর তুমি বলো তুমি গান পারো না!!হিয়া দি তোমরা দুজন অসাধারন গেয়েছো।শুনে মনেই হলো না যে তোমরা এই প্রথম একসাথে গলা মিলিয়ে গান গেয়েছো।গান শুনে মনে হচ্ছিল আমি FM এ গান শুনছি।
উজান:মিশকা আর বেশি ঢপ দিস না।এবার দেখি চোখ টা বন্ধ কর!!?হিয়া এই নিন রুমাল এটা দিয়ে চোখটা বেধেঁ দিন।
হিয়া:ওকে স্যার।(হিয়া মিশকার চোখটা বেধেঁ দেয়।আর wheel chair টা নিয়ে এগিয়ে যায়।)
মিশকা:কেন??আমি কি করলাম!?আমায় কোথায় নিয়ে যাচ্ছো!??আমি কোথাও যাব না!!
উজান:চুপ করবি!ছিচকাদুঁনের মতো কাদছিস কেন?
হিয়া:আরে স্যার এসে তো গেছি আপনার ঘরে!!এবার তো মিশকার চোখের বাঁধন টা খুলে দিন।
উজান:ও..মনেই ছিলো না।মিশকায় তো অযথা কান্না শুরু করে দিয়েছে চোখ বেধেঁ দেওয়ার পর থেকে!!
হিয়া:কাদঁবে না.!আপনি তো ওকে বকলেন।ওই জন্যই তো মিশকা কান্না শুরু করেছে।আপনি তো ভালো করে কথা বলতেই পারেন না..!সব সময় সবখানে Hittler গিরি দেখান।
উজান:(চেঁচিয়ে)কি...আপনি আবার আমায় Hitler বললে।
মিশকা:(চেঁচিয়ে)আরে তোমরা আমার চোখটা খুলেই ঝগড়া শুরু করে দিয়েছো।আরে আমার চোখটা কেউ খুলে দাও।তারপর আবার ঝগড়া করো।
উজান:,হুম খুলছি।(উজান মিশকার চোঁখের বাঁধন খুলে দেয়)
মিশকা:সেতার!
উজান:হুম।তোর বার্থডে গিফট।৩১মে তোর বার্থডে ছিলো।কিন্তু সেদিন তো তোর অপারেশন ছিল।তাই গিফটা দিতে পারি নি।এজন্য আজ কে দিলাম।পছন্দ হয়েছে তো??
মিশকা:হুম খুব পছন্দ হয়েছে। I love you দাদাভাই।
উজান:I love u too sona।কিন্তু হিয়াকে ও তোর I love you বলতে হবে!!কারণ হিয়া না থাকলে আমি সেতার কিনতে পারতাম না।
মিশকা:ooppss..sorry। I love you hiya di
হিয়া:I love u sona।
মিশকা:কিন্তু তোমরা কিভাবে জানলে যে সেতার বাজাতে জানি?
উজান:আমি মার কাছে শুনেছি।তুই অনুষ্কা শঙ্করের কাছে ৪বছর সেতার শিখেছিস।তোর সেতার তো তোর দাদুর পুরোনো সেতার। তাই ভাবলাম তোকে আমি একটা নতুন সেতার গিফট করি।তাই কাল আমি আর মিস মিত্র গিয়ে কিনে ফেললাম।
মিশকা:।আমি বাজাবো!!
উজান:আজ অনেক ধকল গেছে আজ থাক!কাল বাজানো শুরু করিস।
হিয়া:স্যার আমার সব কাজ তো শেষ??আমি তাহলে আসছি!!?
উজান:কোথায় যাবেন??
হিয়া:কেন স্যার আমি বাড়ি যাব।কাল তো সকালে আমার ট্রেন আছে।
উজান:তাহলে আপনি চলেই যাচ্ছেন হিয়া??
হিয়া:হুম।এখানে থেকে কি করবো।আমার তো MBBS শেষ।তাই কলকাতায় থাকার কোনো মানেই হয় না!!
উজান:MBBS শেষ!!ব্যাস আর কিছু করবেন না??
হিয়া:এখনো ভাবি নি স্যার। আগে বাতাসীগাও যায়।তারপর ভাববো কি করবো।
মিশকা:হিয়া দি তুমি আমার সেতার বাজানো শুনবে নাঁ?কালই চলে যাবে??
উজান:মিশকা কাকে তুই এসব বলছিস!?যে নিজের ভালোটা বোঝে না!!সে জন্যই তো কলকাতা ছেড়ে যাওয়ার কথা বলছে।আমায়...
হিয়া:উজান স্যার কথায় কথা বাড়বে।তার থেকে ভালো আমি বাড়ি চলে যায়।
(হিয়া বেরিয়ে যায়।উজান হিয়ার পেছন পেছন গিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে আসে)
উজান:কাদঁছিস কেন??ওর যাওয়ার ইচ্ছে হয়েছে তাই চলে গেছে।ও আসলে কাউকেই ভালোবাসে না।ভালোবাসলে ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা বলতো না!!
(হঠাৎ মিশকা কে কোলে তুলে নিয়ে উজান ছাদে যায়।মিশকা বেঞ্চে বসিয়ে দেয়।নিজেও পাশে বসে।)
মিশকা:দাদাভাই তোমার চোখে জল!!তুমি হিয়া দির জন্য কাদঁছো!!!
বাকিটা.... পরের পর্বে।